মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী :

কক্সবাজার জেলায় শুরু থেকে বৃহস্পতিবার ২৯ জুলাই পর্যন্ত এক লক্ষ ১০ হাজার ৬০৬ জন নাগরিক করোনা’র ভ্যাকসিন নিয়েছেন। একইসময়ে ভ্যাকসিন নিতে সুরক্ষা এ্যাপে জেলায় রেজিষ্ট্রেশন করেছেন এক লক্ষ ৭৫ হাজারেরও বেশি নাগরিক।

কক্সবাজারের সিভিল সার্জন ডা. মাহবুবুর রহমান সিবিএন-কে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি আরো জানান, এ বছরের ৭ ফেব্রুয়ারী জাতীয়ভাবে করোনা’র টিকা দেওয়া শুরু হওয়ার পর কক্সবাজারে ভারতের সেরাম ইনষ্ঠিটিউটের তৈরি অক্সফোর্ড এ্যাস্ট্রেজেনেকার কোভিশিল্ড ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে মোট ৭৯ হাজার ৬৭৫ জনকে। তারমধ্যে, একই ভ্যাকসিনের পূর্ণাঙ্গ দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হয়েছে ৫৭ হাজার ৬৮০ জনকে।এ্যাস্ট্রেজেনেকার কোভিশিল্ড একডোজ ভ্যাকসিন নেওয়া জেলার অবশিষ্ট ২২ হাজার ৯৫১ জনের দ্বিতীয় ডোজ টিকা দিতে আগামী আগস্টের মধ্যেই কক্সবাজার প্রয়োজনীয় সংখ্যক এ্যাস্ট্রেজেনেকার টিকা পাঠানো হবে বলে সিভিল সার্জন ডা. মাহবুবুর রহমান জানিয়েছেন। যাঁরা এ্যাস্ট্রেজেনেকার কোভিশিল্ডের টিকা একডোজ গ্রহণ করেছেন, তাদের বিচলিত হওয়ার কোন কারণ নেই। যথাসময়ে তাঁরা দ্বিতীয় ডোজ টিকা নিতে পারবেন বলে জানান- সিভিল সার্জন।

তিনি বলেন, চীনের তৈরি সিনোফার্মার ৮১ হাজার ২০০ ডোজ টিকা কক্সবাজারে পাঠানো হয়েছিল। এরমধ্যে, ২ দফায় আগে পাঠানো হয় ৪৬ হাজার ডোজ টিকা। গত ২৮ জুলাই সিনোফার্মার ৩৫ হাজার ২০০ ডোজ টিকা তৃতীয় দফে পাঠানো হয়েছে। ২৯ জুলাই পর্যন্ত মোট ৩০ হাজার ৬৩৫ জনকে সিনোফার্মার এক ডোজ টিকা করে দেওয়া হয়েছে। কক্সবাজারে সিনোফার্মার আরো ৫০ হাজার ৫৬৫ ডোজ টিকা ইপিআই টিকা স্টোরে মজুদ রয়েছে। ডা. মাহবুবুর রহমান বলেন, কক্সবাজারে টিকা’র কোন সংকট নেই। রেজিস্ট্রেশনের তুলনায় পর্যাপ্ত টিকা মজুদ আছে। রেজিষ্ট্রেশন অনুযায়ী প্রয়োজন সাপেক্ষে ঢাকা থেকে আরো টিকা যথাসময়ে আনা হবে।

জাতীয় টিকা দেওয়ার নির্দেশনা অনুযায়ী আগামী ৮ আগস্ট থেকে কক্সবাজার জেলার প্রতিটি ইউনিয়নে জাতীয় পরিচয়পত্র দেখালেই তাদের টিকা দেওয়া হবে। ইউনিয়ন পর্যায়ে টিকা দেওয়ার জন্য জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিচ্ছে। ইউনিয়ন পর্যায়ে টিকা গ্রহনের রেজিষ্ট্রেশন কিভাবে হবে-এমন প্রশ্নের জবাবে সিভিল সার্জন বলেন, হয়ত জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য এক্সেল সীটে লিখে নিয়ে কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে তাদের সুরক্ষা এ্যাপে রেজিষ্ট্রেশনের আওতায় আনা হবে। অধিকাংশ নাগরিককে করোনা’র টিকা’র আওতায় আনতে এবং টিকা গ্রহনকে গ্রামেগঞ্জে উৎসবমুখর করে তুলতে সরকার এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানান, ডা. মাহবুবুর রহমান। বিভিন্ন ভ্যারিয়েন্টের করোনা ভাইরাস থেকে সুরক্ষা পেতে টিকা গ্রহণ ও স্বাস্থ্য বিধি প্রতিপালনের কোন বিকল্প নেই বলে জানান তিনি।

এদিকে, কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে প্রতিদিন অধিক মানুষ টিকা গ্রহনের সুবিধার্থে ও জনসমাগম এড়াতে টিকা বুথ গত ২৪ জুলাই থেকে হাসপাতালের পশ্চিম গেইটে নার্সিং ইনস্টিটিউটে স্থানান্তর করা হয়েছে বলে জানান জেলা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. এস.এম নওশেদ রিয়াদ। নার্সিং ইনস্টিটিউটে টিকা গ্রহনের বুথ অনেক বাড়ানো হয়েছে। আরএমও ডা. এস.এম নওশেদ রিয়াদ জানান, কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে প্রতিদিন  ৫ শত থেকে সাড়ে ৭ শত  পর্যন্ত নাগরিক ঝামেলামুক্ত পরিবেশে স্বাচ্ছন্দ্যে টিকা নিচ্ছেন। তিনি আরো বলেন, টিকা গ্রহনের ব্যাপারে মানুষের মাঝে আগ্রহ বেড়েছে এবং ইতিবাচক মনোভাব সৃষ্টি হয়েছে।