সাইদুল ইসলাম ফরহাদ :

ভারী বর্ষনে -জলোচ্ছ্বাস আর করোনা সংকটে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন টেকনাফের উপকূলের ১০ হাজার চিংড়ি চাষি। এক বছরের মধ্যে দু’দফায় সামুদ্রিক ঝড় আর সম্প্রতি নিম্নচাপ-লঘুচাপের প্রভাবে ভারি বৃষ্টিপাত এবং প্লাবনে এখানকার চাষিদের মাছ ভেসে গিয়ে ১০কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে ।
এছাড়া করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে চিংড়ি রফতানিতে ধস ও বাজার মূল্য কমে যাওয়ায় এ খাতের সঙ্গে জড়িতরা চরম দুরাবস্থার মধ্যে রয়েছেন।

খোঁজ খবর নিয়ে জানা গেছে, লোনা পানি অধ্যুষিত টেকনাফের আশপাশের এলাকায় বছরের অধিকাংশ সময়ই বাগদা চিংড়ির চাষ হয়ে থাকে। অবশ্য খুব স্বল্প পরিসরে গলদা চিংড়ির সঙ্গে অন্যান্য মাছ চাষও সাম্প্রতিককালে শুরু হয়েছে। লবণ আবহাওয়ার কারণে এখানে ধান ও অন্যান্য ফসল ভালো উৎপাদন না হওয়ায় স্থানীয়রা সাধারণত চিংড়ি চাষ করেই তাদের জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন।স্থানীয় চিংড়ি চাষি রফিক বলেন, সাম্প্রতিককালের টানা বর্ষনে জলোচ্ছ্বাস আর করোনা সংকটে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন তারা। বর্তমান সময়ে তার ঘেরে তেমন একটা মাছ পাওয়া যাচ্ছে না। সব মাছ ভেসে গেছে প্লাবিত পানির সাথে। আব্দুল শুক্কুর নামের আরেক চিংড়ি চাষি বলেন, ভরী বর্ষনে পানি প্লাবিত অধিকাংশ ঘেরের মাছ ভেসে গেছে। এর ওপর আবার রয়েছে করোনার প্রভাব। তিনি ভীষণ ক্ষতিগ্রস্ত।
ডালিম আরও ব্যাখ্যা দিয়ে বলেন, বছরের শেষ দিকে সম্প্রতি ভারী বৃষ্টির কারণে পানি প্লাবিত হাওয়ার কারনে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপ ও লঘুচাপের প্রভাবে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসে এখানকার হাজার হাজার ঘের তলিয়ে ভেসে গেছে কোটি টাকার চিংড়িসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ।
টেকনাফ উপজেলা মৎস্য বিভাগের তথ্য মতে-এ উপজেলায় প্রায় ১০হাজার হেক্টর জমিতে ঘেরের মাধ্যমে চিংড়ি চাষ হয়ে থাকে। এর মধ্যে ছোট বড় মিলিয়ে সরকারি নিবন্ধিত ঘেরের সংখ্যা৩০ কিন্তু বেসরকারি হিসেবে টেকনাফ আশপাশে চিংড়ি ঘের ও প্রান্তিক চাষির সংখ্যা প্রায় দশ হাজার ছড়িয়ে যাবে। এছাড়া বিভিন্ন পুকুরেও মাছ চাষ করা হয়ে থাকে। এরপরও যে পরিমাণ চিংড়ি উৎপাদন হয় তা আবার করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের ফলে বিদেশে রপ্তানী করতে না পারায় ঘের ও মৎস্যচাষে ব্যাপক ধস নামাতে শুরু করে।