নিউইয়র্ক সংবাদদাতা:
নিউইয়র্কের বাংলাদেশ কমিউনিটিতে ভয়াল ছোবল মেরেছে ড্রাগস। এই ড্রাগস নিয়ে বাংলাদেশি অনেক যুবক অকাল মৃত্যুকে আলিঙ্গন করছে। এখনই যদি তা রোধ করা না যায় তাহলে একদিন এটি ‘ক্যান্সারে’ পরিণত হবে। এছাড়া অবস্থাদৃষ্টে যা প্রতিয়মান হচ্ছে তাতে সহজেই অনুমেয় ড্রাগসের এ ব্যবহার করোনা মহামারির চেয়েও ভয়াবহ হবে। তাই বাংলাদেশ কমিউনিটি এ পরিস্থিতির মুখোমুখি হওয়ার আগে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। সামাজিক দায়বদ্ধত্বার অংশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের পাঠকপ্রিয়তার শীর্ষ পত্রিকা সাপ্তাহিক নবযুগ যে যাত্রা শুরু করেছে তা বেগবান করতে নিজ নিজ অবস্থান থেকে ভূমিকা রাখতে হবে। নবযুগ সচেতনা সৃষ্টির যে ধরনের উদ্যোগ নিয়েছে তা যদি ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা সংগঠন পর্যায়ে জোরালোভাবে নেয়া হয় তাহলে বাংলাদেশ কমিউনিটির তরুণ বা যুবকরা ড্রাগসের অপব্যবহারের হাত থেকে রক্ষা পাবে। গত ২৫ জুলাই, রোববার সন্ধ্যা ৬ টায় নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসের খাবার বাড়ি রেস্টুরেন্টের একটি পার্টি হলে সাপ্তাহিক নবযুগ আয়োজিত ‘স্টপ দ্যা ড্রাগস, সেভ দ্যা ইয়ুথ’ শীর্ষক গোলটেলিব আলোচনায় বক্তারা এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে স্বাগত ও সমাপনি বক্তব্য রাখেন সাপ্তাহিক নবযুগ সম্পাদক শাহাব উদ্দিন সাগর। গোলটেবিল আলোচনা সঞ্চালনা করেন সিনিয়র সাংবাদিক ফরিদ আলম। বক্তব্য রাখেন মুলধারার রাজনীতিক মোর্শেদ আলম, জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টারের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বিশিষ্ট মানষিক রোগ বিশেষজ্ঞ জুননুন চৌধুরী, শহীদ সন্তান ও ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির নিউইয়র্ক চ্যাপ্টারের সভাপতি ফাহিম রেজা নুর, কমিউনিটি এক্টিভিস্ট নাসির আলী খান পল, ডেমোক্র্যাট ডিস্ট্রিক্ট লিডার এর্ট লাজ এটর্নি মঈন চৌধুরী, জ্যামাইকা বাংলাদেশ ফেন্ডস সোসাইটির প্রধান উপদেষ্টা এবিএম ওসমান গনি, বাংলাদেশ সোসাইটির সভাপতি প্রার্থী কাজী আশরাফ হোসেন নয়ন, বীর মুক্তিযোদ্ধা শরাফ সরকার, কমিউনিটি বোর্ড মেম্বার বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল মুকিত চৌধুরী, কমিউনিটি বোর্ড মেম্বার আহসান হাবিব, কমিউনিটি বোর্ড মেম্বার মোহাম্মদ আলী, কমিউনিটি বোর্ড মেম্বার আহনাফ আলম, মুলধারারা রাজনীতিক মেরি জুবাইদা, জ্যামাইকা বাংলাদেশ ফ্রেন্ডস সোসাইটির সভাপতি ফখরুল ইসলাম দেলোয়ার, সাধারণ সম্পাদক আল আমিন রাসেল, আমেরিকা-বাংলাদেশ প্রেসক্লাব সভাপতি মোহাম্মদ সাইদ, সাবেক ছাত্রনেতা শাহাবুদ্দিন, জালালাবাদ এসোসিয়েশনের সভাপতি মঈনুল হক চৌধুরী হেলাল, মক্তিযোদ্ধা ও কলামিস্ট সুব্রত বিশ্বাস, কবি ও গীতিকার ইশতিয়াক রুপু, জ্যাকসন হাইটস মোহাম্মদী সেন্টারের ইমাম কাজী কায়্যূম, মূলধারারার রাজনীতিক সাবুল উদ্দিন, চট্টগ্রাম সমিতির সাবেক নির্বাচন কমিশনার মাকসুদুল হক চৌধুরী, জ্যাকসন হাইটসের আবু হুরাইরা জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা ফায়েক উদ্দিন, কমিউনিটি এক্টিভিস্ট এএফএম মিসবাহ উজ জামান, আল আমিন জামে মসজিদের সভাপতি জয়নাল আবেদিন, সাপ্তাহিক নবযুগ এর ইংরেজি বিভাগের প্রধান সাজীদ সীমান্ত, এনওয়াই ড্রিম্স প্রডাকশনের কর্ণধার ফাহিম ফিরোজ, কমিউনিটি এক্টিভিস্ট আনোয়ার হোসেন প্রমুখ। অন্যদের মাঝে উপস্থিত ছিলেন সাপ্তাহিক ঠিকানার বার্তা সম্পাদক শহীদুল ইসলাম, সাপ্তাহিক নবযুগর’র ব্যবস্থাপনা সম্পাদক শামসুন নাহার নিম্মি, বিশেষ প্রতিনিধি শামসুল আলম লিটন, তরুণ লেখক লাবিব প্রান্ত ও মিসেস নাসির আলী খান পল।
আলোচনায় বক্তারা বলেন, সন্তানদের বিপথে যাওয়ার আগেই অভিভাবকদের কার্যকরী ভূমিকা রাখতে। সন্তানরা কার সঙ্গে মিশছেন, কখন বাড়ি ফিরছেন এবং তাদের দৈনন্দিন জীবনে কোন পরিবর্তন হচ্ছে কি না তার দিকে খেয়াল রাখতে হবে।
তারা বলেন, তরুণরা যদি ড্রাগসের অপব্যহার করে নিজেদেরকে শেষ করে দিচ্ছে বলে প্রতিয়ামান হয় তা নিজেদের মধ্যে লুকিয়ে না রেখে যারা এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞ তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা, তাদের কাউন্সিলিংয়ের ব্যবস্থাসহ সর্বপরি সন্তানদের ধমীর্য়, সামাজিক, সাংস্কৃতিক মূল্যবোধ মেনে চলার ব্যাপারে উতসাহ দেয়া।
বক্তারা আরো বলেন, ড্রাগসের বিষয়টি খুবই সাংঘর্ষিক। এ ক্ষেত্রে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাও অসহায়। তাই এ বিষয়ে চাপ প্রয়োগ না করে সন্তানদের সচেতন করে তোলার কোনো বিকল্প নেই।
তারা বলেন, সাপ্তাহিক নবযুগ যেভাবে বিষয়টিকে সামনে নিয়ে এসেছে তা ধন্যবাদ পাওয়ার যোগ্য। এখন ইস্যুটি নিয়ে নবযুগ’র দেখানো পথে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে কার্যকরী ফল পেতে হলে। এ বিষয়ে বাংলাদেশ সোসাইটি, জালালাবাদ এসোসিয়েশন, জ্যামাইকা বাংলাদেশ ফেন্ডস সোসাইটিসহ অন্যান্ন সামাজিক সংগঠনগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। নবযুগের মতো নিউইয়র্কের অন্য গণমাধ্যমগুলোকেও এভাবে পদক্ষেপ নিতে এগিয়ে আসতে হবে। তাহলেই আমাদের যুব সমাজকে রক্ষা করা যাবে। এসময় বক্তারা এই ড্রাগসের অপব্যবহারে সন্তান হারা মা বাবাদের বুকফাটা কান্না আর আর্তনাদের কথা উল্লেখ করেন।
আলোচনা সভা নবযুগ সম্পাদক শাহাব উদ্দিন সাগর ও নবযুগ’র পেজ থেকে ফেসবুক লাইভ করা হয়।
আলোচনায় অংশ নেয়ায় সবাইকে ধন্যবাদ জানান নবযুগ সম্পাদক শাহাব উদ্দিন সাগর। তিনি অনটাইমে অনুষ্ঠান শুরু করতে পারায় এবং সবাই অনটাইমে উপস্থিত হওয়ায় সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।