বার্তা পরিবেশক:

হাজার পালংয়ের দেশে মৈনপাহাড়ের তটে- এই অঞ্চলের লোকসম্পদ, লোকজ্ঞান, ইতিহাস, লৌকিক দর্শনসহ মানবিক সব সম্পদকে জাতীয় ও আর্ন্তজাতিকভাবে গবেষণা করে পরিচিত করার লক্ষ্য নিয়ে ২০১৭ খ্রিষ্টাব্দে প্রতিষ্ঠি হয়- পালং একাডেমি, দারিয়ার দিঘী রামু, কক্সবাজার।
ইতিমধ্যে পালং একাডেমি থেকে প্রকশিত হয়েছে এদেশের লোক-দার্শনিক ‘আহমদ ছফার সংসার’ নামে একটি মূল্যবান গবেষণাগ্রন্থ। সেই ধারাবিহকতার সূত্র ধরে ২২ তারিখ বিষ্যুদ বার, সন্ধ্যা ৭টায় ‘পালং একাডেমি’র এক মূল্যবান পূর্ণমিলন ও সাহিত্য আড্ডা অনুষ্ঠিত হয়। এই সাহিত্য আড্ডায় বঙ্গোপসাগরীয় সভ্যতার কৃতিসন্তান, জাতিসত্তার কবি৷ দরিয়ানগরের কবি বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক হিসেবে যোগদান করায়- কবি মুহম্মদ নূরূল হুদাকে ফোনের মাধ্যমে অভিনন্দন জানানো হয়। মুহম্মদ নূরুল হুদা ও পালং একাডেমি কে শুভেচ্ছাজ্ঞাপন করেন। পালং একাডেমির চেয়ারম্যান চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ আলম চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই পুর্ণমিলন ও সাহিত্য আড্ডায় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, ‘বঙ্গোপসাগরীয় সভ্যতা ও প্রাচ্য ফাউন্ডেশনের’ পরিচালক কবি মনির ইউসুফ।
মনির ইউসুফ তার আলোচনায় এ অঞ্চলের ভাবসম্পদ, ভাষার বর্ণমালা তৈরি এবং ইতিহাস নিয়ে ব্যাপক গবেষণার কথা বলেন। তিনি বলেন যদি তা না হয় তাহলে এ অঞ্চল অচিরেই সাম্রাজ্যবাদের আগ্রাসনের শিকারে পরিণত হবে। পালং একাডেমীর নির্বাহী সদস্য সোহাগ চৌধুরী বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে তার আলোচনা ব্যক্ত করেন, তিনি আশংঙ্কা প্রকাশ করেন রোহিঙ্গাদের রাজনৈতিক প্রভাব নিয়ে, তাদের ক্রমাগত ক্রেজি হয়ে ওঠা, বাংলাদেশের এ প্রান্তের ভূখণ্ড নিয়ে সাম্রাজ্যবাদী ষড়যন্ত্র কোথায় গিয়ে দাঁড়ায় এ বিষয়টি নিয়ে তিনি বিস্তারিত আলোচনা করেন। পালং একাডেমির সদস্য সচিব গবেষক মুহাম্মদ হোসাইন অনুষ্ঠান উপস্থাপন ও পরিচালনা করেন। অনুষ্ঠান পরিচালনার ফাঁকে ফাঁকে তিনি এ অঞ্চলের আন্তর্জাতিক গুরত্বের কথা তোলে ধরেন। বিভিন্ন দেশের সফরের অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে তিনি, তৃতীয় বিশ্বের এই প্রান্তের ক্ষুদ্র এই ভূখণ্ডের লৌকিক মানুষের রাজনৈতিক অধিকার আদায়ের কথা বলেন। আড্ডায় উপস্থিত ছিলেন-পালং একাডেমির সদস্য আমজাদ হোসেন, উম্মে আতিয়া নুশিতা, নূর মোহাম্মদ, সাজ্জাদ হোসাইন, মুহাম্মদ শাহজাহান প্রমূখ। উপদেষ্টা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা জাফর আলম চৌধুরী, খুনিয়া পালং ইউপি সদস্য নারী নেত্রী মনোয়ারা চৌধুরী।
সন্ধ্যার ঘনঘোর বৃষ্টিতে আলোছায়া মেঘে আড্ডাটি হয়ে ওঠে বঙ্গোপসাগরীয় সভ্যতার এক নান্দনিক প্রাণবন্ত আড্ডা। রাতের তারায় তারায় মুক্তো হয়ে ঝরে পড়ে চিন্তার গোলাপী মুক্তা। পালং একাডেমি একটি আশাবাদী প্রজন্ম তৈরি করবে, এই আশ্বাস নিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি টানা হয়।