এম.এইচ আরমান:
রামু উপজেলার দুর্গম পাহাড়ি জনপদ সন্ত্রাস,ডাকাত ও অপহরণকারীদের ক্রাইমজোন হিসাবে পরিচিত ঈদগাঁও-ঈদগড়-বাইশারী সড়ক।

লক্ষাধিক মানুষের দায়িত্বে নিয়োজিত রামুর ঈদগড়ে অবস্থিত পুলিশ ক্যাম্পের সব পুলিশ সদস্যকে একযোগে প্রত্যাহারের ১০২ দিন পার হলো। এরপর থেকে বিশাল এলাকার জনগোষ্ঠী আতঙ্কের দিন পার করছে। কাটছে চলাচলে অনিশ্চয়তা। প্রতিনিয়ত বাড়ছে চরম উদ্বেগ-উৎকন্ঠায়।

গত ৬ এপ্রিল রাত সাড়ে ১১টায় হঠাৎ জেলা পুলিশের নির্দেশে ক্যাম্প ছাড়েন ক্যাম্পে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা। এরপর থেকে প্রায় প্রতিদিন ঘটছে অঘটন। বেড়েছে সড়কে ডাকাতি ও অপরাধ।

তবে, স্থানীয় চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে ঈদগড়-ঈদগাঁও সড়কের ঢালায় সন্ধ্যা বেলায় কয়েকদিন পাহারা বসানো হয়েছিল।

দিনের বেলায় যে সড়কটি অরক্ষিত ও অনিরাপদ থাকে সেখানে কর্মশেষে রাতে ঘরেফেরা নিয়ে উদ্বিগ্ন স্থানীয়রা।

তাদের আশঙ্কা, যে কোন মুহুর্তে বসতবাড়ী ও সড়কে ডাকাতি অপহরণসহ অন্যান্য অপরাধ প্রবনতা বৃদ্ধি এবং আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি হতে পারে।

এক সময় ঈদগড় ইউনিয়নে সড়ক ও বসতবাড়িতে গণহারে ডাকাতি অপহরণ হত। এমনকি ডাকাতদল দিনদুপুরে ঈদগড় বাজারে হানা দিয়ে লুটপাট চালিয়ে দোকানপাট জ্বালিয়ে দিয়েছিল। পুলিশ সদস্য সুসম চাকমা, জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী জনি দে রাজ,দিনমজুর মোঃ কালু, মাস্টার নুরুচ্ছপা ও ডাঃ মহিউদ্দীনসহ অসংখ্য সাধারণ অসহায় মানুষকে ডাকাতের হাতে জীবন দিতে হয়েছে। ঈদগড়ের আইন শৃংখলা পরিস্থিতি উন্নয়নের স্বার্থে সরকার তখন ঈদগড়ে পুলিশ ক্যাম্প স্থাপন করেছিল।

সেই থেকে ডাকাতি অপহরণ কিছুটা কমে গিয়েছিল। কিন্তু আকস্মিকভাবে গত ৬ এপ্রিল রাতে পুলিশ ক্যাম্পটি প্রত্যাহার করে নেওয়ার পরেও সংশ্লিষ্ট প্রশাসন কোনধরনের ব্যবস্থা না নেওয়ায় চরম আতংক বিরাজ করছে ঈদে ঘরমুখো মানুষ সহ স্থানীয় লক্ষাধিক জনগণ।

ঈদগড় ইউপি চেয়ারম্যান ফিরোজ আহম্মদ ভূট্টো হাজার হাজার মানুষের জানমালের নিরাপত্তার স্বার্থে এই ঈদে হলেও পুলিশ ক্যাম্প পুণরায় স্থাপনের দাবী করছেন।

বাইশারী ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ আলম বলেন, আমার এলাকার হাজার হাজার মানুষ ঐ সড়ক দিয়ে চলাচল করেন। এ সুযোগে অনেক নিরীহ মানুষ অপহরণের শিকারও হয়েছিল। তাই বর্তমানে বাইশারী ও পার্শ্ববর্তী এলাকার মানুষ চলাচলে নিরাপত্তাহীনতায় ভোগছেন। এজন্য তিনি পূনরায় ঈদগড় পুলিশ ক্যাম্প দ্রুত স্থাপনের জোর দাবি জানিয়েছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে রামু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ আনোয়ারুল হোসাইন বলেন, রামু থানা থেকে ৪০ কিলোমিটার, ঈদগাঁও থানা হয়ে আমাদের ঈদগড়ে গিয়ে অভিযান করা খুবই কঠিন। তাই রামু থানার জন্য ঈদগড় পুলিশ ফাঁড়িটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ কারনে পুলিশ ক্যাম্পটি পুনরায় চালু করার জন্য এসপি স্যারকে অনুরোধ করা হয়েছে। স্যার আশ্বাস দিয়েছেন এটি পুনরায় চালু করার। আশা করি খুব দ্রুত এটি বাস্তবায়ন হবে।