শাহীন শাহ
টেকনাফ (কক্সবাজার) : দেশের একমাত্র প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিনে পরিচয়পত্রধারী জেলেদের মাঝে সরকারি চাল বিতরণে নয়ছয় করার অভিযাগ পাওয়া গেছে। এতে জেলেরা ক্ষুব্দ ও হতাশা প্রকাশ করেছেন।
১২ জুলাই সকাল থেকে টেকনাফের বিস্তীর্ণদ্বীপ সেন্টমার্টিন ইউনিয়নে ৬,৭ ও ৮ নম্বর ওয়ার্ডে পরিচয়পত্রধারী জেলেদের মাঝে চাল বিতরণে অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগ ওঠে।

জানা গেছে, সম্প্রতি সাগরে মাছ ধরা বন্ধ রয়েছে। জেলে সম্প্রদায় অন্নহীন হয়ে পড়েছে। এরই প্রেক্ষিতে সরকারি ভিজিএফ হিসেবে যা চাল দেয়া হচ্ছে তাও অপ্রতূল। সেখান থেকেও চাল বিতরণে অনিয়ম ও দূর্নীত করে বরাদ্দকৃত চাউল কম দেয়া হচ্ছে। এমন অভিযোগ ভূক্তভুগি জেলেরা।
সেন্টমার্টিন ইউনিয়নের অনেক জেলে পরিচয়পত্রধারীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, সম্প্রতি বঙ্গোপসাগরে মাছ শিকার বন্ধ রয়েছে। সেন্টমার্টিনের মাছ শিকারিদের সরকারি তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করা হয়। এসব তালিকাভুক্তদের সরকারিভাবে চাল দিয়ে থাকে। প্রতিজন পরিচয়পত্রধারীকে ৫৬ কেজি চাউল পাওয়ার কথা রয়েছে। কিন্তু চাল বিতরণের সময় ৫০ কেজি করে চাউল পেয়েছেন তারা।

আজকে ১২ জুলাই সকাল থেকে ৭,৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের জেলেদের মাঝে এ চাউল বিতরণ করা হয়। গতকাল শনিবার ১,২, ৩ এবং ৪,৫, ও ৬ ওয়ার্ডের জেলেদের মাঝে চাল বিতরণ করা হয়েছে। মোট ৮৩৯ জন জেলেদের মাঝে চাউল বিতরণ শেষ করা হয়েছে। ৫০৩৪ কেজি চাউল নয়ছয় করা হয়েছে।
সেন্টমার্টিন ২ নং ওয়ার্ডের জেলে মো. জুবাইর জানান, দুই মাস পর্যন্ত সাগরে মাছ ধরা বন্ধ রেখেছে সরকার। সে হিসেবে ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে চাউল দেয়া হচ্ছে। ৫৬ কেজি করে চাউল দেয়ার কথা থাকলেও ৫০ কেজি চাউল পেয়েছে বলেও জানান তিনি।
১ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা আবু সাঈদ জানান, এমন দূরাবস্থায় চাউল বিতরণেও অনিয়মের আশ্রয় নেন চেয়ারম্যান নুর আহমদ। ৫০ কেজি চাউল পাওয়ার কথাও জানান তিনি।
সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ফরিদ আলম জানান, চেয়ারম্যানের লক্ষাধিক টাকা খরচ হয়েছে। যার কারণে বাকি চাউল রেখে দেয়া হচ্ছে। চাউল বিতরণের এখতিয়ার সম্পূর্ণ চেয়ারম্যানের।
এ ব্যাপারে চেয়ারম্যানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, বাকি ছয় কেজি চাউল সিদ্ধ হওয়ায় জেলেরা না নেওয়ায় রেখে দেয়া হয়েছে।
এ দিকে টেকনাফ উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, ৫৬ কেজি করে ভিজিএফ চাউল পাওয়ার কথা রয়েছে। জেলেরা কম পাওয়ার ক্ষেত্রে সেন্টমার্টিন থেকে বেশ কয়েকজন অভিযোগও করেছেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. পারভেজ চৌধুরী জানান, সাগরে মাছ শিকার বন্ধ রয়েছে। সে হিসেবে সরকার মানবিক চিন্তা করে জেলেদের বিশেষ বরাদ্দ হিসেবে চাউল দেয়া হচ্ছে। কম দেওয়ার বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।