মিছবাহ উদ্দিন:
সারাদেশে করোনা পরিস্থিতি ভয়াবহ রুপ ধারণ করেছে। অন্যান্য জেলার মতো কক্সবাজারও পাল্লা দিয়ে বেড়েছে সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার। ফলে করোনা নিয়ন্ত্রণে হিমসিম খাচ্ছে স্বাস্থ্য বিভাগ। এদিকে জনগণকে সংক্রমণ থেকে রক্ষায় ১৪ দিনের কঠোর লকডাউন ঘোষণা করেছে সরকার। কিন্তু এ কঠিন পরিস্থিতিতেও কিছু অসাধু চক্রের যোগসাজশে কঠোর লকডাউনের বিধিনিষেধ উপেক্ষা করে বিগত সপ্তাহে দুই দফা পশুর হাট বসিয়েছে ঈদগাঁও বাজারের ইজারাদার। এ বিষয়ে পত্র-পত্রিকায় নিউজ এবং সচেতন জনগণ বারবার অবহিত করলেও রহস্যময় কারণে কোন ব্যাবস্থা নেয়নি উপজেলা প্রশাসন ও থানা কর্তৃপক্ষ।

সুত্র মতে, চলতি কঠোর লকডাউনে সরকার নির্দেশিত জরুরি সেবা ছাড়া সব ধরনের প্রতিষ্ঠান ও জংশন এলাকাগুলোর উপর কঠোর বিধি নিষেধ আরোপ করা হয়েছে। এরপরও দেশজুড়ে করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার অতীতের সকল রেকর্ড অতিক্রম করছে প্রতিনিয়ত। এক কথায় এ সংক্রমণ মহামারী আকার ধারণ করায় সরকার ও স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা রীতিমতো আতংকিত।

এ অবস্থায় সরকারের নির্দেশনা অমান্য করে লকডাউনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে কক্সবাজার সদরের ঈদগাঁওতে গরু বাজারের ইজারাদার কিছু অসাধু চক্রের যোগসাজশে বিগত সপ্তাহের শনি ও মঙ্গল দুই দফা পশুর হাট বসিয়েছে। যা স্থানীয় সচেতন মহল ও গণমাধ্যম কর্মীরা উপজেলা প্রশাসন ও থানা পুলিশকে বারবার অবগত করলেও রহস্যময় কারণে কোন ব্যাবস্থা নেয়নি। উপজেলা প্রশাসন ও থানা পুলিশ বিভিন্ন অজুহাতে বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়ায় জনমনে তাদের ভুমিকা নিয়ে নানান প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে। যেখানে সরকার লকাডাউনে গণজমায়েতের উপর কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করেছে, সেখানে পশুর হাটেরমত গণজমায়েত করা গরুবাজারের বিরুদ্ধে প্রশাসন ব্যাবস্থা না নেয়ায় মোটা অংকের অনৈতিক লেনদেন হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

কঠোর লকডাউনের মধ্যেও দুই দফা পশুর হাট করতে পারায় আজ (১০ জুলাই) আবারও পশুর হাট বসানোর পায়তারা চালাচ্ছে এ চক্র। স্থানীয় বিভিন্ন গণমাধ্যম কর্মী ও সচেতন মহল এ পশুর হাটের বিষয়ে আপত্তি করলেও তারা উপজেলা প্রশাসনের অনুমতি নিয়েছে বলে এড়িয়ে যাচ্ছে। এদিকে কিছু কিছু গণমাধ্যম কর্মীদের মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে ম্যানেজ করেছে বলেও প্রকাশ পেয়েছে।

ইতিমধ্যে ঈদগাঁও থানাধীন উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মানুষ করোনাক্রান্ত হয়েছে। গত ৮ জুলাই সকালে করোনা স্যাম্পল জমা দেয়ার পর দুপুরেই করোনা উপসর্গে মৃত্যু ঘটে ঈদগাঁও উত্তর মাইজ পাড়ার তিন সন্তানের জনক ওমর ফারুকের। যা নিয়ে চারদিকে রীতিমতো আতংক ছড়িয়ে পড়েছে।

এদিকে চলমান লকডাউনের মধ্যে দেশের কোথাও পশুর হাটের অনুমতি দেয়নি সংশ্লিষ্ট প্রশাসন। কিন্তু এ নির্দেশনার তোয়াক্কা না করে ঈদগাঁওয়ে লকডাউনের শুরু থেকেই কোন অদৃশ্য শক্তির ইশারায় পশুর হাট বসছে তা নিয়ে কৌতুহলের শেষ নেই। তাই সচেতন জনগণ চলমান ভয়াবহ করোনা সংক্রমণ থেকে ঈদগাঁওবাসীকে রক্ষায় গণজমায়েত করে পশুর হাট বন্ধ করতে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

এ বিষয়ে কক্সবাজার জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান সোহেল জাহান চৌধুরী বলেন, বিত্তশালীরা গরু বাজারের মতো গণজমায়েত করতে পারলে অন্যান্য ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে গরীবের পেটে লাথি মারার দরকার কি? বিষয়টি প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি।