মো. নুরুল করিম আরমান, লামা:
গত কয়েক দিনের টানা বর্ষনে সৃষ্ট পাহাড়ি ঢলের পানির স্রোতের টানে বান্দরবানের লামা উপজেলার আজিজনগর ইউনিয়নের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতির মধ্যে একটি কমিউনিটি ক্লিনিক ও মসজিদসহ বেশ কয়েকটি ঘরবাড়ি রয়েছে। এখনি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নেওয়া হলে যে কোন মুহুর্তে ধসে পড়তে পারে কমিউনিটি ক্লিনিক ও মসজিদটি। বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় ঝুঁকি নিয়েই চলছে এ দুই প্রতিষ্ঠানে সেবা ও নামাজ আদায়। বেপরোয়া দখলের কারনে ইউনিয়নটির ওপর দিয়ে বয়ে চলা হিমছড়ি খালটি পানির স্বাভাবিক গতি পরিবর্তন হয়ে এ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ।

জানা যায়, গত কয়েক দিনের প্রবল বর্ষণের ফলে সৃষ্ট পাহাড়ি ঢলে হিমছড়ি খালের পানি বৃদ্ধি পায়। অপরদিকে খালটির দুই পাড় দখলের কারণে পানির গতি পরিবর্তন হয়ে স্রোতের টানে আজিজনগর উত্তরপাড়াস্থ কমিউনিটি ক্লিনিকের গাইড ওয়ালটি গত শুক্রবার ধসে পড়ে পানিতে তলিয়ে যায়। শুধু তাই নয়, বর্তমানে ক্লিনিকের মূল ভবনটিতেও ফাটল ধরেছে। যে কোন মুহুর্তে ভবনটি ধসে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। একই কারণে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে হিমছড়ি পাড়া মসজিদের মাঠে। এতে হুমকির মুখে পড়েছে এ মসজিদটিও।

এদিকে স্থানীয় নাজিম উদ্দিন রানার অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে বেশ কয়েকটি পরিবার হিমছড়ি খালটির বিভিন্ন অংশ দখল করে জমি বানিয়ে রেখেছে। এর মধ্যে ক্লিনিকের পাশে লোহাগাড়া উপজেলার চুনতি ইউনিয়নের তইছ মেম্বার ও পূর্বপাশে তারা মিয়া নামের দুই ব্যক্তি খালটি দখল করে রাখার কারণে চলতি বর্ষায় পানির গতি পরিবর্তন হয়ে উত্তর পাড়া কমিউনিটি ক্লিনিক ও মসজিদটি ধসে পড়ছে। তাই দ্রুত অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন স্থানীয়রা।

এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মহিউদ্দিন মাজেদ চৌধুরী বলেন, আজিজনগর ইউনিউনের উত্তরপাড়া কমিউনিটি ক্লিনিকটি এলাকার জন্য খুবই জরুরী। প্রতিদিন প্রায় দশ গ্রামের মানুষ এ ক্লিনিক থেকে সেবা নিয়ে থাকেন। কিন্তু গত কয়েক দিনের প্রবল বর্ষণের ফলে খালের পানির স্রোতের টানে ক্লিনিকের গাইড ওয়ালটি ধসে গেছে। মূল ভবনটিতেও ফাটল ধরেছে। বর্তমানে ঝুঁকি নিয়েই চলছে ক্লিনিকের সেবা কার্যক্রম।

প্রবল বর্ষণে ক্ষয়ক্ষতির সত্যতা নিশ্চিত করে আজিজনগর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. জসিম উদ্দীন কোম্পানী জানায়, প্রবল বর্ষণে ইউনিয়নে বেশ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান ও নির্বাহী অফিসারকে তাৎক্ষনিকভাবে জানানোর পাশাপাশি ক্লিনিকের গাইড ওয়াল ধসে পড়াস্থানে আপাতত বালির বস্তা দিয়ে ঠেকানো হয়েছে।

ক্ষতিগ্রস্ত কমিউনিটি ক্লিনিক এবং মসজিদসহ এলাকাগুলো পরিদর্শনের পাশাপাশি এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলে জানান উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. রেজা রশীদ।