মোঃ জয়নাল আবেদীন টুক্কু :
কক্সবাজারের উখিয়ার বালুখালী থেকে কথিত রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের হাতে অপহৃত ব্যাংক কর্মকর্তার অপহরণ নাটকের অবসান হয়েছে। পুলিশ অবশেষে ১৯ লাখ ৯২ হাজার টাকাসহ ওই ব্যাংক কর্মকর্তাকে গ্রেফতার করেছে।

রবিবার (৪ জুলাই) বিকেলে নাইক্ষ্যংছড়ি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুহাম্মদ আলমগীর হোসেন ও ঘুমধুম পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ মোঃ দেলোয়ার হোসেন এর দিকনির্দেশনায় ঘুমধুম পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের এসআই আল আমিন, এএসআই মোঃ অলি সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং ইউনিয়নের কাঞ্জর পাড়ায় নিজ বাড়িতে অভিযান পরিচালনা করে হামিদ হোসেনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হন পুলিশ। এর পর হামিদের পূর্ব পরিচিত জনৈক জহিরের বাড়িতে লুকিয়ে রাখা ১৯ লাখ ৯২ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয় বলে জানিয়েছেন নাইক্ষ্যংছড়ি থানার ওসি মুহাম্মদ আলমগীর হোসেন।

উল্লেখ্য ,আল আরাফা ইসলামী ব্যাংকের উখিয়ার কুতুপালং শাখার ক্যাশ অফিসার হাফেজ হামিদ হোসেনকে ৩০ জুন প্রকাশ্যে দিবালোকে অপহরণ করেছিল কে বা কারা, এর পর সন্ত্রাসীরা তার পরিবারের কাছে ২০ লাখ টাকার মুক্তিপণ দাবি করে আসছিল বলেও সংবাদ প্রচার করা হয়।

অপহৃতের এক চাচা জানান, রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা তাদের ডেরায় হামিদকে আটকিয়ে মারধর করে এবং তার বাবা খাইরুল আলমের কাছে মোবাইলে ২০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। পরে পরিবারের পক্ষ থেকে উখিয়া ও টেকনাফ থানাসহ আইন-শৃংখলা বাহিনীর সদস্যদের ঘটনাটি অবহিত করা হয়। গত ৩০ জুন সকালে অপহরণের ঘটনাটি ঘটে বলে প্রচার করা হয়।

এরপর আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা তৎপর হয়ে উঠলে শুক্রবার রাতেই ওই ব্যাংক কর্মকর্তাকে ছেড়ে দেওয়া হয় বলে প্রচার করা হয়।

গেল শনিবার রাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা হামিদকে তার বাসা থেকে নিয়ে যায়। উখিয়া-টেকনাফের কোনো এক থানায় তার খোঁজ না পাওয়ায় রহস্য আরো বেড়ে যায়।

সর্বশেষ জানা যায়, পার্শ্ববর্তী নাইক্ষ্যংছড়ি থানার পুলিশ তাকে বাড়ি থেকে নিয়ে গিয়ে বিষয়টি তদন্তে নামে। এতে বেরিয়ে আসে অপহরণ নাটকের প্রকৃত রহস্য। ওই ব্যাংক কর্মকর্তার গ্রামের বাড়ি কান্জরপাড়ার এক বাড়ি থেকে পুলিশ উদ্ধার করে ১৯ লাখ ৯২ হাজার টাকা।হামিদ ও তার পিতা খাইরুল আলম কে নাইক্ষ্যংছড়ি পুলিশের হেফাজতে নেয়

জানা গেছে, ৩০ জুন ব্যাংকে যাওয়ার পথে উখিয়ার বালুখালী গ্রামের মোঃ আয়ুবের ছেলে মোঃ ইকবাল নামের একজন গ্রাহক তাকে ২২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা দিয়েছিল ব্যাংকে জমা দেওয়ার জন্য। ওই টাকা ব্যাংকে জমা না দিয়ে হামিদ আত্নসাতের উদ্যেশ্যে কথিত অপহরণের নাটক সাজিয়েছিল।

তবে ওই টাকা হামিদকে কেন? কি জন্য বা কাকে দেওয়ার জন্য দেওয়া হয়েছিল? তা এখনো অজানা রয়েই গেল। ঘটনাস্থল উখিয়া এবং ওই ব্যাংক কর্মকর্তার বাড়ি টেকনাফে হওয়ার পরেও কেন নাইক্ষ্যংছড়ি থানার অভিজ্ঞ চৌকস পুলিশ কর্মকর্তা ঘটনাটি তদন্তে নামে সফল হন।