সিবিএন ডেস্ক:
পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে ভিজিএফের (ভালনারেবল গ্রুপ ফিডিং) আওতায় এক কোটিরও বেশি অতি দরিদ্র, অসহায় ও দুঃস্থ পরিবারকে বিনামূল্যে ১০ কেজি করে চাল দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এ উদ্দেশ্যে চাল বরাদ্দ দিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতরের মহাপরিচালকের কাছে চিঠি দিয়েছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়।

রোববার (৪ জুলাই) দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য কর্মকর্তা মো. সেলিম হোসেনের সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। ঈদের আগেই এই চাল পরিবারগুলোর কাছে পৌঁছে দিতে নির্দেশনা দিয়েছে মন্ত্রণালয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঈদুল আজহা উপলক্ষে ভিজিএফ কর্মসূচির আওতায় এক কোটি ১৭ হাজার ৫৫১টি কার্ডের বিপরীতে ১০ কেজি হারে এক লাখ ১৭৬ দশমিক ৫১ টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এসব কার্ডের মধ্যে ৪৯২টি উপজেলার কার্ড রয়েছে ৮৭ লাখ ৭৯ হাজার ২০৩টি, ৩২৮টি পৌরসভার কার্ড রয়েছে ১২ লাখ ৩৮ হাজার ৪৪৮টি। জেলা প্রশাসকরা ভিজিএফ বরাদ্দের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট এলাকার সংসদ সদস্যকে অবহিত করবেন।

বরাদ্দপত্রে বলা হয়েছে, ভিজিএফ উপকারভোগী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে আদমশুমারি ২০১১-এর জনসংখ্যা অনুযায়ী ইউনিয়ন ও ওয়ার্ডভিত্তিক বরাদ্দ করা ভিজিএফ কার্ড সংখ্যা পুনঃবিভাজন করে তালিকা তৈরি করতে হবে। দুঃস্থ ও অতি দরিদ্র ব্যক্তি বা পরিবারকে এ সহায়তা দিতে হবে। তবে সাম্প্রতিক বন্যা কবলিত ও অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত দুঃস্থদের অগ্রাধিকার দিতে হবে।

১২টি শর্ত দিয়ে এর চারটি পূরণ করে— এমন ব্যক্তি বা পরিবারকে দুঃস্থ বলে গণ্য করে সহায়তা দিতে হবে বলে জানিয়েছে মন্ত্রণালয়। শর্তগুলোর মধ্যে রয়েছে— যাদের ভিটে বাড়ি ছাড়া কোনো জমি নেই; যে পরিবার দিনমজুরের আয়ের ওপর নির্ভরশীল; যে পরিবার মহিলা শ্রমিকের আয় বা ভিক্ষাবৃত্তির ওপর নির্ভরশীল; যে পরিবারে উপার্জনক্ষম পূর্ণবয়স্ক কোনো পুরুষ সদস্য নেই; যে পরিবারে স্কুলগামী শিশুকে উপার্জনের জন্য কাজ করতে হয়; যে পরিবারে উপার্জনশীল কোনো সম্পদ নেই; যে পরিবারের প্রধান স্বামী পরিত্যক্তা; যে পরিবারের প্রধান অস্বচ্ছল মুক্তিযোদ্ধা; যে পরিবারের প্রধান অস্বচ্ছল ও অক্ষম প্রতিবন্ধী; যে পরিবার কোনো ক্ষু্দ্র ঋণ পায়নি; যে পরিবার প্রাকৃতিক দুর্যোগের শিকার হয়ে চরম খাদ্য বা অর্থ সংকটে পড়েছে; এবং যে পরিবারের সদস্যরা বছরের অধিকাংশ সময় দুই বেলা খাবার পায় না।

ইউনিয়ন বা পৌরসভা ভিজিএফ কমিটির প্রকাশ্য সভায় এই তালিকা তৈরি করে তা প্রত্যায়ন করতে হবে জানিয়ে মন্ত্রণালয় বলছে, তালিকা এমনভাবে করতে হবে যেন একই পরিবারের একাধিক ব্যক্তি ভিজিএফ কার্ড বরাদ্দ না পায়। বরাদ্দ করা চাল শর্ত মেনে আগামী ১৯ জুলাইয়ের মধ্যে বিতরণ নিশ্চিত করতে হবে বলে বরাদ্দপত্রে উল্লেখ করা হয়।