ফেসবুক কর্ণার:

সন ১৯৭১। তারিখ ৭ ই মার্চ। স্থান রেসকোর্স ময়দান। গুরু গম্ভীর কণ্ঠে বঙ্গবন্ধু জাতি এবং আন্তর্জাতিক গোষ্ঠীর বরাবরে বার্তা দিয়ে দিলেন-এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম , এবারের সংগ্রাম আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রাম । মূলত সেদিনই ঘোষিত হয়ে গিয়েছিল স্বাধীনতার স্পষ্ট ঘোষণা।

অসাধারণ রাজনৈতিক প্রজ্ঞা সম্পন্ন বঙ্গবন্ধুর ৭ ই মার্চের ভাষণ বিশ্লেষণ করলে এটা অনুধাবন যোগ্য যে তিনি সেই ভাষণে ইংগিতে সবই ব্যক্ত করেছিলেন। কিন্তু আগ বাড়িয়ে সশস্ত্র সংগ্রামে অবতীর্ণ হওয়ার প্রকাশ্য হুকুম দেননি। কারন একদিকে সশস্ত্র পাকিস্তানি সেনা অন্যদিকে নিরস্ত্র জনতা – আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টি কোনের বিষয়টি ও ছিল অতীব গুরুত্বপূর্ণ। ভাষণ’টা ছিল যেন এরকম * সবকিছুই বলে দেয়া হল কিন্তু কিছুই বলা হলোনা *। ৭ ই মার্চের ভাষনের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু বিশ্বের কাছে প্রমান করে দিয়েছিলেন বাঙালি ন্যায়ের পথ অনুসরণকারী আর পাকিস্তানিরা জুলুম ও অন্যায়ের পথ অবলম্বনকারী। এর পর ২৫ মার্চ বিভীষিকাময় কালো রাত্রি।

বঙবন্ধুর নির্দেশে বাঙালি কেবল মানসিক ভাবে স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রস্তুতি নিতে ছিলেন। পাকসেনারা শুরু করেদিল নিরস্ত্র বাঙালি নিধন। পাকিস্তানিরা বুঝেনি ২৫ মার্চের গন হত্যাই সাড়ে সাত কোটি মানুষকে জুলুম / দমিয়ে রেখে সুখ ভোগ করার তাদের লালিত স্বপ্ন ধুলি স্বাদ হয়ে গেছে। এরপর ইতিহাস – পাকিস্তানি বাহিনীর জুলুম / হত্যার কবল থেকে বাঁচার জন্য এক কোটি বাঙালি ভারতে শরণার্থী হিসাবে আশ্রয় নিল। তারপর জীবন উৎসর্গ করে শুরু করল মুক্তি যুদ্ধ। বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের অতি সতর্ক ও জ্ঞান গর্ভ ভাষনের কারনে বিশ্ব সম্প্রদায়ের ( কতিপয় রাষ্ট্র ছাড়া) সহানুভূতি ও সমর্থন অর্জন করা সম্ভব হয়েছিল। ফলে মাত্র নয় মাস যুদ্ধ করেই পরাধীনতার গ্লানি মোচন করে স্বাধীন হল একটি দেশ – যা সংক্ষিপ্ত সময়ে স্বাধীনতা অর্জনের ক্ষেত্রে বিশ্বে বিরল ঘঠনা। *** আজ দেশ পরিচালনায় বঙ্গবন্ধু কন্যা। তিনি দেখেছেন ২৫ মার্চ। দেখেছেন নির্যাতিত নিপিড়ীত নিজ জন্মভূমি ত্যাগ করে এক কোটি শরণার্থীর অবস্থান / কষ্ট / বাঁচার আকুতি / নিজ জন্মভূমিতে ফিরে আসার ব্যাকুলতা। **** বঙ্গবন্ধু কন্যা – যার মনের বিশালতা পিতার মতনই সমূদ্র সম। মানবতা যার অন্তরের প্রকৃত স্বরূপ। তার স্মৃতি থেকে স্বাধীনতা সংগ্রাম / ২৫ শে মার্চ / এক কোটি অসহায় আশ্রয় নেওয়া মানুষের কথা মুছে যাবে কেমন করে? ** ** তাই ২০১৭ সালে তিনি যখন দেখলেন নির্যাতনের মুখে পড়ে লক্ষ লক্ষ রোহিঙ্গা তাদের স্বদেশ মিয়ানমার ত্যাগ করে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়ার জন্য নাফ নদীর ওপারে অবস্থান গ্রহণ করেছেন। তাহার মানবিক গুন ও মহানুভবতা কারনে লক্ষ লক্ষ বাস্তহারা রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেওয়া হল বাংলাদেশের উখিয়া টেকনাফের সীমান্ত এলাকায়। তাদের জন্য অন্ন/ বস্ত্র / বাসস্থান সহ সব ব্যবস্থাই করা হল। দৃষ্টি আকর্ষণ করা হল জাতীয় সংঘ সহ বিশ্ব সম্প্রদায়ের। রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে চুক্তি সম্পাদন করতে মিয়ানমার কে একপ্রকার বাধ্য করতে সক্ষম হলেন। কিন্তু হায়! বিশ্ব সম্প্রদায় বঙ্গবন্ধু কন্যার সৎ বিশ্বাসের মূল্যায়ন করা মনে হয় ভুলেই গেল। *জেগে থেকে ও ঘুমের ভান করার মতো*। অবশ্য এটা স্বাভাবিক বিষয় যে জাতীর পিতার কন্যার হাত ধরে একটি গরীব দেশ অতি তাড়াতাড়ি সবদিক দিয়ে সাফল্যের চুড়ায় আরোহন করে পরের উপর নির্ভরতা কমিয়ে আত্মনির্ভরশীল হয়ে উঠুক সেটা তো অনেকের নিকট কাম্য হতে পারেনা। তাই আজ প্রায় পাঁচ বৎসর অতিক্রম হতে যাচ্ছে কিন্তু রোহিঙ্গাদের স্বদেশে প্রত্যাবাসনের আন্তর্জাতিক সমস্যার বিষয় টি অন্ধকারেই রয়ে গেল বা রেখে দেওয়া হল। বনসম্পদ সম্পুর্ন উজাড় / অভয়ারণ্যের হাতি কূল এখন গ্রামে আর নাফ নদীর পাড়ে খাদ্যের অভাবে মৃত্যুর প্রহর গুনছে। বনের পশুসম্পদ সবই বিলুপ্ত ( রোহিঙ্গা জংগী গোষ্ঠী কতৃক হত্যা ও বন নিধনের কারনে) । পাহাড় বিলীন। প্রকৃতি ও পরিবেশ চরমভাবে বিপর্যস্থ। এতসব কিছুর পরও বাঙালীকে মহান আল্লাহ ধৈর্য্য ও ত্যাগের অসীম সহ্য গুন দান করেছেন। কিন্তু ৫২ / ৭১ থেকে শিক্ষা নেওয়া বাঙালী জাতিকে সৃষ্টি কর্তা আরো একটি গুন দিয়েছেন। তাহল * সার্বভৌমত্ব রক্ষার বিষয়ে আপোষহীনতা। ***বিপত্তি ঘটতে পারে ওখানেই ***। আগমনকারী রোহিঙ্গাদের কে প্রথম দিকে মনে হয়েছিল গোবেচারা রুপে। তাই আমাদের মধ্যে তাদের জন্য ছিল *প্রীতি*। তাদের কৃর্তীতে এখন আমাদের কাছে সংগত কারনেই জন্মেছে *রোহিঙ্গা ভীতি*। আদৌ কি রোহিঙ্গারা স্বদেশে ফেরত যাবে অথবা ফেরত নেওয়া হবে? দিন যতই গড়াচ্ছে সন্দেহের অবকাশ ততই বৃদ্ধি পাচ্ছে। রোহিঙ্গাদের মধ্যে তৈরি হয়েছে এবং হচ্ছে একাধিক জঙ্গি গোষ্ঠী। তার মধ্যে আল- ইয়াকিন অন্যতম। রোহিঙ্গা জঙ্গি গোষ্ঠীর ভয়ে বাংলাদেশের জনগন আজ ভীত সন্ত্রস্ত। রোহিঙ্গা জঙ্গিদের হাতে নিহত / আহত হয়েছেন অনেক বাংলাদেশী। নিহত হয়েছেন প্রত্যাবাসনে ইচ্ছুক অনেক রোহিঙ্গা। গুম/ খুন / অপহরণ এখন রোহিঙ্গা জঙিদের স্বাভাবিক কর্মকাণ্ডের অংশ বিশেষে পরিনত হয়েছে। তাদের হাতে এখন আধুনিক অস্ত্র। অর্থ জোগাড়ে তারা মরিয়া। মিয়ানমার সরকারের অনেকের সাথে তাদের চরম সখ্যতা ও যোগাযোগ বিরাজমান। ফলশ্রুতিতে তারা একপ্রকার বিনিয়োগ ছাড়াই মিয়ানমারের কাছ থেকে ইয়াবা ক্রয় ও সংগ্রহ করে বাংলাদেশে বিক্রি করে অর্থ যোগাড়ে রত। এ অর্থ যোগাড়ের কারন কি? কারন অস্ত্র সংগ্রহ কিনা? যদি তা হয় মিয়ানমার সরকার কি জেনেশুনে নিজেদের বিরুদ্ধে ব্যবহৃত হওয়ার জন্য রোহিঙ্গাদের কে অস্ত্র সংগ্রহে অর্থ যোগাড়ের সহয়োগীতা করবে? তাহলে রোহিঙ্গা জঙ্গিরা কাদের বিরুদ্ধে অস্ত্র ব্যবহারের প্রস্তুতি নিচ্ছে সেটা গভীর ভাবে ভাবার বিষয়। রোহিঙারা তাদের জঙ্গি সংগঠনে নারীদের অন্তর্ভুক্ত করতেছে। কেন? নারী জঙ্গিদের কাজ তো একটাই * আত্মঘাতী পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা*। রোহিঙ্গারা যদি স্বদেশে ফেরত যাবার সদিচ্ছাই থাকে তবে কেন ৫৫ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হল? কোন উদ্দেশ্যে লক্ষ লক্ষ রোহিঙ্গা বাংলাদেশের জাতীয় পরিচয় পত্র সংগ্রহ করল? **- সবকিছু ছাড়িয়ে অতীব শংকার বিষয়টি হল আল -এয়াকিন সহ রোহিঙ্গা জঙ্গি সংগঠন গুলি এমনকি বহু সাধারণ রোহিঙ্গা অনেকটা প্রকাশ্যেই চট্টগ্রাম / ককসবাজার সহ পার্বত্য অঞ্চলকে তাদের পূর্ববর্তী আরাকানের অংশ এবং এসব এলাকা তাদেরই দেশ বলে বিভিন্ন ভাবে ক্যাম্প সমূহে প্রচারণা চালাচ্ছে যাতে করে প্রত্যাবাসনে আগ্রহীরাও প্রত্যাবাসন বিরোধী হয়ে উঠে। তাহলে এ প্রচারনার অন্তরালে মিয়ানমার ও আর্ন্তজাতিক কোননা কোন গোষ্ঠী বা সম্প্রদায়ের ইন্ধন আছে কি? আরো শংকার বিষয় যে সম্ভাব্য সেই ইন্ধন বা ষড়যন্ত্রের পিছনে দেশীয় কোন এজেন্টরা ও কাজ করছে কি? না হলে রোহিঙ্গাদেরকেই তাদের ক্যাম্প স্থিত ব্যবসা বানিজ্য চালানোর একছত্র সুযোগ করে দেওয়ার কারন কি? কেন ক্ষতিগ্রস্থ এলাকার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ছোট খাট ব্যবসা করতে চাইলে তথায় নিয়োজিত কতৃপক্ষ তাদের কে বিতাড়িত করে? লক্ষ টাকার মালামাল সহ সবকিছু সরিয়ে নেওয়া সুযোগ না দিয়েই পুড়িয়ে ধ্বংস করে দেয়? কিছুসংখ্যক চাকুরী পাওয়া স্থানীয়দের প্রতিনিয়ত ছাটাই করে যাচ্ছে? তবে কি কিছু গোপন করা হচ্ছে? মনে হয় যেন তারা বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে নয় বরন্চ অন্য কারো হয়ে কর্তব্যে নিয়োজিত! বিগত ও সাম্প্রতিক সব বিষয় সমূহ পয্যালোচনা করলে শংকিত না হওয়ার উপায় নাই। তাই শিরোনামে উল্লেখ করেছি বাঙালি জাতির জন্য হয়ত আবারো একটি ৭ ই মার্চের ভাষন জরুরি ভাবে আসন্ন। ৭১ সনে ভাষন দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু সার্বভৌমত্ব আদায় করার জন্য। নিকট ভবিষ্যতে বঙ্গবন্ধু কন্যার ভাষনের প্রয়োজন হতে পারে সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য।

মাহমুদুল হক চৌধুরী।

সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান উখিয়া

এবং প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি রোহিঙ্গা শরনার্থী প্রত্যাবাসন সংগ্রাম কমিটি।

01819976384.

Mahmudul Hoque Chowdhury

 

রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী সংগঠন * আল- ইয়াকিন* বাহিনী কতৃক মুক্তিপন আদায়ের পরিকল্পিত লক্ষ্যে অপহরণের তিন দিন পর তথাকথিত (তাদের বর্তমান ভয়ংকর স্বরূপের পরিচয় মেলার কারনে *তথাকথিত* শব্দ টি লিখতে আমার লেখনী আমাকে বাধ্য করল) নির্যাতিত / বাস্তহারা রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দ্বাতা বাংলাদেশেরই সন্তান আল – আরাফা ইসলামি ব্যাংকের কর্মকর্তা * হামিদ* অবশেষে মুক্তি পেয়েছে। ফিরে আসতে পেরেছে প্রান নিয়ে! খবরটি আপাততঃ স্বস্তি দায়ক হলেও মন বলছে এগুলো ১২ নং মহাবিপদ সংকেতের আগাম বার্তা। প্রিয় আবহাওয়া অফিস অনুগ্রহ পূর্বক আগেভাগেই সতর্ক হউন। অন্যতায় সাইক্লোনে অনেক কিছু লন্ড ভন্ড হয়ে যেতেও পারে।