শহীদুল ইসলাম সোহাগ:
টানা বৃষ্টিতে সীমান্ত উপজেলা টেকনাফে পাহাড় ধসের আশংকা রয়েছে। গত রোববার থেকে থেমে থেমে বৃষ্টি হলেও বুধ, বৃহস্পতিবার ও শনিবার এক টানা বর্ষণে পাহাড় ধসের আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। এমনকি বৃষ্টির কারণে পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসকারীদের প্রাণহানির শঙ্কা রয়েছে।

এদিকে পাহাড়ি ঢল ও বৃষ্টির কারণে বেড়েছে নাফ নদীর পানি। এইভাবে বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে প্লাবিত হবে নিন্মা ল। পাহাড় ধস মোকাবেলায় আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তত রেখেছে স্থানীয় প্রশাসন।

সরেজমিন দেখা যায়, টেকনাফের শামলাপুর , নোয়খালী পাড়া,হোয়াইক্যং, আমতলী , লম্বাবিল, কান্জর পাড়া , নয়াবাজার , রঙ্গীখালী,টেকনাফ সদও সহ বেশ কিছু এলাকায় স্থানীয়রা পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণভাবে পাহাড়ের পাদদেশে বসবাস করছেন স্থানীয়রা। মৃত্যুঝুঁকি নিয়ে পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসরত বেশ কয়েকজন বাসিন্দা জানান, ‘এখানে আমরা বছরের পর বছর বসবাস করছি। অন্য কোথাও আমাদের থাকার জায়গা নেই।’

বিগত কয়েক বছর আগে টেকনাফে পাহাড় ধসে প্রচূর প্রাণহানির ঘটনা ঘটলেও পাহাড় ধস রোধে নেই কোনো স্থায়ী টেকসই ব্যবস্থাপনা বা পরিকল্পনা। ফলে প্রতি বছরই পাহাড় ধ¦স বা পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণ বসবাসে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বাড়ছে। পাহাড় কর্তন করে পাদদেশে কিংবা পাহাড়ের ওপর বসবাসরতদের বেশির ভাগই উপজাতি ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মানুষ। বিকল্প উপায় না পেয়ে বছরের পর বছর তারা এখানে বসবাস করছেন।

পাহাড়ে বসবাসরত জসিম উদ্দিন নামের একজন জানান , মৃত্যুঝুঁকি জেনেও বাধ্য হয়ে এখানে তারা বসবাস করছেন। প্রতি বছর বর্ষা এলে পাহাড়ে বসবাসরতদের মাঝে আতঙ্ক বাড়ে। গত চার দিন পাহাড় ধ্বসের ভয়ে নির্ঘুম কাটাচ্ছেন ।

কক্সবাজার পরিবেশ আন্দোলনের সাধারন সম্পাদক কলিম উল্লাহ জানান, গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে টেকনাফসহ কক্সবাজার জেলার বিভিন্ন এলাকায় পাহাড় ধ্বসে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। কক্সবাজার জেলায় অবৈধ পাহাড় কাটার প্রবণতা বেশি। এতে বিভিন্ন জায়গায় কর্তনকৃত পাহাড় ধসে পড়বে। পাহাড়ে বসবাসরত নাগরিকদের সকল সুবিধা বন্ধ রাখলে কেউ বসতি স্থাপনা করবে না ।

হোয়্ইাক্যং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুর আহম্মদ আনোয়ারী জানান, সরকারিভাবে এখনো কোন নির্দেশনা আসে নাই । তারপরও ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে এলার্ট করার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী অফিসার পারবেজ চৌধুরী বলেন , ঝুকিপূর্ণ এলাকায় আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে । উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঝুকিপূর্ণ পাহাড় থেকে সরে যেতে প্রতিনিয়ত মাইকিং ,দূর্গতদের প্রয়োজনীয় সহায়াতা এবং জনসচেতনতায় কাজ করছেন ।