নুরুল কবির, বান্দরবান:
বান্দরবানে রাস্তা নির্মাণ কাজে ইটের স্তর বসাতে পাহাড়ের মাটি ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। জেলার রোয়াংছড়ি উপজেলা সদরের ৬নং ওয়ার্ড বটতলী পাড়া হয়ে পানতলা ভায়া গালেঙ্গ্যা সংযোগ সড়কে এ কাজ চলছে। এ নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হলেও ঠিকাদার নিজের মতো মন গড়া করেই কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। ফলে জনগণের প্রত্যাশিত চলমান রাস্তার কাজের স্থায়িত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।এবং কাজের সময় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ (এলজিইডি) দায়িত্ব নিয়োজিত কোন কর্মকতা কাজে উপস্থিত থাকেন না বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে

রুমা উপজেলা সদরে পৌছার ৫কি:মি আগে প্রধান সড়ক থেকে বটতলী পাড়া হয়ে পানতলা ভায়া গালেঙ্গ্যা সংযোগ সড়কে ৬কি:মি রাস্তা নির্মাণ কাজ করছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ (এলজিইডি)। ২০২০-২১ অর্থ বছরে ১২কোটি টাকায় পাওয়া কাজটি যৌথভাবে করছেন ঠিকাদার রতন কান্তি দাশ ও মোজাফ্ফর আহমদ।

সরেজমিনে দেখা যায়, রাস্তায় বালুর বদলে আশপাশের বিভিন্ন পাহাড় থেকে মাটি এনে তা খোয়ার সঙ্গে মিশিয়ে রাস্তায় ব্যবহার করছেন কাজে নিয়োজিত শ্রমিকরা। রাস্তার মাঝখানে স্তরে স্তরে জমাট করে রাখা হয়েছে মাটি গুলো। যদিও বা নীতিমালা অনুযায়ী রাস্তায় প্রথম লেয়ার থেকে শুরু করে খোয়া ও ইট ব্যবহারের সময় বালি ব্যবহারের নির্দেশনা রয়েছে। মাটি ব্যবহারের দৃশ্যটি আরো ফুটে উঠেছে গত কয়েক দিনের বৃষ্টিতে। এছাড়া ১২ফিট রাস্তার দুই ধারে তিন ফিট করে প্রস্থ মাটি ভরাটের কথা থাকলেও ঠিকমতো তা করা হয়নি। বাকী রয়েছে কার্পেটিং, রিটেইনিং ওয়াল, গাইড ওয়াল ও কালভার্ট নির্মাণ কাজ। জনদাবীর গুরুত্বপূর্ণ এ রাস্তার কাজ শুরু থেকেই বিভিন্ন অনিয়ম করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন স্থানীয়রা।

স্থানীয় কয়েকজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান- এই সড়ক দিয়ে পাহাড়ে উৎপাদিত কৃষিপণ্য ট্রাক যোগে পরিবহণ হয়। যার কারনে টেকসই সড়কের প্রয়োজন রয়েছে। কিন্তু যেভাবে রাস্তার কাজে ইট-মাটি ব্যবহার করা হচ্ছে, তা ক’দিন টিকবে প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে। সরেজমিনে কাজ তদারকি দায়িত্বে এলজিইডির কাউকে দেখা যায়নি। এছাড়াও ঠিকাদারের কাজের ধীরগতির কারনে এলাকার মানুষ চলাচলে ভোগান্তিতে পড়েছে।

কাজে অনিয়মের বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে কাজের ঠিকাদার রতন কান্তি দাশ ও মোজাফ্ফর বলেন- কাজটি নিয়ে অনেক ঝামেলায় আছি। এক দিকে করছি, অন্যদিকে ভাঙ্গছে। কোন রকম চালিয়ে যাচ্ছি। রাস্তায় কিছু মাটি আনা হলেও তা ব্যবহার করা হচ্ছে না দাবী করেন ঠিকাদাররা।

রুমা এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলীর দায়িত্বে থাকা তোফাইল আহমদ জানান- খোয়ার সঙ্গে মাটি ব্যবহারের কোন সুযোগ নেই। হয় তো রাস্তার দুই ধারে মাটি দেওয়া হচ্ছে। ইতো মধ্যে কাজের ৫০শতাংশ শেষ হয়েছে। এছাড়া চলমান কাজটি নিয়মিত তদারকি করা হয় বলে দাবী করেন তিনি। এবং যদি রাস্তার কাজের বালি না দিয়ে পাহাড়ের মাটি ব্যবহার করে থাকে তাহলে ঠিকাদারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।