সিবিএন ডেস্ক:
চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমান বন্দর থেকে মহানগরী পর্যন্ত কর্ণফুলী নদীর পাড় লিজ দিয়ে কোনো ধরনের শিল্প কল-কারখানা নির্মাণ করতে দেয়া হবে না বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম।
তিনি বলেন, ‌‘চট্টগ্রামকে দেশের অর্থনীতির প্রাণ ও চট্টগ্রাম শহরকে নিয়ে অবহেলা করার কোনো সুযোগ নেই। চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা নিরসনের লক্ষ্যে চলমান ৯ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প তদারকির জন্য বিভাগীয় কমিশনারকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তিনি চট্টগ্রামের মেয়রসহ সংশ্লিষ্টদের নিয়ে একটি কমিটি গঠন করবেন।’

শনিবার (২৬ জুন) দুপুরে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে চট্টগ্রাম নগরের জলাবদ্ধতা নিরসন, কর্ণফুলী নদীর নাব্যতা বৃদ্ধি, দখল ও দূষণ রোধে গৃহীত কার্যক্রম পর্যালোচনার লক্ষে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বলেন, ‘নদীর পাড়ে এসব অবকাঠামো নির্মাণ করা হলে নদী দখল ও দূষণ বাড়বে। পরিবেশ এবং কর্ণফুলী নদীর স্বকীয়তা ও সৌন্দর্য নষ্ট হবে। যা কোনো অবস্থাতেই করতে দেয়া হবে না। কারণ এই নদীর সাথে চট্টগ্রাম বন্দর ও দেশের অর্থনীতির স্বার্থ জড়িত।’ কর্ণফুলী নদীর দখল ও দূষণের সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেন তিনি।

মো. তাজুল ইসলাম বলেন, ‘চট্টগ্রাম মহানগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মাধ্যমে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে তা শিগগিরই শেষ হবে। আর কাজ শেষ হলে নগরবাসী এর সুফল পাবে। প্রকল্পে কোনো ত্রুটি থাকলে সেটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যদি পাওয়া যায় তাহলে অবশ্যই সংশোধন করা হবে। এজন্যই একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।’

চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতার জন্য নালা-নর্দমা ভরাট, খালে ময়লা আবর্জনা ফেলা এবং মানুষের অসচেতনতা দায়ী উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘যারা এ সমস্ত খাল ও জলাশয় দখল করে অবকাঠামো নির্মাণ করেছেন তাদেরকে সেসব সরিয়ে নিতে হবে। অন্যথায় আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে সতর্ক করেন।’

চট্টগ্রামে পাহাড় কাটা বন্ধ করার জন্য সংশ্লিষ্টদের ব্যবস্থা নিতে আহবান জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতায় পাহাড় রক্ষার উপর জোর নজর দিতে হবে।’

সেবা সংস্থাগুলোর প্রতিনিধিদের উদ্দেশে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বলেন, ‘অহেতুক কেউ কারো উপর দোষারোপ করার মাধ্যমে সরকারের অর্জন ম্লান করার অধিকার কারো নেই।’ তিনি সেবা সংস্থারগুলোর সমন্বয়ের মাধ্যমে নগরীর জলাবদ্ধতাসহ অন্যান্য সমস্যা সমাধানে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন।

তিনি আরও বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চট্টগ্রামের উন্নয়নে যথেষ্ট আন্তরিক। মহানগরীর সার্বিক উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রীর আগ্রহে অনেক প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে যা চলমান আছে। এসব প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে চট্টগ্রাম শহর অত্যাধুনিক শহরে রুপান্তরিত হব।’

মতবিনিময় সভায় মন্ত্রী উপস্থিত সেবা সংস্থার প্রতিনিধিদের কথা শুনেন এবং প্রয়োজনীয় পরামর্শ প্রদান করেন।

বিভাগীয় কমিশনার মো. কামরুল হাসানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী, স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দিন আহমদ, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব কবির বিন আনোয়ার, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এম এ সালাম, ওয়াসার এমডি প্রকৌশলী এ কে এমন ফজলুল্লাহ, সিডিএ’র চেয়ারম্যান জহিরুল আলমসহ বিভিন্ন সেবা সংস্থার প্রতিনিধিরা অংশ নেন।