আবুল কালাম, চট্টগ্রাম :

উন্নয়নকে টেকসই করতে বস্তুগত উন্নয়নের পাশাপাশি মূল্যবোধ, দেশাত্মবোধ ও মমত্ববোধের সমন্বয়ে মানুষের আত্মিক উন্নয়ন প্রয়োজন, বলেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এমপি।

শুক্রবার (২৫ জুন) দুপুরে চট্টগ্রামে হোটেল র‍্যাডিসন ব্লু’র মেজবান হলে রোটারি ইন্টারন্যাশনাল ডিস্ট্রিক্ট ৩২৮২ আয়োজিত কনফারেন্স-২০২১ এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্যমন্ত্রী এসব বলেন।

তিনি বলেন, আমরা এমন একটি রাষ্ট্র রচনা করতে চাই, যেটি বস্তুগত দিক দিয়ে উন্নত হবে এবং একইসাথে মানবিকও হবে। বস্তুগতভাবে উন্নত কিন্তু বাবা-মা’দের বৃদ্ধাশ্রমে যেতে হবে, রাস্তায় দুর্ঘটনায় মানুষ কাতরাবে কিন্তু পাশ দিয়ে যাওয়া কেউ ফিরেও তাকাবেনা, কখন পুলিশ এসে লাশ নিয়ে যাবে এমন ভাববে, সেই উন্নয়ন ও সমাজ আমরা চাইনা।

উক্ত সম্মেলনের আহবায়ক মোহাম্মদ তৈয়বের সভাপতিত্বে রোটারি ইন্টারন্যাশনালের প্রেসিডেন্টের প্রতিনিধি পিডিজি কেএম জয়নুল আবেদীন, জেলা গভর্ণর ড. বেলাল উদ্দিন আহমেদ, রোটারিয়ান ফাতেমা জেবুন্নেছা প্রমুখ অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।

ড. হাছান মাহমুদ প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে মানবতার সেবার ব্রত নিয়ে রোটারি ক্লাবের কাজের প্রশংসা করেন। করোনাপীড়িত বিশ্বের দিকে তাকিয়ে তিনি বলেন, মানুষ অনেক উন্নতি করেছে, কিন্তু করোনা মহামারিতে দেখা যাচ্ছে, মানুষ একটি অদৃশ্য জীবাণুর কাছে কত অসহায়। পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিধর দেশটিও অসহায়, সবচেয়ে দরিদ্র দেশটিও অসহায়।

সেকারণে দেশে দেশে যুদ্ধ বিগ্রহের জন্য অর্থ ব্যয় না করে মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা ও ভবিষ্যতের মহামারি থেকে মানুষকে রক্ষায় মনোযোগ দেয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করে তথ্যমন্ত্রী আক্ষেপ করে বলেন, এখনও পৃথিবীর রাষ্ট্রসমুহ সামরিক ব্যয় কমিয়ে এখাতে যতটুকু ব্যয় প্রয়োজন সেটুকু করছেনা, এটিই বাস্তবতা। করোনা মহামারির মধ্যেও বিশ্বে শরণার্থীর সংখ্যা কয়েক কোটি বেড়েছে। পৃথিবীতে শান্তিপ্রতিষ্ঠা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

সমস্ত প্রতিকূলতার মধ্যেও বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ এবং মাথাপিছু কৃষিজমির পরিমাণ সর্বনিম্ন হবার পরও ঘূর্ণিঝড়, বন্যা, জলোচ্ছ্বাস মোকাবিলা করে বাংলাদেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করে বিশ্ব খাদ্য সংস্থাকেও অবাক করে দিয়েছে, উল্লেখ করেন ড. হাছান মাহমুদ।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ ধান উৎপাদনে পৃথিবীতে তৃতীয়, সবজি ও মিঠাপানির মাছ উৎপাদনে চতুর্থ, আলু উৎপাদনে সপ্তম। অথচ আয়তনের দিক দিয়ে পৃথিবীতে ৯২তম। এটি সম্ভবপর হয়েছে জননেত্রী শেখ হাসিনার সঠিক নেতৃত্ব, কৃষিতে যন্ত্রের ব্যবহার এবং আমাদের কৃষকসহ বিপুল জনগোষ্ঠির পরিশ্রমের কারণে।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ জানান, করোনা মহামারির মধ্যে ২০২০ সালে পৃথিবীতে মাত্র ২০টি দেশে ধ্বনাত্মক জিডিপি প্রবৃদ্ধি হয়েছে। তার মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান তৃতীয়। করোনার মধ্যেও আমাদের মাথাপিছু আয় ২০০ ডলার বৃদ্ধি পেয়েছে। সেটিও সম্ভবপর হয়েছে বঙ্গবন্ধুকন্যার সঠিক নেতৃত্ব ও সম্মিলিত প্রচেষ্টার কারণে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একশ’টি অর্থনৈতিক অঞ্চল তৈরীর ঘোষণা দিয়েছেন। চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে দেশের সর্ববৃহৎ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার কাজ চলছে, উল্লেখ করেন তথ্যমন্ত্রী।