বলরাম দাশ অনুপম :
দীর্ঘ আড়াই মাস পর অবশেষে খুলে কক্সবাজারের হোটেল-মোটেল ও গেষ্ট হাউস। বৃহস্পতিবার (২৪ জুন) থেকে শর্ত সাপেক্ষে হোটেল-মোটেল খোলার নির্দেশ দেন জেলা প্রশাসন। তবে জরুরী প্রয়োজন ছাড়া কেউই হোটেলে রুম বুকিং দিতে পারবেন না। পাশাপাশি বন্ধ থাকবে সমুদ্র সৈকতসহ জেলার সকল পর্যটন কেন্দ্র। করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হওয়ার পরে চলতি বছরের ৫ এপ্রিল থেকে বন্ধ করে দেয়া হয় জেলার সকল পর্যটন কেন্দ্র ও হোটেল মোটেল। এতে চরম আর্থিক ক্ষতির সম্মুখিন হয় পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়িরা।
এদিকে বৃহস্পতিবার থেকে হোটেল মোটেল খুলে দেওয়ার খবরে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকা হোটেলে আসবাবপত্র ইতোমধ্য পরিস্কার করেছেন হোটেল ব্যবসায়িরা। অনেক কর্মচারীকে বিনাবেতনে ছুটি দিলেও আবার তাদের ডেকে আনা হয়েছে। তবে হোটেল খুলে দিলেও পর্যটন কেন্দ্র বন্ধ থাকায় গ্রাহক পাবেনা বলে ধারণা করছেন সবাই।
আলাপ কালে হোটেল ব্যবসায়ি নুরুল আবছার জানান, কক্সবাজারে মানুষ বেড়াতে আসে সমুদ্র সৈকত দেখার জন্য, একটু পরিবারকে নিয়ে নিরিবিলি সময় কাটানোর জন্য, এখনে হোটেল খুলে দিলেও পর্যটন কেন্দ্র বন্ধ থাকায় কোন রুম ভাড়া হওয়ার সম্ভবনা নাই। তবুও আমার প্রস্তুতি নিচ্ছি কারণ আশা করছি যে কোন সময় পর্যটন কেন্দ্রও খুলে দিবে সরকার। কক্সবাজার হোটেল মোটেল অফিসার্স এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কলিম উল্লাহ জানান, করোনা পরিস্থিতিকে সঙ্গী করেই জীবন যাপন করতে হবে এই কথা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নিজে বলেছেন। করোনা ভাইরাস যেহেতু একেবারে দেশ থেকে বা পৃথিবী থেকে বিদায় নেবে না তাই প্রতিরোধ মূলক ব্যবস্থা নিয়ে জীবন যাপনে অভ্যস্থ হতে হবে। কক্সবাজারের মানুষের প্রধান আয়ের উৎস পর্যটন দ্বিতীয় মৎস্য শিল্প বর্তমানে দুটিই বন্ধ তাহলে স্থানীয় মানুষ কি নিয়ে বাঁচবে। কিভাবে জীবিকা নির্বাহ করবে ? সেটা সরকারকে ঠিক করে দিতে হবে।
তিনি জানান, বর্তমানে অনেক দেশে লকডাউন তুলে দিয়ে বিনোদন কেন্দ্র গুলো চালু করেছে কারণ মানুষের মানসিক মনোবল শক্ত রাখার একমাত্র মাধ্যম বিনোদন। তাই আমরা মনে করি স্বাস্থ্যবিধি মেনে কক্সবাজারের পর্যটন কেন্দ্রগুলো খুলে দেওয়া দরকার। কক্সবাজার জেলা প্রশাসক কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে ২৪ জুন থেকে হোটেল মোটেল জোন খোলার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হলেও সেখানে বেশ কিছু সর্ত থাকবে। যেমন হোটেলে ৫০% রুম ভাড়া দেওয়া যাবে। হোটেলের রেস্টুরেন্ট খোলা যাবে না। সুইমিংপুল খোলা যাবে না, বড় কোন আয়োজন করা যাবেনা। হোটেলের গেইটে সার্বক্ষনিক সুরক্ষা সামগ্রি সহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা থাকতে হবে। এছাড়াও আরো বেশ কিছু নির্দেশনা চুডান্ত হচ্ছে। কক্সবাজার টূরিষ্ট পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মহিউদ্দিন জানান, সরকার কখনো চাইবে না দেশের আর্থিক প্রতিস্টান গুলো বন্ধ থাকুক। সরকারের দায়িত্ব হচ্ছে জনগনের স্বার্থদেখা যেহেতু সারা পৃথীবিতে করোনা ভাইরাসের কারণে কিভাবে মৃত্যুর মিছিল বেড়েছে তা আমরা দেখেছি। তাই আগে জীবনের নিরাপত্তা তার পর অন্যকিছু সেজন্য সরকার লকডাউন দিয়ে মানুষের জীবন রক্ষার জন্য কাজ করেছে। আর হোটেল খোলার বিষয়ে সরকার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে সেটাওভাল, আমরা সরকারের যে নির্দেশনা আসে সেটা বাস্তবায়নের জন্য সব সময় প্রস্তুত আছি।