প্রেস বিজ্ঞপ্তিঃ
দ্বীপ উপজেলা মহেশখালীর ধলঘাটা ও মাতারবাড়ীতে উন্নয়ন বঞ্চনা, বেকারত্ব, কুহেলিয়া নদী সংরক্ষণ, সড়ক সংস্কার, কয়লা ভিত্তিক বিদুৎকেন্দ্র, টেকসই বেড়িবাঁধ, শ্রমিকদের নূন্যতম মজুরি নির্ধারণ, জমি অধিগ্রহণে ন্যায্য মুল্য ইত্যাদি দাবিতে এবং মহেশখালী উপজেলার সার্বিক উন্নয়নের লক্ষ্যে উপজেলার সামাজিক সংগঠন সমূহের নেটওয়ার্ক মহেশখালী উন্নয়ন জোটের প্রথম প্রস্তুতি সভা গতকাল ভার্চুয়াল মাধ্যম জুমে সম্পন্ন হয়েছে।

ধলঘাটার জেষ্ঠ্য নাগরিক ও বন্ধু ফাউন্ডেশনের সভাপতি ইসমত উল্লাহ এর সভাপতিত্বে ও সিইএইচআরডিএফ এর ভারপ্রাপ্ত ডিভিশন সমন্বয়ক(তৃণমূল) আব্দুল মান্নান রানা’র সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সভায় বক্তব্য রাখেন ২২ টি সংগঠনের প্রতিনিধিবৃন্দ।

সিইএইচআরডিএফ প্রেসিডেন্ট ও প্রধান নির্বাহী মোঃ ইলিয়াছ মিয়া বলেন, কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র আজ সারা বিশ্ব থেকে ওঠে যাচ্ছে। কিন্তু আমাদের দেশে নতুন করে হচ্ছে। এই সংকটের ফলে জলবায়ু পরিবর্তন অভিঘাত মোকাবেলায় সরকারকে কয়লাবিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ করার জন্য আহান জানান।

মোহাম্মদীয়া ইসলামীয়া পাঠাগারের সভাপতি রায়হান উদ্দিন জমির ন্যায্য মূল্যের জন্য জেলা প্রশাসককে স্মারকলিপি দেওয়ার জন্য আহবান জানান।

এতে নাহিদুল ইসলাম নাহিদ গভীরসমুদ্র বন্দরে অধিগ্রহণকৃত জমির ন্যায্য মুল্য পাওয়ার জন্য ৮ ধারা নোটিশ জারির মধ্যবর্তী সময়ে সরকারের পলিসি মেকারদের সাথে কথা বলার জন্য মতামত দেন।

দি এসেন্ডেন্ট স্টুডেন্টস ফোরাম অব ধলঘাটার প্রেসিডেন্ট এরশাদ উল্লাহ বলেন,একটি নির্দিষ্ট প্লাটফর্মে যদি তরুণ একটিভিস্টরা সমাজ রূপান্তরের জন্য কাজ করে তবে এটি সমগ্র রাষ্ট্রের জন্যই কল্যাণ বয়ে আনে।

জাগো বনজামিরা সমাজ কল্যাণ পরিষদের সভাপতি, এইচ আই মোস্তাহিদ বলেন,মাঠ পর্যায়ে জন আন্দোলন তৎপর করার মধ্যদিয়ে আমাদের মৌলিক অধিকার সমূহ আদায় করতে হবে।

স্বপ্নছোয়া ফাউন্ডেশনের উপদেষ্টা রফিকুল ইসলাম বলেন,,জমির মালিকদের সাথে মহেশখালী উন্নয়ন জোট প্লাটফর্ম সরাসরি কথা বলে তড়িৎগতিতে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে তা মাঠ পর্যায়ে উজ্জীবিত করে তোলতে হবে।এবং সরকারের উর্ধ্বতন মহলের সাথে আমরা দ্রুত এই ধলঘাটার সামগ্রিক সংকট নিয়ে পলেসি লেভেল থেকে কথা বলব।পাশাপাশি তিনি মানববন্ধন ও গণস্বাক্ষর অভিযানেরও মতামত দেন।

স্বপ্নছোয়া ফাউন্ডেশনের নির্বাহি পরিচালক মোরশেদ আলী সোহাগ বলেন, ধলঘাটার মানুষের ভবিষ্যত রক্ষায় তরুণদের এগিয়ে আসতে হবে। নাগরিক সমাজকে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য তিনি জোর দেন। তিনি আরো বলেন, রাজনৈতিক ট্যাগ আমাদের পথচলার জন্য একটি সংকট। সকলের উচিৎ রাজনৈতিক স্বার্থের উর্ধ্বে ওঠে এই অবহেলিত জনপদের জনসংকটের জন্য কাজ করতে হবে।

এতে সভাপতির বক্তব্যে ইসমত উল্লাহ বলেন, আমরা আমাদের জমি হারিয়ে ফেলছি। আমাদের পরবর্তী প্রজন্মকে এক টুকরো জায়গা আমরা দিয়ে যেতে পারব না।আমরা ধলঘাটাবাসী চিরকাল বঞ্চিতই হয়ে আসছি।অথচ কত ক্ষমতার রদবদল হয়েছে। কিন্তু এই অঞ্চলের সাধারণ মানুষের ভাগ্যের কোনো পরিবর্তন হয়নি।তাই আমাদের সকলের ঐক্যবদ্ধ হয়ে দাবী আদায়ের জন্য যৌক্তিক আন্দোলন গড়ে তোলার বিকল্প নেই।

সিইএইচআরডিএফ ভারপ্রাপ্ত ডিভিশন সমন্বয়ক(সমন্বয় ), আব্দুল মান্নান রানা বলেন, আমরা একটি টেকসই বেড়িবাঁধের জন্য কষ্ট পাচ্ছি অন্তত ৫০ বছর ধরে। ধলঘাটার বিশ হাজার মানুষের জন্য টেকসই কোনো সড়কব্যবস্থা নেই,নদী পারাপারের জন্য নেই কোনো উপযুক্ত জেটিঘাট। কালারমারছড়ার প্রান্তে ১ একটি সুরু রাস্তা দিয়ে ভীষণ কষ্টে চলাচল করে অন্তত ১৫ হাজার মানুষ।ধলঘাটা নামক এই ইউনিয়নের মানুষ বহু সংকটের মধ্যদিয়ে তাদের জীবন পরিক্রমা পার করছে। মেগা প্রকল্প গুলোতে স্থানীয়দের কোনো চাকরীর সুযোগ নেই। ফলে, এলাকার তরুণ জনগোষ্ঠীর একতৃতীয়াংশই বেকার।অথচ,এই জনগোষ্ঠীর আর্থসামাজিক উন্নয়নের কথায় সরকারের আগে ভাবা উচিৎ ছিল।বক্তব্যের একপর্যায়ে তিনি বলেন,,আমরা তরুণরা মাতৃভূমির জন্য অধিকার আদায়ের জন্য দৃঢ় প্রত্যয়ে লড়ে যাব।

সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন এস্তাখাব উদ্দিন, এইচ আই মোস্তাহিদ, সালাহ উদ্দিন, সাখাওয়াত হোসেন, সাঈদ আহমেদ, সেলিম উল্লাহ, শোয়াইবুল ইসলাম ছোটন, এম আই মানিক, আতিক উল্লাহ প্রমূখ।