রামু প্রতিনিধি:
রামুর কলেজ ছাত্রীকে বিয়ের প্রলোভনে দীর্ঘদিন ধর্ষণ এবং অশ্লীল ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়ার অভিযোগে চকরিয়ার যুবককে আটক করেছে পুলিশ। আটককৃত তাহমিদ খান মাহিন চকরিয়া উপজেলার লইক্ষ্যারচর শিকলঘাট এলাকার মৃত মাসুদ খানের ছেলে। রবিবার (১৩ জুন) ভোরে রামু থানার এসআই কামরুলের নেতৃত্বে রামু ও চকরিয়া থানা পুলিশের বিশেষ টিম গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে ওই যুবককে আটক করেন। এ ঘটনায় আটক যুবকের বিরুদ্ধে ইতিপূর্বে রামু থানায় মামলা করেন ধর্ষণের শিকার কলেজ ছাত্রী।
মামলার এজাহার ও প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে-ধর্ষণের কলেজ ছাত্রীর বড় বোনের বিয়ে হয় চকরিয়ার লইক্ষ্যারচর শিকলঘাট এলাকার এক ব্যক্তির সাথে। প্রায় ২ বছর পূর্বে ওই বাড়িতে বেড়াতে গেলে একই এলাকার যুবক তাহমিদ খান মাহিনের সাথে পরিচয় হয়। পরে ছাত্রীটি চট্টগ্রামের একটি সরকারি কলেজে পড়াশোনার জন্য যান। সেখানে আসা-যাওয়ার সময় তাহমিদ মাহিন ছাত্রীটিকে বিয়ে করা সহ নানা প্রলোভনে প্রেমের ফাঁদে ফেলে। এক পর্যায়ে তাহমিদ রামুতে ছাত্রীটির বাড়িতে আসা-যাওয়া শুরু করে। ২ বছর পূর্বে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে নিজের বাড়িতে তাহমিদের কাছে ধর্ষিত হন ছাত্রীটি।

পরবর্তীতের বাড়িতে এবং বিভিন্নস্থানে নিয়েও তাহমিদ জোরপূর্বক ছাত্রীটিকে ধর্ষণ করে। এক পর্যায়ে আশ^াস অনুযায়ি বিয়ে করার কথা জানালে তাহমিদ ছাত্রীটিকে ইতিপূর্বে মেলামেশাকালে ধারণকৃত ছবি দেখিয়ে হুমকী-ধমকি দেয়। পরবর্তীতে বিয়ের জন্য ছাত্রীটি বারবার অনুরোধ জানালে এক পর্যায়ে তাহমিদ গোপনে ধারণকৃত অশ্লীল ছবি ভুয়া নামে আইডি খুলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়। এমনকি ছাত্রীটিকে বিয়ে করার আশ^াস এবং ধর্ষণের কথাও অস্বীকার করে সে। এতে নিরুপায় হয়ে ২০২০ সালের ১১ জুলাই তাহমিদ খান মাহিনকে অভিযুক্ত করে রামু থানায় মামলা দায়ের করেন ধর্ষণের শিকার ছাত্রী নিজে। ওই সময় রামু থানার ওসি আবুল খায়ের ২০০০ সনের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন এবং পর্ণোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনের ধারায় ছাত্রীর অভিযোগ নিয়মিত মামলা (নং ২১) হিসেবে রুজু করেন।

হয়রানির শিকার ছাত্রীর পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন-দীর্ঘদিন পর হলেও ধর্ষণকারি আটক হওয়ায় তারা সন্তোষ্ট। পুলিশ ও প্রশাসনের কাছে তারা এ ঘটনার ন্যায় বিচার নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন।

রামু থানার নবাগত অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আনোয়ারুল হোসাইন জানিয়েছেন-আসামী দীর্ঘদিন পলাতক ছিলো। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে চকরিয়া থানা পুলিশের সহযোগিতায় ধর্ষনে অভিযুক্ত তাহমিদ খান মাহিনকে আটক করা হয়েছে। রবিবার তাকে কোর্ট হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। পাশাপাশি তাকে জিজ্ঞাষাবাদের জন্য বিজ্ঞ আদালতে রিমান্ড চেয়ে আবেদন করা হয়েছে।