সিবিএন ডেস্ক:
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী কলকাতার নিউ টাউনে পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে দুই ব্যক্তি নিহত হয়েছে। ওই এলাকার সাপুরজি আবাসনে পুলিশের বিশেষ দল এসটিএফ-এর চালানো এক অভিযানে তাদের মৃত্যু হয়। নিহতরা পাঞ্জাবের বাসিন্দা বলে জানা গেছে। তাদের ধরিয়ে দিতে পাঞ্জাবে পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছিলো। এছাড়া অভিযানের সময় কলকাতা পুলিশের এক কর্মকর্তাও গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, নিউ টাউনের সাপুরজি আবাসনে দুই অপরাধী লুকিয়ে থাকার তথ্য পেয়ে বুধবার দুপুর নাগাদ অভিযান চালায় এসটিএফ। অপরাধীরা বুঝে ওঠার আগেই গোটা এলাকা ঘিরে ফেলা হয়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে অপরাধীরা গুলি ছুঁড়লে পাল্টা গুলি ছোঁড়ে পুলিশ।

পরে জশপ্রীত সিং ও জয়পাল ভুল্লর নামে দুই ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করা হয়। অপরাধীরা কতোদিন ধরে এই আবাসিক এলাকায় লুকিয়ে ছিলো তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলেও জানিয়েছে পুলিশ।

ঘটনার সময়ের যে ভিডিও ফুটেজ হাতে এসেছে, তাতে দেখা গেছে বিকেল সাড়ে তিনটা নাগাদ এসটিএস কর্মকর্তারা পুরো আবাসন ঘিরে ফেলে এই অভিযান চালায়। কয়েকজন পুলিশকর্মীকে দৌড়াদৌড়ি করতে দেখা গিয়েছে। অপরাধীদের গুলিতে আহত হয়েছে এসটিএফ অফিসার কার্ত্তিক চন্দ্র ঘোষ। তার বুকের বাঁ পাশ দিয়ে গুলি ঢুকে পিঠ ফুঁড়ে বেরিয়েছে। তাকে বাইপাসের ধারে এক নার্সিংহোমে ভর্তি করা হয়েছে।

কমিশনারেট সূত্রে খবর, সিউরি থেকে সূত্রের মারফৎ খবর আসে বিহার থেকে বাংলায় অস্ত্র-বিস্ফোরক পাচার হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সেই খবরের পর তল্লাশি শুরু হতে আটক হয় একটা ট্রাক। বাজেয়াপ্ত হয় ৭ এমএম পিস্তল, ম্যাগাজিন এবং ২০ কেজি বিস্ফোরক। সেই ট্রাকের চালককে জিজ্ঞাসাবাদ করে এই গ্যাংস্টারদের খবর পায় রাজ্য পুলিশের এসটিএফ।

পাঞ্জাব পুলিশের থেকে কলকাতা পুলিশ জানতে পেরেছে, নিহত জয়পাল ভুল্লার আদতে পাঞ্জাবের মোস্ট ওয়ান্টেড গ্যাংস্টার। তিন সঙ্গীকে নিয়ে লুধিয়ানার জাগরাও জেলার অপরাধ তদন্তকারী সংস্থার দুই পুলিশ কর্মী-কে হত্যা করে জয়পাল ওরফে জসপ্রীত। এরপরই থেকেই ফেরার ছিল সে। পুলিশ কর্মীকে খুন করার পাশাপাশি তাদের বিরুদ্ধে ৪০টির বেশি মামলা রয়েছে। ওই দুই জনের সম্পর্কে খবর দিতে পারলে একজনের নামে ১০ লাখ এবং অন্য জনের নামে ৫ লাখ টাকার পুরস্কারও ঘোষণা করেছিল পাঞ্জাব সরকার।

সন্ধ্যা পৌনে ছটা নাগাদ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন রাজারহাট নিউ টাউন এর বিধায়ক তাপস চট্টোপাধ্যায়। তাপস বলেন, যারা মারা গেল তাদের সাথে জঙ্গী যোগ আছে কিনা সেটা পুলিশ খতিয়ে দেখছে। শুধু এই আবাসনের নিরাপত্তা নয় বিধান নগর কর্পোরেশন এলাকায় অন্যান্য আবাসনের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় জোর দেওয়া হবে।