এম. কলিম উল্লাহ:
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ কক্সবাজার জেলা সভাপতি মাওলানা মুহাম্মদ আলী বলেছেন, মহামারি করোনায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দেশের শিক্ষাব্যবস্থা। শিক্ষার সঙ্গে জড়িত সবকিছুতেই বিপর্যয় নেমে এসেছে। লাগাতার ১৬ মাস ধরে স্কুল, কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় পঙ্গু প্রজন্ম গড়ে উঠছে।

সবধরণের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার দাবিতে বৃহস্পতিবার (৩ জুন) সকাল ১১টায় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ কক্সবাজার জেলা শাখার মানববন্ধনে মাওলানা মুহাম্মদ আলী এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, মাঝখানে কিছুদিন কওমি মাদরাসা চালু থাকলেও আবারো তা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। আলিয়া মাদরাসাও খোলেনি। স্কুল, কলেজ ও আলিয়া মাদরাসার সকল ধরণের পরীক্ষা বন্ধ।

কেন্দ্রীয় কর্মসূচির আলোকে কক্সবাজারের মানববন্ধন করেছে সংগঠনটি।

সভায় বলা হয়, গত বছরের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের অটো পাস দেয়া হয়েছে। এ বছরের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা এখনো হয়নি। পরীক্ষা হবে কি না, তাও স্পষ্ট নয়। শিক্ষার্থীরা পড়ার টেবিল ছেড়ে এবারও অটো পাসের অপেক্ষায়।

যার কারণে দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম ধ্বংসের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। জাতির মেরুদণ্ড ভেঙ্গে একটি পঙ্গু প্রজন্ম গড়ে উঠছে। ক্যাম্পাস বন্ধ থাকার কারণে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা ফ্রী ফায়ার, পাবজি ও মাদকসহ নানান অবক্ষয়মূলক কাজে জড়িয়ে পড়ছে। তাই অবিলম্বে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দিতে হবে।

নেতৃবৃন্দ বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার কারণে দেশের অধিকাংশ শিক্ষক সমাজ রাষ্ট্রীয় সুযোগ-সুবিধা হতে বঞ্চিত। বিশেষ করে কওমী মাদ্রাসা, নন এমপিও শিক্ষক, কিন্ডার গার্ডেন এমনকি এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা পর্যন্ত আজকে মানবেতর জীবন যাপন করছে। দীর্ঘকাল যাবৎ এ অবস্থা চলতে দেয়া যায় না। তাই অনতিবিলম্বে সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিতে হবে।

জেলা সভাপতি মাওলানা মোহাম্মদ আলীর সভাপতিত্বে মানববন্ধনে নেতৃবৃন্দ বাংলাদেশের পাসপোর্ট থেকে “except Israel” শব্দ দুটি বাদ দেয়ার তীব্র নিন্দা জানান এবং পুনরায় এ শব্দ দুটি পাসপোর্টে সংযোজন করার জন্য সরকারের প্রতি দাবী করেন। পাশাপাশি নেতৃবৃন্দ যে সমস্ত নিরাপরাধ আলেম-ওলামা, ছাত্র জনতা গ্রেফতারের মাধ্যমে জেলখানায় বন্দি আছে তাদের মুক্তি দাবি করেন।

জেলা সেক্রেটারি মাওলানা মুহাম্মদ শোয়াইব এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- জেলা জয়েন্ট সেক্রেটারি অধ্যক্ষ মাওলানা এআরএম ফরিদুল আলম। সাংগঠনিক সম্পাদক প্রভাষক রাশেদ আনোয়ার, অর্থ সম্পাদক মাওলানা হাফেজ ইসমাইল জাফর, পৌর সেক্রেটারি মাওলানা কামাল উদ্দিন, জাতীয় শিক্ষক ফোরামের জেলা সভাপতি মাওলানা আমিরুল ইসলাম, বামুকের জেলা সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ আব্দুর রহিম, ইসলামী যুব আন্দোলনের জেলা সভাপতি মাওলানা হাফেজ শফিউল আলম, ইসলামী শ্রমিক আন্দোলনের জেলা সহ-সভাপতি মাওলানা তকি উদ্দিন।

অবিলম্বে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার দাবীতে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে কক্সবাজার জেলার মানববন্ধনে অন্যান্য নেতৃবৃন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বামুকের জেলা ছদর আলহাজ্ব নুরুল আমিন, নায়েবে ছদর আলহাজ্ব বদিউল আলম, ইসলামী শ্রমিক আন্দোলনের জেলা সভাপতি আলহাজ্ব হাবিবুর রহমান কন্ট্রাকটার, ইসলামী আন্দোলনের জেলা প্রচার সম্পাদক মাওলানা সেলিম উদ্দিন, আন্দোলনের জেলা কৃষি ও শ্রম বিষয়ক সম্পাদক আলহাজ্ব আবদুর রউফ লাভলু, শ্রমিক আন্দোলনের জেলা সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আনোয়ার হোসাইন, যুব আন্দোলনের জেলা সাধারণ সম্পাদক মাওলানা নুরুল ইসলাম, ছাত্র আন্দোলনের জেলা সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ কায়সারসহ ইসলামী আন্দোলন ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।