এ কে এম ইকবাল ফারুক, চকরিয়া
কক্সবাজারের চকরিয়ায় বসতভিটার জমি জবরদখলে বাঁধা দেয়ায় স্বামী-স্ত্রী ও সন্তানসহ একই পরিবারের তিন সদস্যকে কুপিয়ে জখম করেছে দুর্বৃত্তরা। ঘটনার পরপরই স্থানীয় লোকজন গুরুতর আহত তিনজনকে প্রথমে চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। সেখানে তাদের অবস্থার অবনতি ঘটলে হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদেরকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে রেফার করেন। বর্তমানে তারা চমেক হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন রয়েছেন। গত ২ জুন সকালে উপজেলার বরইতলী ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের মাইজপাড়া এলাকায় সংগঠিত এ ঘটনায় জড়িত চারজনের নাম উল্লেখ করে ভূক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে বৃহস্পতিবার (৩ জুন) চকরিয়া থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

 

দুর্বৃত্তদের হামলায় আহতরা হলেন- বরইতলী ইউনিয়নের মাইজপাড়া গ্রামের মৃত আবদুর রহমানের ছেলে মো. নেজাম উদ্দিন (৪৬) তার স্ত্রী নাসরিন সুলতানা (৩০) ও ছেলে ছালেকুর রহমান (১৬)। হামলার সময় দূর্বৃত্তরা দা, লোহার রড়, কিরিচ ও লাঠি নিয়ে প্রতিপক্ষের উপর বেপরোয়া হামলা চালায়।

 

থানায় দায়ের করা অভিযোগে মামলার বাদি নাসরিন সোলতানা দাবী করেন, আমার স্বামীর পৈত্রিক বসতভিটার জমি নিয়ে পাশর্^বর্তী নাছির উদ্দিন গংয়ের মধ্যে বিরোধ সৃষ্ঠি হলে বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়ভাবে অনেকবার শালিশী বৈঠক হয়। কিন্তু আসামীরা এলাকার অত্যন্ত খারাপ প্রকৃতির লোক হওয়ায় শালিশী বৈঠকের সিদ্ধান্ত অমান্য করে জোর পূর্বক আমার স্বামীর পৈত্রিক বসত ভিটার জমি জবর দখলে নেয়ার হুমকি দিতে থাকেন। ঘটনার দিন আসামীরা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে ধারালো দা, কিরিচ, লোহার রড় ও হাতুড়ি নিয়ে আমার স্বামীর পৈত্রিক বসতভিঠায় জোরপূর্বক ঢুকে পড়ে। এ সময় তারা আমাদেরকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে। এক পর্যায়ে আসামীরা বসতভিটার জমি জরব দখলে নিতে চাইলে আমি, আমার স্বামী ও সন্তান মিলে তাদের বাঁধা দেয়ার চেষ্ঠা করি। এ সময় মামলার প্রধান আসামী নাছির উদ্দিনের নেতৃত্বে তার ছেলে ওয়াহিদুর রহমান হিরু, মোহাম্মদ পারভেজ ও তাদের মা খালেদা বেগম তাদের হাতে থাকা অস্ত্রসন্ত্র নিয়ে আমাদের উপর বেপরোয়া হামলা চালায়। এ সময় তারা ধারালো দা, কিরিচ দিয়ে আমাদেরকে এলাপাতাড়ি কুপিয়ে আহত করার পাশাপাশি লোহার রড় ও হাতুড়ি নিয়ে বেদড়ক পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। পরে তারা আমার স্বামীর কাছ থেকে নগদ টাকা, আমার কাছ থেকে স্বর্ণের চেইন ও আমার ছেলের ব্যবহৃত মোবাইল সেটসহ লক্ষাধিক টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যায়।

 

ঘটনার পরপরই স্থানীয় লোকজন গুরুতর আহত অবস্থায় আমাদের তিনজনকে উদ্ধার করে প্রথমে চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। সেখানে অবস্থার অবনতি ঘটলে হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক আমাদেরকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে রেফার করেন। বর্তমানে আমরা চমেক হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন রয়েছি। চিকিৎসার কাজে ব্যস্ত থাকায় থানায় লিখিত অভিযোগ দায়েরে বিলম্ব হয় বলেও দাবী করেন থানায় দায়ের করা অভিযোগের বাদি নাছরিন সোলতানা।

 

চকরিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আরশরাফ হোসেন বলেন, বিষয়টির ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ব্যাপারে আইনগত প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।