নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
কক্সবাজার সদরের খুরুশকুলের তেতৈয়া রফিকেরঘোনায় ব্যক্তি মালিকানাধীন জমিতে নির্মিত অবৈধ স্থাপনা, ঘরবাড়ি দুইদিনের মধ্যে নিজ দায়িত্বে সরিয়ে নিতে নির্দেশ দিয়েছেন কক্সবাজার সদর সহকারী কমিশনার (ভূমি) নু-এমং মারমা মং। অন্যথায় দখলদারদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে জানিয়েছেন।

মঙ্গলবার (১ জুন) নু-এমং মারমা মং এর নেতৃত্বে একটি টিম ঘটনাস্থলে গিয়েই এই নির্দেশ দেন। এ সময় তিনি পরের জমিতে কেন ঘরবাড়ি করেছে? জানতে চান। যার কোন সদুত্তর দিতে পরেনি দখলবাজরা।

চট্টগ্রাম আদালতের সিনিয়র সহকারী জজ খুরুশকুরের বাসিন্দা কামাল উদ্দীনের পরিবারের খতিয়ানভুক্ত কৃষিজমিতে শতাধিক ঝুপড়িঘর নির্মাণ করে একটি দখলবাজচক্র। এ বিষয়ে উচ্চ আদালতের নির্দেশনা রয়েছে। সবশেষে জেলা প্রশাসনের অফিসিয়াল আদেশে প্রকৃত মালিকের নিকট জমির দখল বুঝিয়ে দিতে ঘটনাস্থলে যান সদর এসিল্যান্ড নু-এমং মারমা মং।

এ সময় তিনি বলেন, ট্রেসম্যাপ অনুযায়ী পরিমাপ করে বিচারক পরিবারের জমি দখলের সত্যতা পেয়েছি। অবৈধ বসতি সরাতে দুইদিনের সময় বেঁধে দিয়েছি। নির্ধারিত সময়ে স্থাপনা না সরালে উচ্ছেদের পাশাপাশি আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

গত ১১ এপ্রিল রাতের অন্ধকারে বনবিভাগ ও বিচারক পরিবারের কৃষিজমিতে ঝুপড়ি ঘর নির্মাণ করে ‘মুজিব নগর’ নাম দেয় চিহ্নিত ভূমিদস্যুচক্র।

দখলদারিত্ব নিরাপদ রাখতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বঙ্গবন্ধুর দৌহিত্র সজীব ওয়াজেদ জয় কক্সবাজার-৩ (সদর-রামু) আসনের সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌরমেয়র মুজিবুর রহমানের ছবি ব্যবহার করে ব্যানার টাঙিয়ে দেওয়া হয়। ব্যানারে লেখা হয় ‘মুজিববর্ষের অঙ্গীকার, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার’।

এ ঘটনায় গত ২০ এপ্রিল কক্সবাজার মডেল থানায় মামলা করেন জমির মালিক রফিক আহমদ।

এজাহারভুক্ত অন্যতম তিন আসামি আওয়ামী লীগ নেতা মো. কামাল উদ্দিন ওরফে পোস্টার কামাল (৪০), শেখ কামাল মেম্বার (৩৮) ও আবু বক্কর ছিদ্দিক (৪১)কে ২৭ এপ্রিল ঢাকার একটি আবাসিক হোটেল থেকে গ্রেফতার করে গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।

এদিকে, দখলদাররা ঝুপড়িঘর ও দখল করা জমির ভাগবাটোয়ারা নিয়ে দুই গ্রুপে বিভক্ত হয়ে পড়ে। সম্প্রতি দুই গ্রুপের মধ্যে দুই দফা গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। এসময় একটি পক্ষ ভাগ কম পাওয়ায় ক্ষোভে অর্ধশতাধিক ঝুপড়ি ঘরে অগ্নিসংযোগ করে।

অগ্নিংযোগের পর দখলদাররা বিচারক পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে মামলা দেয়ার চেষ্টা করে। ভাড়াটে লোক দিয়ে বিক্ষোভ, মানববন্ধন করে বিচারক পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বিষোদগার, চরিত্রহননের চেষ্টাসহ বিভিন্ন কৌশলে অবৈধ দখলদারিত্ব ধরে রাখার চেষ্টায় লিপ্ত হয়। কিন্তু বিভিন্ন গণমাধ্যম ও প্রশাসনের সরব ভূমিকায় শেষপর্যন্ত দখলদাররা সুবিধা করতে পারেনি।

প্রশাসনের ভূমিকার জন্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়েছে জমির প্রকৃত মালিক ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা।