বিশেষ প্রতিবেদক:

কক্সবাজারের অন্যতম ঐতিহ্যবাহী বাঁকখালীর শাখা নদী সামরাই নামক খালটি অবৈধ দখলদার কতৃক হয়ে যাচ্ছে। নদী মাতৃকার এই দেশে ছোট বড় নদ- নদী, খাল, জলাশয় ভরাট করে দখলের পায়তারা করে আসছে কিছু নদী দখলকারী নব্য রাজাকার।

এমতাবস্থায় জেলার গুরুত্বপূর্ণ সামরাই খালটি অবৈধভাবে দখল হয়ে যাওয়ায় দখলদারদের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন বাংলাদেশ নদী পরিব্রাজক দল, কক্সবাজার জেলা শাখার সভাপতি, কক্সবাজার জেলা দায়রা জজ আদালতের তারুণ্যনির্ভর সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট আবু হেনা মোস্তফা কামাল।

সোমবার সকালে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্র্রেট কক্সবাজার আদালতে মামলাটি করেন কক্সবাজারের পরিবেশবাদি এ আইনজীবী। অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ আবু সুফিয়ান বিষয়টি আমলে নিয়ে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন কক্সবাজার সদরের সহকারী কমিশনার (ভূমি) কে।

অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালত (ভাচ্যুয়ালে) দায়েরকৃত মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে ৩ জন ভূমি দখলকারীদের বিরুদ্ধে। অভিযুক্তরা হলেন, পৌরসভার সিকদার পাড়া এলাকার মৃত নগেন্দ্র মল্লিকের পুত্র সুভাষ মল্লিক ও তপন মল্লিক এবং বাবুল মল্লিকের স্ত্রী নিতা মল্লিক।

মামলার বিবরণী মতে, কক্সবাজার পৌরসভার অন্যতম খাল সামরাই ঝিলংজা মৌজায় সরকারের ১নং খাস খতিয়ানের অন্তর্ভূক্ত বিএস দাগ নং-৬৪৫২ ও বিএস-৬৫৩৬, বিএস-৬৫৭৩ এলাকার উপরোক্ত দখলকারীবৃন্দ দেয়াল নির্মাণ করে ও রাস্তা দখল করে খালের নাব্যতা নষ্ট ও চলাচলের পথ বাধাগ্রস্ত করেছে। এই বিষয়ে ফৌজদারী কার্যবিধি-১৩৩ ধারামতে অভিযোগ দায়ের করেন।

এব্যাপারে মামলার বাদি অ্যাডভোকেট আবু হেনা মোস্তফা কামাল বলেন, হাইকোর্ট নদীকে জীবন্ত সত্তা হিসেবে ঘোষণা দিয়েছেন। নদীর দখলকারীরা নদীর সেই সত্তা অস্বীকার করছেন। আমরা তাদের উচ্ছেদ চাই।

নদী নিয়ে কাজ করা বাঁকখালী বাঁচাও আন্দোলনের ভাইস প্রেসিডেন্ট কক্সবাজার সাংবাদিক কোষ প্রণেতা সাংবাদিক আজাদ মনসুর বলেছেন, নদী, খাল, জলাশয় মায়ের জরায়ু। নদী দখলবাজদের নব্য রাজাকার বলেছেন সরকার। কোন নদী দখলবাজদের নির্বাচনে অংশ নিতে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। শুধুমাত্র নদীকে নিয়ে আলাদা নদী রক্ষা কমিশন হয়েছে।

এরপরও সবত্র নদী, খাল ও জলাশয় ভরাট ও দখল নিব্যি ভাবিয়ে তুলছে সচেতন পরিবেশবাদিদের। দ্রুত এসব দখলবাজদের আইনের আওতায় আনতে প্রশাসনদের কঠোর হওয়ার অনুরোধ জানান।

এদিকে নদী, খাল, জলাশয় দখলবাজদের বিরুদ্ধে মামলা করায় একাত্মতা প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ নদী পরিব্রাজক দল, বাঁকখালী বাঁচাও আন্দোলন, বাংলাদেশ রিভার ফাউন্ডেশন ও সিইএইচআরডিএফ। সংগঠনগুলোর দাবী জেলা শহরের বিভিন্ন শাখা নদী, খাল ও ভরাটখালগুলো দখলবাজদের হাত থেকে উদ্ধার করতে বাংলাদেশ নদী রক্ষা কমিশনসহ সংশ্লিষ্টদের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।