বার্তা পরিবেশক :
কক্সবাজার জেলা কালেক্টরেট ৪র্থ শ্রেণী কর্মচারি সমিতির বিরুদ্ধে দিনে রাতে বিচারাধীন দোকান ভেঙ্গে বাণিজ্যিকভাবে নতুন দোকান নির্মাণের অভিযোগ তুলেছেন ব্যবসায়ী কুতুব উদ্দিন। কতিপয় প্রশাসনের কর্মচারিরা আইন আদালত না মেনে দোকান ঘর ভেঙ্গে নতুন করে দোকান নির্মাণ কাজ অব্যাহত রেখেছেন।
এদিকে ভূক্তভোগি দোকানটি ফিরে পেতে চান। তা না হলে তার ব্যাপক ক্ষতি সাধন হবে। প্রায় ৫০ লক্ষ টাকা খরচ করা দোকানটি দীর্ঘ ৫ বছর ধরে তিনি করতে পারেননি। যার কারনে স্ত্রী সন্তান নিয়ে পথে বসতে চলেছেন ব্যবসায়ী কুতুব উদ্দিন। এব্যাপারে জেলা প্রশাসনসহ আইন-শৃংখলা বাহিনীর কাছে তিনি সহযোগিতা কামনা করেছেন।
জানাগেছে, লকডাউন ও গেল ঈদকে পুঁজি করে বিচারধীন দোকান ঘর ভেঙ্গে বেশি টাকার লোভে নতুন করে দোকান ঘর নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে কক্সবাজার জেলা কালেক্টরেট ৪র্থ শ্রেণী কর্মচারি সমিতির বিরুদ্ধে।
এ নিয়ে ১১ মে ভুক্তভোগি কুতুব উদ্দিনের স্ত্রী মৌসুমী আক্তার কুতুব কক্সবাজার জেলা কালেক্টরেট ৪র্থ শ্রেণী কর্মচারি সমিতির ২ নেতার বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগ দেয়ার পরও রাতে দিনে নির্মাণ কাজ চালিয়ে যাচ্ছে কর্মচারি সমিতির নেতারা। বর্তমানে ওই দোকান ঘরে থাকা তার স্ত্রী সন্তানরা নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে।
অভিযোগ সূত্রে জানাগেছে, ২০১৬ সালে কক্সবাজার জেলা কালেক্টরেট ৪র্থ শ্রেণী কর্মচারি সমিতি থেকে একটি রেস্তোরা করার জন্য দোকান ভাড়া নেন ব্যবসায়ী কুতুব উদ্দিন। ওই দোকানের নাম দেয়া হয় অবিরাম ক্যন্টিন এন্ড বিরানী হাউজ। কিন্তু দুঃখের বিষয় ওই দোকানটি তিনি ১ দিনের জন্যও করতে পারেননি। ওই দোকানটি নেয়ার সময় ৪র্থ শ্রেণী কর্মচারি সমিতিকে নগদে ৮ লক্ষ টাকা জামানত দেন। পাশপাশি ৭ লক্ষ টাকার নির্মাণ কাজ করেন। দোকানের জন্য আসবাবপত্রসহ বিবিধ জিনিসপত্র ক্রয় করেন প্রায় ১৫ লক্ষ টাকার। দোকানটির নির্মাণ কাজ চলাকালীন সময় ৬ মাসের ভাড়া বাবৎ ৬০ হাজার টাকাও প্রদান করেন। ৫ বছরের জন্য নেয়া এ দোকান ঘরের মাসিক ভাড়া ছিলো ১০ হাজার টাকা। ওই দোকান ঘরে সমিতির কোনো বিনিয়োগ ছিল না। শুধু নামে মাত্র মাসিক ভাড়া নিতেন তারা!
৫ বছর ধরে ওই দোকানটি নিয়ে কুতুব উদ্দিনের সাথে সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলামের বিরোধ চলে আসছিলো। তাই কুতুব উদ্দিন তার অর্থ ও স্বার্থ রক্ষার্থে দোকান ঘরটি তার দখলে রাখেন। বর্তমানে ওই দোকানে তার পরিবার পরিজন থাকেন। কিন্তু তারা শান্তিতে নেই, প্রতিনিয়ত নানা হুমকি তাদের উপর। যার কারনে যে কোনো সময় তার পরিবারের উপর একটি র্দুঘটনা ঘটতে পারে বলে তিনি আশংকা করছেন।
কুতুব উদ্দিন জানান, সমিতির নেতৃবৃন্দরা এতো টাকা গ্রহণ করার পরও কোনো কারন ছাড়াই তাকে রেস্তোরা খুলতে দিচ্ছেন না। উল্টো মোটা অংকের বিনিময়ে অন্যত্রে দোকান ভাড়া দেয়ার জন্য তাকে উচ্ছেদসহ দোকান ঘরে থাকা তার স্ত্রী সন্তানের উপর অমানবিক আচরণ করেছে তারা।
এতে নিরুপায় হয়ে বিষয়টি গত ১৬/১১/২০২০ ইংরেজী তারিখে কক্সবাজার জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তর বরাবর আবেদন দায়ের করেন কুতুব উদ্দিনের স্ত্রী মৌসুমী আক্তার কুতুব। এ আবেদনটি প্রশাসন আমলে নিয়ে শুনানী পর্যায়ে রয়েছে। কিন্তু বিচার চলমান একটি দোকান কর্মচারি সমিতি নেতৃবৃন্দরা ভেঙ্গে বাণিজ্যিকভাবে দোকান তৈরী অন্যত্রে ভাড়া দেয়ার জন্য পাঁয়তারা চালিয়ে আসছে। শুধু তাই নয়, এ দোকান নিয়ে আইন আদালতে মামলাও চলছে বলে তিনি জানান।
কুতুব উদ্দিন আরও জানান, সন্ত্রাসী কায়দায় কক্সবাজার জেলা কালেক্টরেট ৪র্থ শ্রেণী কর্মচারি সমিতির সভাপতি সুলতান মাহমুদ বাবুল ও সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম তার দোকানের সামনের স্টিলের চার্টার, ভিআইপি টেবিল ও বাথরুমসহ নানা সরঞ্জাম ভাংচুর ও লুটপাট করে ব্যাপক ক্ষতি সাধন করেছেন। এতে তার অনেক টাকার ক্ষয়-ক্ষতিও হয়েছে।
এদিকে, কমিটি আসে যায়, এক এক সময় একেক কমিটি এসে ওই দোকান নিয়ে ঝামেলা সৃষ্টি করে। কিন্তু তারা বারংবার চুক্তি ভঙ্গ করে তার পরিবারের উপর অমানবিক আচরণ করেই চলেছেন। বর্তমান কমিটি দায়িত্ব গ্রহণ করার পর প্রশাসনের ৪র্থ শ্রেণীর কর্মচারি হিসেবে প্রভাব খাটিয়ে একের পর এক হয়রানি কুতুব পরিবারের উপর।
তিনি আরও দাবী করেন, অধিকন্তু তার সাথে সম্পাদিত চুক্তিপত্র চলমান থাকলেও দোকান বুঝে না দিয়ে টাকা আতœসাতের উদ্দেশ্য অন্যত্রে দোকান ভাড়া দেয়ার জন্য পাঁয়তারা চালিয়ে আসছেন ৪র্থ শ্রেণীর কর্মচারি সমিতি। এতে হীনমান্যতার পরিচয় দিতে বেআইনীভাবে কুতুব উদ্দিনকে দোকান থেকে উচ্ছেদ করার জন্য নানা অপকৌশল চালিয়ে যাচ্ছেন তারা।
কক্সবাজারে বঙ্গবন্ধু’র বিশ্বস্ত সহচর মরহুম আহমদ কবির সওদাগরের সন্তান এবং ২৮ বছর ধরে আওয়ামী রাজনীতির সাথে জড়িত থাকা এ কুতুব উদ্দিন আরও জানান, আমি বর্তমানে কক্সবাজারের বাহিরে চিকিৎসাধীন থাকার সুবাদে কতিপয় ৪র্থ শ্রেণীর কর্মচারি সমিতির নেতা সুলতান মাহমুদ বাবুল ও আবুল হাশেমের নেতৃত্বে এ কর্মকান্ড চালিয়ে আসছে। তার বিনিয়োগ করা দোকান ঘর দেখভাল করার জন্য বর্তমানে তার স্ত্রী মৌসুমী আক্তার কুতুব, মেয়ে কক্সবাজার সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণীর ছাত্রী সাদিয়া কুতুবী ইলাসহ মোট ৬জন মানবেতর জীবন যাপন করছেন। যদি কোনো হৃদয়বান মানুষ তাদের সাথে যোগাযোগ করে বিষয়টি বিস্তারিত জানতে চাইলে এ ০১৮৩৭১৯৪৯৮১ নাম্বারে যোগাযোগ করতে পারবেন।
এ ব্যাপারে তিনি প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক, জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী, কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, সাংবাদিক, মানবাধিকার, বিভিন্ন স্তরের জনপ্রতিনিধিসহ সর্বস্তরের মানবতাবাদী মানুষের কাছে সু-দৃষ্টি কামনা করেছেন এবং জরুরী ভিত্তিতে উক্ত কাজ বন্ধ করে তার দোকানটি ফিরে দেয়ার আহবান জানান। তা না হলে তার ব্যাপক ক্ষতি সাধন হবে বলে জানান।