সেলিম উদ্দীন, ঈদগাঁও
ঘূর্ণিঝড়ে যতটা না ক্ষতি হয়েছে, বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে তারচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে কক্সবাজার সদরের পোকখালী উপকূলীয় ইউনিয়নের গোমাতলীর মানুষের।

ইয়াসের রেশ কাটিয়ে উঠতে না উঠতে আঘাত হানে সাগরের জোয়ার পানি। এতে নষ্ট হয়ে যায় তিলে তিলে গড়া সম্পদ। ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের আঘাতে বাঁধ ভেঙে উপকূলের কাটাঘোনা, সি বল্ক, ডি বল্ক, রাজঘাট, গাইট্যাখালী, পশ্চিম গোমাতলীর চরপাড়ার মানুষ জোয়ার-ভাটার মধ্যে বাস করছে। এজন্যই আবারও টেকসই বাঁধ নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

সরেজমিন দেখা গেছে, পোকখালী ইউনিয়নের পশ্চিম গোমাতলী,চরপাড়া, বাঁশখাইল্ল্যা পাড়া, বদরখাইল্যাপাড়া, টেডিঘোনা, রাজঘাট, আজিম পাড়া, গাইট্যাখালী এলাকা মুলত এখন পানিবন্দি।

এসব এলাকার পাউবো বেড়িবাঁধের কোথাও কোথাও ৪/৫ টি অংশে ভেঙে সাগরের পানি প্রবেশ করে প্লাবিত হয়েছে বিভিন্ন এলাকা।

এসব এলাকার মানুষ ত্রাণ নয়, বাঁধ চায়। বর্ষার আগ মুহুর্তে বাঁধ ভেঙে এলাকা প্লাবিত হয়ে সবকিছু হারাতে হচ্ছে তাদের।

ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ড গাইট্যাখালী এলাকার সাইফুদ্দীন বলেন, এই এলাকা বসবাস করার মতো নেই। পাউবো বেড়িবাঁধ ভেঙে সব নিয়ে গেছে। খেটেখুটে কিছু সঞ্চয় করি, সেগুলো নতুন কোনও ঝড় বা জলোচ্ছ্বাস এসে ভাসিয়ে নিয়ে যায়। কিছুই রেখে যায় না। আমরা সরকারের কাছে ত্রাণ চাই না। আমাদের কোনও কিছু দিতে হবে না। টেকসই বাঁধ নির্মাণ করুন, তাতেই আমরা খুশি।

বৃহষ্পতিবার দুপুরে কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ড প্রধান প্রকৌশলী প্রবীর কুমার গোস্বামী,এসডিও তাজুল ইসলাম, এসও নারায়ন চন্দ্র নাথ ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনে গেলে পোকখালী ইউপি চেয়ারম্যান রফিক আহমদ টেকসই বাঁধ নির্মাণ করে দেওয়ার দাবি জানান।

পোকখালী ইউপি চেয়ারম্যান রফিক আহমদ বলেন, ইয়াসে বিভিন্ন এলাকা ও গোমাতলীর বেড়িবাঁধগুলো বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ইতোমধ্যে অনেক জায়গা মেরামত করা হয়েছে। বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখে খুব কষ্ট লাগলো, মানুষ সব পানির মধ্যে বসবাস করছে।

তিনি বলেন, আমরা মানুষের কাছে শুনেছি তারা ত্রাণ চান না, টেকসই বেড়িবাঁধ চান। পাউবো টেকসই বাঁধের আশ্বাস দিয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত খুব খারাপ স্থানগুলো চিহ্নিত করে ছোট ছোট প্রজেক্ট নিয়ে বাঁধগুলো সুউচ্চ করে নির্মাণ করার দাবী জানাই।

কক্সবাজার পাউবো নির্বাহী প্রকৌশলী প্রবীর কুমার গোস্বামী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উপকূলের মানুষের ভাগ্য উন্নয়নে ডেলটা প্ল্যান ঘোষণা করেছে। ঘূর্ণিঝড়ের আগে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোতে বাঁধ মেরামতের কাজ শুরু করেছি। কিন্তু জলোচ্ছ্বাস হলে তাতে করার কিছু থাকে না।