ওসমান আবির, টেকনাফ:

কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার উপকূলীয় অঞ্চলে ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে অর্ধ-শতাধিক ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে।বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নাফ নদী ও সাগরের প্রবল জোয়ারে সেন্টমার্টিন ও শাহপরীর দ্বীপ উপকূলে এ ঘটনা ঘটে। এতে অর্ধ-শতাধিক পরিবার গৃহহারা হয়ে পড়েছে।জোয়ারের পানি ৪-৫ ফুট বৃদ্ধি পেয়ে পানি ঢুকে পড়ায় দ্বীপের চারদিকের বেশ কিছু অংশ ভেঙ্গে গেছে।উত্তাল রয়েছে সাগর ও নদী।

সেন্টমার্টিন দ্বীপের বাসিন্দারা জানান, ঘূর্নিঝড় ইয়াসের প্রভাবে দ্বীপের ১০ হাজার মানুষ গতকাল রাত থেকে আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে।বুধবার ভোরের দিকে দ্বীপে দমকা হাওয়া ও ঝড়ো বাতাস বইতে শুরু করে।সকালে প্রবল জোয়ার ও তীব্র বাতাসে দ্বীপের মানুষ ও পর্যটকদের যাতায়াতের একমাত্র জেটি বিধ্বস্ত হয়ে যায়।এছাড়া বেশকিছু ঘরবাড়ি ও ১০টি ট্রলার বিধ্বস্ত হয়েছে।বিশেষ করে দ্বীপের উত্তর-পূর্ব বীচ, গলাচিপা, কোনাপাড়া, নজরুল পাড়া এলাকায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

শাহপরীর দ্বীপের বাসিন্দারা জানান,”নাফ নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় জালিয়া পাড়ায় ঘরবাড়িতে জোয়াড়ের পানি ঢুকে পড়ে।এতে অর্ধ-শতাধিক ঘরবাড়ি লন্ডবন্ড হয়ে নদীতে বিলীন হয়ে যায়।ফলে এসব পরিবার তাদের স্বজনদের কাছে আশ্রয় নিয়েছে।এছাড়া, নাফ নদীর ঢেউয়ের আঘাতে বিদ্যালয়ের তিনটি ভবন ও সাইক্লোন শেল্টারে ফাটল ধরেছে।ভবনের বেজমেন্টের নিচের মাটি সরে গিয়ে পানি ঢুকে পড়েছে।ভবন তিনটি ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।এছাড়া দ্বীপের পশ্চিম ও দক্ষিন পাশে সাগরের উত্তাল ঢেউয়ের আঘাতে বাঁধের সিসি ব্লক ধসে গেছে।যেকোন মুহুর্তে বাঁধ ভেঙ্গে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুর আহমদ বলেন,” ঘুণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে অন্যদিনের চেয়ে ৪-৫ ফুট সাগরের পানি বৃদ্ধি পেয়ে দ্বীপে পানি ঢুকে চারদিকে ভেঙ্গে গেছে। তবে কয়েকটি অংশে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ভারী বৃষ্টি ও দমকা হাওয়ায় এখন পর্যন্ত ৬টি ঘর-বাড়িসহ কিছু ট্রলার বিধ্বস্ত হয়েছে।

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মোহাম্মদ পারভেজ চৌধুরী বলেন, ঘুর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে সাগর-নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় সেন্টমার্টিন-শাহপরীর দ্বীপে অর্ধ-শতাধিক ঘরবাড়ি ভেঙ্গে গেছে।দুই দ্বীপের বেশকিছু জায়গায় ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।ইতোমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত ঘরহারা মানুষদের ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছে দেওয়ার কার্যক্রম শুরু হয়েছে বলেও জানান তিনি।

কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী প্রবীর কুমার গোস্বামী বলেন,”ঘূর্নিঝড় ইয়াসের প্রভাবে সাগর ও নদীর পানি ৪-৫ ফুট বৃদ্ধি পাওয়ায় পানির ঢেউয়ের আঘাতে বাঁধের সিসি ব্লক ধসে গেছে।এছাড়া জালিয়া পাড়ার সাইক্লোন শেল্টারের বেজমেন্টের নিচের মাটির সড়ে গেছে।ইতিমধ্যে সাইক্লোন শেল্টার রক্ষায় বাঁধ নির্মানের একটি প্রকল্পের নকশা করা হয়েছে।যা খুব শিগ্রই বাস্তবায়ন করা হবে।এছাড়া, যেকোন মুহুর্তে বাঁধ রক্ষায় পানি উন্নয়ন বোর্ড সর্বদা প্রস্তুত রয়েছে।