সিবিএন ডেস্ক:
কর্মী ছাঁটাইয়ের পর এবার বর্ষীয়ান সাংবাদিক একুশে পদকপ্রাপ্ত তোয়াব খানকে চাকরি ছাড়তে বলেছে জনকণ্ঠের মালিকানা প্রতিষ্ঠান গ্লোব-জনকণ্ঠ শিল্প পরিবার লিমিটেড। মালিকানা কর্তৃপক্ষের এ আহ্বানে সাড়া দিয়ে জুন থেকেই সরে দাঁড়াচ্ছেন বলে জানিয়েছেন জনকণ্ঠের উপদেষ্টা সম্পাদকের দায়িত্বে থাকা তোয়াব খান।

জানা গেছে, গ্লোব-জনকণ্ঠ শিল্প পরিবারের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ফোন করে তোয়াব খানকে চাকরি ছাড়তে বলেছেন। ১৯৯৩ সালে জনকণ্ঠের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই এই পত্রিকাতে কাজ করছেন তোয়াব খান। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালনের পর ৮৭ বছর বয়সী এই দেশবরেণ্য সাংবাদিক এখন উপদেষ্টা সম্পাদক হিসেবে রয়েছেন।

চাকরি ছাড়তে বলা প্রসঙ্গে তোয়াব খান বলেন, কয়েক মাস ধরে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ছিলাম। এখন পত্রিকা থেকে আমাকে চাকরি ছেড়ে দিতে বলেছে। আগামী পদত্যাগপত্র পঠিয়ে দেবো। জুন থেকে আমি আর জনকণ্ঠে থাকছি না।

এ বিষয়ে জানতে গ্লোব-জনকণ্ঠ শিল্প পরিবারের নির্বাহী পরিচালক মাহবুবুর রহমানের মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি। প্রতিষ্ঠানটির অন্য কেউও মন্তব্য করতে রাজি হননি।

দৈনিক জনকণ্ঠে গত বছরখানেক ধরই চলছে অস্থিরতা। গত ১৫ মার্চ সংবাদপত্রটি থেকে প্রায় শখানেক সাংবাদিককে চাকরিচ্যুত করার অভিযোগ ওঠে। এ নিয়ে সাংবাদিক সংগঠনগুলো আন্দোলন করলেও কোনো ফল আসেনি। এরই মধ্যে গত ২২ মার্চ জনকণ্ঠের সম্পাদক, মুদ্রাকর ও প্রকাশক আতিক উল্লাহ খান মাসুদ মারা গেলে পরিস্থিতি আরও ঘোলাটে হয়ে ওঠে।

জনকণ্ঠের সাংবাদিকরা বলছেন, গণছাঁটাই ও সম্পাদক আতিক উল্লাহ খান মাসুদের মৃত্যুর পর পত্রিকাটিকে অভিভাবকশূন্য করতেই তোয়াব খানকে রিয়ে দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

বর্ষীয়ান সাংবাদিক তোয়াব খানের জন্ম ১৯৩৪ সালে। পঞ্চাশের দশকে সাংবাদিকতা শুরু করেন তিনি। দৈনিক সংবাদ, দৈনিক পাকিস্তান, দৈনিক বাংলাসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে কাজ করেছেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছাড়াও সেনাশাসক হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও সাবেক প্রধান বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমদেরও প্রেস সচিবের দায়িত্ব পালন করেছেন তোয়াব খান।

সরকারের প্রধান তথ্য কর্মকর্তা, বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালকের দায়িত্বও পালন করেছেন তোয়াব খান। সত্তরের দশকে তিনি দৈনিক বাংলার সম্পাদক ছিলেন। জনকণ্ঠেও সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। সাংবাদিকতায় অবদান রাখার জন্য ২০১৬ সালে একুশে পদক পান তোয়াব খান।

গত বছরের নভেম্বরে প্রথিতযশা এই সাংবাদিক করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন। পরে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে উঠেছিলেন তিনি।