২য় ও শেষ কিস্তি

( হিসেম মিলহেমের লিখা এই আর্টিকেলটিকে পৃথিবীর সেরা প্রবন্ধ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। এই প্রথম এটি ভাষান্তর হয় শুধুমাত্র কক্সবাজারনিউজ সিবিএন এ। করেছেন এম,ডি ম্যাক্স)।

যুদ্ধের কোন শেষ নেই;

১৯৭৩ সালে বৈরুতের রাজনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক প্রবাহ নিমজ্জিত হতে শুরু হয়, যেহেতু আরব স্বৈরাচারী এবং স্থায়ী সাম্রাজ্য পুনরায় ক্ষমতাধর।

একই বছর অক্টোবরের যুদ্ধে সিরিয়া ও মিশর ইস্রাইলের প্রতিরক্ষা ভেংগে দেয়, কিছুটা প্রতিরোধ করতে সক্ষম হয়।

বাধ্য হয়ে আমেরিকা আসে মধ্যস্ততা করতে, সিরিয়া আর মিশর তাদের কিছু টেরিটরি ফিরে পায় এবং এটিকে তারা সাময়িক বিজয় হিসেবে চিহ্নিত করে।

যাই হোক,সে সময়ে ফিলিস্তিনের জাতীয় আন্দোলন যার নাম, পি,এল,ও তার প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী একটি ‘ নিরপেক্ষ ‘ দল হিসেবে ঠিকে থাকতে ব্যর্থ হয়। তারা জর্ডানে আর লেবাননে নতুন কিছুর আকাঙ্ক্ষা নিয়ে নেমেই ভুল করে বসল। অবশেষে ১৯৭৫ সালের লেবাননের গৃহযুদ্ধ বৈরুতের আশা ও স্বপ্নের ধুলিস্যাত করে দিল। স্বৈরাশাসন ফিরে আসল,কিন্তু যে সাম্রাজ্য তারা স্থাপন করল তা আপাতদৃষ্টিতে শক্তিশালী মনে হলেও আরব দুনিয়ায় যে মারাত্মক ভুল রয়ে গিয়েছে তা লুকানো যায়নি।

১৯৭০ সাল থেকে ২০১০ এর তিউনিসীয় বিপ্লব পর্যন্ত অনেক আরব দেশ গৃহযুদ্ধের স্বাদ অবলোকন করে। তবে এসমস্ত বিপ্লবকে নিষ্ঠুর সামরিক শক্তি দমিয়ে রাখে। ইরাক সিরিয়া আর আলজেরীয়ায় তাদের প্রতিপক্ষকে থামানোর লক্ষে ভয়ংকর রাসায়নিক অস্ত্র প্রয়োগ করে, বাধ্য করানো হয় তাদের শত বছরের স্বীয় মাতৃভূমি ছাড়তে। পক্ষান্তরে আলজেরীয় বিদ্রোহীরা সরকার দলের মত বর্বর হয়ে উঠেছিল।
১৯৭৯ সালে ৩ টি রাজনৈতিক ঘটনা মধ্যপ্রাচ্যে কেঁপে উঠে, ইরানের ইসলামিক আন্দোলন, রাশিয়ার আফগানিস্তান আক্রমণ আর পবিত্র হারাম শরিফ আচমকা দখল।
আর এই ভয়ানক ঘটনাপঞ্জি ইরাকের বসরা থেকে শুরু করে বৈরুত পর্যন্ত যুদ্ধ, দখলদারি আর ধর্মীয় অবস্থানের কারনে শিয়া সুন্নি রক্তাক্ত সংর্ঘষ বাধায়।
মক্কার উপর আক্রমণ ছিল মুলত এক নব সূচনাকারী সুন্নির নতুন মেহেদি কে আনার প্রচেষ্টা যার আগমন অজ্ঞ ধর্মান্ধতা থেকে যার সাথে বর্তমান আই,এস এর মিল পাওয়া যায়।

১৯৬৭ সালের যুদ্ধে ৩ টি আরব দেশ পরাজিত হয় আর তাদের টেরিটরি হারায়,কিন্তু তাদের অস্তিত্ব ঠিকে ছিল,বর্তমানে সিরিয়া,ইরাক,লিবিয়া আর ইয়েমেনের যুদ্ধ নিজের সম্ভ্রম বিলীন করে দিচ্ছে।

আর সিরিয়ার এই প্রকাশ্যতা তাদের লেবানন ও জর্ডানের চেয়েও ভয়ংকরী করে তুলছে। স্থানীয় যুদ্ধাদের আর আন্তর্জাতিক স্পন্সরদের সিরিয়াকে কোন দিকে নিয়ে যাবে তার কোন ভিশন নেই।

আরবের ১৯৬৭ এই পরাজয় ইস্রাইলকে মিলিটারি সুপার পাওয়ারে পরিণত করল। আজ ইস্রাইল অর্থনৈতিক ভাবে শক্তিশালী এবং পৃথিবীর অন্যান্য প্রযুক্তিগত ভাবে উন্নত দেশের সাথে প্রতিযোগীতা করতে সক্ষম একটি দেশ।
কিন্তু ইস্রাইল প্রচলিত গণতন্ত্রের নামে অবৈধ ভাবে দখল করে রেখেছে ওয়েস্ট ব্যাংক আর হাতের মুঠোয় রেখেছে গাজা।
ইস্রাইল ইহুদী গ্রুপদের স্বার্থ রক্ষায় তাদের ধর্মকে ইচ্ছামত ব্যবহার করছে আর ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ছে আরবের বিভিন্ন প্রান্তে। আপাতদৃষ্টিতে যতই বলুক না কে ফিলিস্তিনিদের আলাদা রাজ্য কোনদিন ইস্রাইল মেনে নিবেনা।