আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় নির্বিচারে বোমা হামলা ও গুলি চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। আর এসব হামলায় মূলত টার্গেট করা হচ্ছে আবাসিক স্থাপনা। ফলে জীবন বাঁচাতে বাড়িঘর ছেড়ে চলে যাচ্ছে হাজার হাজার মানুষ।

জাতিসংঘ জানিয়েছে, অব্যাহতভাবে ‌অপরাধমূলক হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। এ জন্য অন্তত ১০ হাজার ফিলিস্তিনি নিজেদের বাড়িঘর ছেড়েছে। খবর: আল জাজিরা।

এক বিবৃতিতে জাতিসংঘ বলেছে, ‘করোনা মহামারিতে এসব ফিলিস্তিনি স্কুল, মসজিদ এবং অন্যান্য জায়গায় আশ্রয় নিচ্ছে। সেখানে পানি, খাদ্য ও চিকিৎসাসেবা পর্যাপ্ত নয়। এছাড়া মহামারিতে স্বাস্থ্যবিধিও মেনে চলার সুযোগ নেই।’

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘সেখানের হাসপাতাল ও স্যানিটেশন সেবাগুলো বিদ্যুতের উপর নির্ভর করে। কিন্তু বিদ্যুৎ উৎপাদনের জ্বালানি রোববার থেকে শেষ হতে যাচ্ছে।’

জাতিসংঘ আশা করছে, ফিলিস্তিনি গ্রুপগুলো এবং ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ অবিলম্বে সেখানে মানবাধিকার কর্মীদের যাওয়ার অনুমতি দেবে। যাতে করে তারা জ্বালানি, খাদ্য এবং চিকিৎসা দিতে পারে।

বোমা হামলার মুখে পরিবার নিয়ে পালিয়ে আসা সালওয়া আল আত্তার বিবিসিকে বলেন, ‘আমাদের মনে হচ্ছিল যেন ভয়ঙ্কর এক সিনেমার মধ্যে আছি। আমাদের মাথার উপরে জঙ্গি বিমান থেকে বোমা নিক্ষেপ করা হচ্ছে। অপরদিকে ট্যাংক থেকে গুলি করা হচ্ছে। নারী, শিশু, পুরুষরা সবাই চিৎকার করছিল।’

রমজানের আগে গাজা শহরে ফিরে আসা তুরস্কের ফিলিস্তিনি শিল্পী মালাক মাট্টার আল জাজিরাকে বলেন, ‘আমি ২০০৮, ২০১২ এবং ২০১৪ সালের যুদ্ধে বেঁচে গিয়েছিলাম। আমি এবং আমার পরিবার বলতে পারি যে, এখন যা চলছে তা পূর্ববর্তী যুদ্ধের চেয়েও খারাপ অবস্থা।’

তিনি বলেন, ‘এখনো বোমা হামলা বন্ধ হয়নি। হামলার টার্গেট হলো আমি যেখানে বাস করি সেই শহরের আবাসিক ভবনগুলো। এখানে গানবোট এমনকি বিমান থেকেও গুলি চালানো হয়েছে। আমার বন্ধুরা তাদের বাসা ছেড়ে যেতে বাধ্য হয়েছে। এটি ১৯৪৮ সালে নকবার কথা মনে করিয়ে দেয়। এটি একটি গণহত্যা।’

গত সোমবার (১০ মে) থেকে গাজায় বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী, যা এখনো অব্যাহত রয়েছে। এ হামলায় এখন পর্যন্ত ১২২ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন প্রায় হাজার খানেক।

অপরদিকে হামাসের রকেট হামলায় এখন পর্যন্ত আটজন ইসরায়েলি নিহত হয়েছেন। এদের মধ্যে দুই শিশু, একজন ভারতীয়, একজন বয়স্ক নারী ও এক ইসরায়েলি সেনাসদস্য রয়েছেন। এছাড়া আহত হয়েছেন কয়েক ডজন।

ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনিদের মধ্য এখন যে সংঘাত চলছে, তা ২০১৪ সালের পর সবচেয়ে বড় আকারের।