সিবিএন ডেস্ক:
করোনাকালে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখে পড়েছে। ক্ষতি হওয়া অন্যান্য ক্ষেত্রের মতো ব্যবসা বাণিজ্যসহ নানা ক্ষেত্র থেমে থেমে চলার মাধ্যমে টিকে থাকলেও শিক্ষা খাত একেবারেই বন্ধ বলা যায়।

গত বছরের মার্চ মাসের শেষের দিক থেকে জরুরি ভিত্তিতে সবধরণের শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করা হয়। পরে অবশ্য কওমি মাদ্রাসার শিক্ষাক্রম চালুর অনুমতি দেয়া হয়েছিল, যা সাম্প্রতিক সময়ে আবার বন্ধ করা হয়েছে। অটোপাশ দিয়ে শিক্ষা বর্ষ সামনের দিকে নিয়ে যাবার যে চেষ্টা, তাও ঝুঁকিতে পড়েছে। উচ্চশিক্ষা কার্যক্রমে গতি না আসায় ধারাবাহিক শিক্ষাক্রম মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়েছে।

সাম্প্রতিক সময়ে এক জরিপে দেখা গেছে, করোনাকালীন সময়ে স্কুল বন্ধ থাকায় প্রাথমিক এবং মাধ্যমিকের কমপক্ষে ৬০ লাখ শিক্ষার্থী শিক্ষার ক্ষতির ঝুঁকিতে পড়েছে। বিকল্প উপায়ে শিক্ষা চালিয়ে নিতে পরিবার প্রতি ১৩% খরচ বেড়েছে।

৭ হাজার পরিবারের ওপর জরিপ চালিয়ে এই তথ্য পেয়েছে বেসরকারি সংস্থা পাওয়ার এন্ড পার্টিসিপেশন সেন্টার (পিপিআরসি)। জরিপে অংশ নেয়া ৯০ শতাংশের বেশি অভিভাবক চান, করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের গতিবিধি দেখে স্বাস্থ্যবিধি মেনে স্কুল খুলে দেয়া হোক।

জরিপে দেখা গেছে, প্রায় ৬০ লাখ শিক্ষার্থীর বেশিরভাগই নিয়মিত পড়ালেখায় নেই। এমনকি এই সময়ে ডিজিটাল ডিভাইস, ইন্টারনেট সংযোগ, টিউশনির টাকা যোগাড় করতে না পেরে কওমি মাদ্রাসামুখী হয়েছে গড়ে ৪ শতাংশ শিক্ষার্থী। আর যেসব পরিবার অনলাইন ক্লাস কিংবা প্রাইভেট টিউটর এর খরচ যোগাড় করেছেন তাদের গড়ে ১৩ শতাংশ অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় করতে হয়েছে।

ঘরে বন্দী থাকতে থাকতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে মানসিক সমস্যাসহ মোবাইল-ইন্টারনেট অতি ব্যবহারের প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। শিশুরা হারাচ্ছে শিশু সুলভ আচরণ। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে করোনায় সবকিছু বন্ধ থাকলেও বিশেষ ব্যবস্থায় শ্রেণিকক্ষের কার্যক্রম চালু রাখা হয়েছে। অবস্থা বিবেচনায় সাময়িক বন্ধ হলেও প্রায় স্বাভাবিক রাখা হয়েছে শিক্ষা কার্যক্রম। আমাদেরও উচিত বিভিন্ন দেশের এক বছরের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নেয়া। দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতির মুখে থাকা প্রজন্মকে রক্ষা করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নেবেন বলেও আমাদের আশাবাদ।