আব্দুল মান্নান রানা

গত এক শতাব্দী সারাবিশ্ব উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা,হতাশা,বঞ্চনার মধ্যদিয়ে পার করছে। আমরা যদি একটু লক্ষ্য করি  দেখতে পাই ১৯১৪ সালের প্রথম বিশ্বযুদ্ধ, ১৯৩৯ সালের দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ, পাক- ভারত যুদ্ধ, স্নায়ু যুদ্ধ, বসনিয়া, চেসনিয়া,উইঘুর,কোরিয়া উপদ্বীপ উত্তেজনা, কাশ্মীরের সূচনালগ্ন থেকে সংকট,মায়ানমারের আরাকানে রোহিঙ্গা সংকট,মধ্যপ্রাচ্যে ইসরাইলের ফিলিস্তিনের উপর আগ্রাসী মনোভাব এবং নির্যাতন সহ পৃথিবীর পরাশক্তির রাষ্ট্রসমূহের দরিদ্র রাষ্ট্রের প্রতি সাম্রাজ্যবাদী মনোভাব প্রতিনিয়ত আমাদের তরুণদের ভাবিয়ে তুলেছে। পৃথিবীর শাসকদের চিন্তার গতিপথ আসলে কোনদিকে প্রবাহমান।

সমাজব্যবস্থা, রাষ্ট্রব্যবস্থা তথাপি সমগ্র বিশ্ব আজ শোষকদের উগ্রবাদীতা এবং শোষিতদের সংকট, আর্তনাদ এবং হাহাকারে সয়লাব হয়ে গেছে।

পুরো পৃথিবী কেবল তা নিশ্চুপ হয়ে দেখেই যাচ্ছে। জাতিসংঘের মত অন্যতম আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান এসব সংকট নিরসনে ভূমিকায় অবতরণ হচ্ছে না।

অথচ এ মুহূর্তে সারাবিশ্বে অন্তত ২শত কোটিরও বেশি তরুণ রয়েছে। কিন্তু আমরা টগবগে তরুণ হওয়া সত্ত্বেও, কেবল তা দেখে যাচ্ছি।আর তার সমালোচনা করছি।সমাধানের পথ খুঁজছি না।যদি এভাবে আগামী এক শতাব্দী চলতে থাকে। তবে আমাদের প্রজন্ম পেতে চলেছে একটি সংকটাপন্ন ও জীর্ণ শীর্ণ পৃথিবী। যেখানে মানুষের জাতীয়তাবাদী চিন্তা এবং সুপার মিডিয়ার বদৌলতে পুরো পৃথিবী আরও বেশি বিদীর্ণ হয়ে ওঠবে।

কিন্তু বাস্তব সত্য হচ্ছে রাষ্ট্রীয় গন্ডি পেরিয়ে আমাদের বেড়ে উঠা দরকার শোষক শ্রেণিকে যোগ্য জবাব দেওয়ার জন্য।
কিন্তু,আমরা তা বেমালুম ভুলে গিয়েছি।
আল্লাহর রাহে পথচলা এবং মানুষের কল্যাণের জয়গান করা। এর চেয়ে বড় ইবাদত আর কি হতে পারে।
তাই, এই মুহূর্তে আমাদের দরকার দক্ষতায় সমৃদ্ধ, কর্মস্পৃহায় বলিয়ান, নৈতিকতা ও আদর্শে সুসংগঠিত, জ্ঞানগরিমায় সমৃদ্ধ, প্রশিক্ষণ ও চর্চায় মনোনিবেশকারী এবং গড্ডালিকা প্রবাহে গা ভাসিয়ে না দেয় এমন একদল তারুণ্যদীপ্ত তরুণ । যাদের সামগ্রিক আচরণের উপর নির্ভর করছে আগামীর পৃথিবীর গতিপথ।

আসুন ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে আমরা সমাজের ছিন্নমূল, বাস্তুহারা, উদ্বাস্তু, গরিব,অনাথ, অসহায়, দুর্বল,প্রতিবন্ধী তথাপি উন্নয়নের বাহিরে আছে এমন মানুষ এবং সমগ্র বিশ্বের সামষ্টিক বিষয়ে টেকসই উন্নয়নের জন্য গড়ে উঠি।

উপমহাদেশ রাষ্ট্র কবি, কাজী নজরুল ইসলাম শোষকদের জীর্ণ মতবাদকে ভেঙ্গে দেওয়ার লক্ষ্যে বলেছিলেন,
“আমরা যদি না জাগি মা কেমনে সকাল হবে।তোমার ছেলে উঠলে মাগো রাত পোহাবে তবে”।