কিশোরগঞ্জ (নীলফামারী) সংবাদদাতা:
চিত্র রঞ্জন রায়। একজন প্রকৃত মৎস্য চাষী। বিপদে পড়ে মাছ চাষের লোনের জন্য উপজেলা মৎস্য অফিসারের কাছে গেলে এ সপ্তাহ ও সপ্তাহ করে কয়েক বার হয়রানি করা হয় এ মৎস্য চাষীকে। ওই মৎস্য চাষীও কয়েক বার ঘুরতে ঘুরতে নিরাস হয়ে আর অফিসে যায়নি। সরকারি নিয়ম হলো সিটিজেন চার্টার (নাগরিক সনদ) প্রদর্শন করবে প্রতিটি অফিস। সেক্ষেত্রে ভিন্ন মেরুর অফিস নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলা মৎস্য অফিস। সিটিজেন চার্টার (নাগরিক সনদ) প্রদর্শন না করায় ওই দপ্তরে কি কি কাজ হয়, কি কি সেবা পাবে জনগণ তা জানা ছিল না চিত্র রঞ্জন রায়ের। ফলে একজন প্রকৃত মৎস্য চাষী বিপদের সময় পায়নি এ দপ্তর থেকে মাছ চাষে লোন। চিত্র রঞ্জন রায়ের মত এ উপজেলার সিংহভাগ মৎস্য চাষীই এ অফিসের সেবাসমূহ জানে না। ফলে চিত্র রঞ্জন রায়ের মত অনেক মৎস্য চাষীসহ সাধারণ নাগরিকরা হচ্ছে সেবা থেকে বঞ্চিত।

নাগরিকরা দোরগোড়ায়, সহজে, অল্প সময়ে সেবা পায় এজন্য প্রতিটি অফিসে সিটিজেন চার্টার (নাগরিক সনদ) টাঙ্গাঁনোর সরকারিভাবে নিয়ম রয়েছে। সে নিয়মটি পালন করেনি কিশোরগঞ্জ উপজেলা মৎস্য অফিসার। ফলে তার অফিস থেকে কি কি সেবা প্রদান করা হয় বা হচ্ছে তা সাধারণ মানুষসহ মৎস্যচাষীরা জানেন না। কত দিনের মধ্যে সেবাটি পাবেন তাও নেই জানান। এ কারণে প্রকৃত মৎস্য চাষীরা এ অফিস থেকে হচ্ছে সেবা বঞ্চিত। মাছ চাষে লোন, মাছ চাষে প্রশিক্ষণ, বিল খনন, পুকুর খনন, মৎস্য অফিসের সেবাসহ সিটিজেন চার্টার সর্ম্পকে মৎস্য চাষীরা কিছুই জানেন না। না জানার ফলে মৎস্য চাষীসহ সাধারণ মানুষকে হতে হয় হয়রানি শিকার।

সে রকমই একজন মৎস্য চাষী চিত্র রঞ্জন রায়। যিনি মৎস্য অফিসের সিটিজেন চার্টার (নাগরিক সনদ) কি জানেন না। ওই মৎস্য চাষী গত বছর বিপদে পড়ে উপজেলা মৎস্য অফিসারের কাছে গেলে তিনি এ সপ্তাহ ও সপ্তাহ করে কয়েক বার ঘুড়িয়েছেন বলে এ মৎস্য চাষী মুঠোফোনে জানান। এছাড়া আরও জানান- এখন পর্যন্ত আমার পুকুর বা ঘের পরিদর্শন করতে কোন দিন আসেনি উপজেলা মৎস্য অফিসার বা অফিসের কোন কর্মকর্তা। সম্প্রীতি কোন প্রশিক্ষণ পেয়েছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিকদের বলেন-আমি বেশ ক’ বছর আগে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছি। তবে ক’ বছরে কোন প্রশিক্ষণ পাইনি। এ মৎস্য বড়ভিটা ইউনিয়নের ক্যামেরার বাজার গ্রামের তিলোক চাঁদ রায়ের পুত্র। তিনি এক একরের উপরে ১ টি পুকুরসহ সহ মোট ৫ টি পুকুরে মাছ চাষ করেন। এছাড়া তার ঘের রয়েছে ২ একরের বেশি। তাকেও সেবা সর্ম্পকে না জানার ফলে সেবা থেকে হতে হয়েছে বঞ্চিত। বিপদে পায়নি লোন।

অন্যদিকে মৎস্য চাষী বড়ভিটা ইউনিয়নের মেলাবর গ্রামের দিনোনাথ রায়ের পুত্র সংকর রায়। তার রয়েছে ৩০ শতাংশে একটি পুকুর এবং প্রায় দেড় একর জমিতে মাছের ঘের। সিটিজেন চার্জার (নাগরিক সনদ) ও কি কি সেবা পাওয়া যায় তিনিও জানেন না। তিনি এ অফিসের মাধ্যমে মৎস্য চাষে কোন প্রশিক্ষণ পেয়েছেন কি না মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিকদের জানান- আমি কোন প্রশিক্ষণ পাইনি।

চাঁদখানা ইউনিয়নের মৎস্য চাষী সফি কামাল রিয়াদ সিটিজেন চার্টার (নাগরিক সনদ) কি জানেন না। তিনি বলেন তথ্য সর্ম্পকিত কিছু হবে।

উপজেলা মৎস্য অফিসার আবুল কাশেম জানান- অফিসের সিটিজেন চার্টার আছে। নতুন অফিসে উঠেছি। তাই সিটিজেন চার্টার লাগানোর জায়গা নেই। উপজেলা নির্বাহী অফিসার স্যারকে অবগত করেছি। জায়গা পেলে অল্প কিছু দিনের মধ্যে সিটিজেন চার্টার টাঙ্গানো হবে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার রোকসানা বেগম বলেন ভিন্ন কথা। তিনি বলেন- উপজেলা মৎস্য অফিসার জায়গা চাইলে আমরা জায়গা দিব। তাছাড়া প্রত্যেকটি অফিসে সিটিজেন চার্টার টাঙ্গাঁনো বাধ্যতামূলক।

উল্লেখ্য, গত ৩ মে দৈনিক যুগের আলো পত্রিকায় শেষের পাতায় “ পুকুর ও মাছ চাষ কোনটাই নেই, তবুও গ্রহণ করছে মাছ চাষের প্রশিক্ষণ” শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ হয়েছে।