সংবাদ বিজ্ঞপ্তিঃ
বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন কক্সবাজার জেলা সভাপতি শামসুল আলম বাহাদুর বলেন, পহেলা মে মহান মে দিবস বা আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস।
পৃথিবীর শ্রমজীবি মেহনতি মানুষের কাছে এ দিনটি একদিকে যেমন খুবই তাৎপর্যময় তেমনি অনেক বেশী আবেগ ও প্রেরণার দিন।
১মে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস উপলক্ষে শ্রমিক কল্যান কক্সবাজার সিটির আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি কথাগুলো বলেন।
শামসুল আলম বাহাদুর বলেন, ১২৫ বছর আগে শ্রমিকদের অধিকার আদায়ের ঐক্যবদ্ধ দুর্বার সংগ্রাম ও আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে সূচিত হয় শ্রমজীবী মানুষের বিজয়ের ধারা।
এ দিনটির মাধ্যমে শ্রমজীবি মানুষ তাদের কাজের প্রাথমিক স্বীকৃতি পেয়েছে। তাই ঐতিহাসিক মে দিবস বা ‘আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস’ শ্রমিকের মর্যাদা রক্ষার দিন।
তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠার দিন।
বর্তমান আধুনিক বিশ্বের যেখানে যতটুকু সুন্দর তার পেছনে রয়েছে শ্রমজীবি মানুষের হাতের ছোঁয়া, রয়েছে হাড় ভাঙ্গা পরিশ্রম। এক কথায় বলা যায় আধুনিক সভ্যতা শ্রমজীবি মানুষ ধরে রেখেছে।
অবহেলিত ও শোষণ-নিপীড়নের শিকার শ্রমজীবি মানুষদের সবচেয়ে বড় অধিকার বা দাবি হলো,তাদের শ্রমের যথোপযুক্ত পারিশ্রমিক লাভ এবং সামাজিক মর্যাদা ও সম্মান নিয়ে বেচে থাকা। কিন্তু পৃথিবীর সমাজ ব্যবস্থা আজও এ মানুষগুলোর সঠিক মূল্যায়ন করতে সক্ষম হয়নি।
সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত হাড়ভাঙা শ্রম দিয়েও শ্রমিক তার ন্যায্য মূল্য পায়না। মালিকেরা উপযুক্ত মজুরি তো দেই না, বরং তারা শ্রমিকের সুবিধা-অসুবিধা ও দুঃখ-কষ্ট পর্যন্ত বুঝতে চাইয় না। সুযোগ পেলেই মালিকেরা শ্রমিকের ওপর চালাতেন নানা শারীরিক ও মানসিক নিপীড়ন। বলতে গেলে শ্রমিকের ন্যূনতম অধিকারও নাই। শ্রমিকের শরীরের ঘাম আর সীমাহীন শ্রমের বিনিময়ে মালিক অর্জন করতেন সীমাহীন সম্পদ অথচ তার ছিটেফোঁটাও শ্রমিকের ভাগ্যে জুটত না। সপ্তাহে ৬ দিনের প্রতিদিনই গড়ে প্রায় ১০ থেকে ১২ ঘন্টার অমানবিক পরিশ্রম করতো কিন্তু তার বিপরীতে মিলত নগন্য মজুরী। যা দিয়ে একজন শ্রমিকের সংসার চলেনা,স্বজনের মুখে দুবেলা দুমুঠো খাবার তুলে দেয়া সম্ভব হয়না।
কাজের যেমন সুনির্দিষ্ট সময় নেই, তেমনি নেই সাপ্তাহিক ও অন্যান্য ছুটি।
চরম বিপদের দিনেও শ্রমিকরা ছুটি পায়না।দায়িত্বপালন কালে দুর্ঘটনায় কারো মৃত্যু ঘটলে তার পরিবারকে কোন ক্ষতিপূরণ দেয়া হয়না।
সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত দিন-রাতে প্রায়ই ১৬ থেকে ১৮ ঘণ্টা কাজ করতে হয়।
সর্বোপরি শ্রমিক সমস্যার একমাত্র সমাধান ইসলামি শ্রমনীতি বাস্তবায়নের মাধ্যমেই সম্ভব।
তাই অধিকার আদায়ের সংগ্রামে শ্রমজীবি মানুষের ঐক্যবদ্ধ ভূমিকার বিকল্প নাই।
তিনি সকলকে শ্রমিক কল্যান ফেডারেশনের পতাকাতলে সমবেত হওয়ারও আহবান জানান বাহাদুর।
এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন- জেলা সেক্রেটারি মুহাম্মদ মহসিন, সাংবাদিক ইউনিয়ন কক্সবাজারের সভাপতি মমতাজ উদ্দিন বাহারি, ঝিলংজা ইউনিয়নের সম্ভাব্য চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী জননেতা এডভোকেট তাহের আহমদ সিকদার, শহর সেক্রেটারি মুহাম্মদ শাহজাহান, পরিবহন অঞ্চল সেক্রেটারি হাজ্বি ছৈয়দ নুর।
শহর সিনিয়র সহ-সভাপতি এম ইউ বাহাদুরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিলে উপস্থিত ছিলেন- শহর শাখার সহ-সেক্রেটারি আমীর আহমদ, সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ আলম মাসুদ, আবুল মনছুর, শ্রমিকনেতা বেলাল হোসেন, জয়নাল আবেদীন নুরী, আবুল বশর প্রমূখ।