সিবিএন ডেস্ক:
বাংলাদেশে করোনাভাইরাসে তরুণদের সংক্রমণের হার বেড়েছে। বিভিন্ন কাজকর্মে ঘরের বাইরে ও জনসমাগমস্থলে তরুণদের বেশি যেতে হয়, তাই করোনায় তরুণদের সংক্রমণ বেশি হচ্ছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

প্রাণঘাতী ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হযে তরুণদের মৃত্যুর সংখ্যাও বাড়ছে, যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক বলেও মনে করছেন তারা।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দেওয়া তথ্য মতে মঙ্গলবার (২০ এপ্রিল) দেশে করোনায় আক্রান্ত আরও ৯১ জনের মৃত্যু হয়েছে। মৃতদের বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায়, ৬০ বছরে ঊর্ধ্বে ৫৪ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ১৮ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ১১ জন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ৭ জন, ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে ১ জন রয়েছে।

সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) বয়সভিত্তিক একটি বিশ্লেষণে দেখা যায়, দেশে করোনাভাইরাসে মোট আক্রান্তের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৫৪ দশমিক ৭ শতাংশের বয়স ২১ থেকে ৪০ বছর। এর মধ্যে ২৭ দশমিক ৬ শতাংশের বয়স ২১ থেকে ৩০ বছর এবং ৩১ থেকে ৪০ বছর বয়সী মানুষ রয়েছে ২৭ দশমিক ১ শতাংশ।

করোনাভাইরাসে যুবকদের আক্রান্তের কারণ জানতে চাইলে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের উপদেষ্টা এবং সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. মুশতাক হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, আক্রান্তদের মধ্যে অপেক্ষাকৃত তরুণ এবং যুবকরাই বেশি। খেটে খাওয়া কর্মক্ষম ব্যক্তিদের অধিকাংশই তরুণ এবং যুবক। প্রায় প্রতিটা পরিবার তরুণ এবং যুবকদের আয় রোজগারের ওপর নির্ভরশীল। তাই অধিকাংশ তরুণ এবং যুবকদের জীবিকার জন্যে কাজেকর্মে বাইরে যেতেই হয়। তাই তারা আক্রান্তও বেশি হচ্ছেন।

হেলথ অ্যান্ড হোপ স্পেশালাইজড হাসপাতালের পরিচালক ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. লেনিন চৌধুরী বলেন, লকডাউন বা অন্য সময়েও তরুণ এবং যুবকদের বাইরে বা ভিড়ের মধ্যে বেশি যেতে হয়। বিভিন্ন অফিসের কাজেও তারা বেশি যুক্ত বয়স্কদের থেকে। ফলে এই বয়সীরা সংক্রমণের স্বীকার বেশি হচ্ছে। এছাড়াও যুবক এবং তরুণরা যখন নিজেদের বাসা বাড়িতে ফেরেন, তখন তাদের পরিবারের বয়স্করাও আক্রান্ত হন। আমরা দেখছি করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে এখনও ষাটোর্ধ্ব মানুষের সংখাই বেশি।

এ জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ আরও বলেন, আমরা দেখছি অপেক্ষাকৃত তরুণ, যুবক এবং কম বয়সীরাও বর্তমানে করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা যাচ্ছেন। ফলে মোট জনগোষ্ঠীর বেশিরভাগ অংশ তরুণ এবং যুবক থাকার ফলে করোনায় জনসংখ্যার দিক থেকে আমরা যে সুবিধাজনক একটি জায়গায় ছিলাম সেই জায়গাটাও আক্রান্ত হতে যাচ্ছে, যা আমাদের দেশের জন্য অত্যন্ত বিপদ এবং উদ্বেগজনক।