আবুল কালাম, চট্টগ্রাম:

রেমিটেন্স যোদ্ধাদের জন্য চালু করা বিশেষ ফ্লাইট তাদের ‘‘মরার উপর খাঁড়ার ঘা” তে পরিণত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সাবেক প্রশাসক এবং চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি খোরশেদ আলম সুজন।

মঙ্গলবার (২০ এপ্রিল ) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে তিনি এ মন্তব্য করেন।

এ সময় তিনি বলেন, করোনা মহামারীতেও প্রবাসীরা দেশে রেকর্ড পরিমাণ রেমিটেন্স পাঠিয়ে দেশের অর্থনীতির চাকাকে গতিশীল রেখেছে। তাই দেশে ছুটিতে আসা যেসব প্রবাসী কর্মী লকডাউনের কারণে আটকা পড়েছেন তাদের জন্য বিশেষ ফ্লাইট চালুর ঘোষণা দিয়েছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্যি যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শিতাপূর্ণ সিদ্ধান্তটি আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারণে প্রবাসীরা ভোগ করতে পারছে না।

দেখা যাচ্ছে যে বিশেষ ফ্লাইটের টিকেট বাবদ প্রবাসীদের কাছ থেকে দুই থেকে তিনগুণ ভাড়া আদায় করা হচ্ছে যা অত্যন্ত হৃদয়বিদারক। অতিসত্বর অতিরিক্ত ভাড়া আদায় বন্ধে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি। এছাড়া প্রবাসী যাত্রীদেরকে বিশেষ ফ্লাইটের সিডিউল দিয়েও আবার সিডিউল বাতিল করা হয়েছে। এতে করে লকডাউনকালীন পরিস্থিতিতে যাত্রীরা মাত্রাতিরিক্ত ভোগান্তি স্বীকার করে বিমানবন্দরে গেলেও বিষন্ন বদনে ফিরে আসতে হয়েছে। প্রবাসীদের সাথে এ ধরনের আচরণ সত্যিই দুঃখজনক।

আমরা জানি যে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির অন্যতম প্রধান চালিকাশক্তি হচ্ছে প্রবাসী আয়। বর্তমানে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের দক্ষ ও অদক্ষ সন্তানরা ঐসব দেশের উন্নয়নে ব্যাপক অবদান রাখছে। তারা রাষ্ট্র কিংবা সরকারের কোন প্রকার আর্থিক সহযোগিতা ছাড়াই সম্পূর্ণ নিজ উদ্যোগে দেশের উন্নয়নে তাদের হাতকে প্রসারিত করেছে। বিগত এক বছর ধরে বেশিরভাগ প্রবাসীই চাকুরি এবং ব্যবসা হারিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে। অনেকে ছুটি নিয়ে দেশে এলেও ফ্লাইটের জন্য সঠিক সময়ে কর্মস্থলে ফিরে যেতে পারছে না। এতে করে তারা চাকুরি হারানোর গভীর শংকার মধ্যে রয়েছেন।

তিনি আগামীকাল ২১ এপ্রিলের বহুল প্রতিক্ষিত চট্টগ্রাম-জেদ্দা ফ্লাইট বাতিল হওয়ায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি ফ্লাইট নিয়ে সৃষ্ট জটিলতা নিরসন করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে স্বাভাবিক ফ্লাইট চালু করার জন্য বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রী এবং বিমান বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের নিকট সবিনয় অনুরোধ জানান। এছাড়া তাদের অতিরিক্তি ওজন চার্জের নূন্যতম মাশুল নির্ধারন করারও আহবান জানান তিনি।

এছাড়া মধ্যপ্রাচ্যে যে সকল প্রবাসী অবস্থান করছেন তাদেরকে সপ্তাহে সপ্তাহে চেকিং করছে সে দেশের সরকার। আবার অনেক প্রবাসী ইতিমধ্যে কোভিডের ২য় ডোজও সম্পন্ন করেছেন। আবার তারা দেশে আসার সময় করোনা নেগেটিভ সনদও সংগ্রহ করে নিয়ে আসছেন। এমতাবস্থায় তাদেরকে বিমানবন্দরে নেমে নিজ খরচে কোয়ারেন্টাইনে থাকার নির্দেশনা প্রদান করেছে সরকার, যা তাদের জন্য ব্যয়সাপেক্ষ। তাই মধ্যপ্রাচ্য থেকে দেশে আসা প্রবাসীদের তাদের নিজ নিজ বাড়িতে প্রশাসনের সহযোগিতায় কোয়ারেন্টাইনের ব্যবস্থা করার জন্যও অনুরোধ জানান তিনি। এছাড়া ইউরোপ কিংবা আমেরিকা থেকে যে সকল প্রবাসী দেশে আসবেন তাদেরকে সরকার নির্ধারিত ব্যবস্থায় কোয়ারেন্টাইনে রাখার আহবান জানান তিনি। তিনি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সদিচ্ছাকে যাতে কেউ ধুলিস্যাত করতে না পারে সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখার জন্য সকলের প্রতি সবিনয় অনুরোধ জানান।