মুহিববুল্লাহ মুহিব :

কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের লাবনী পয়েন্ট মোড়ে থাকেন ছিন্নমুল শিশু স্বপ্না (১৪) (ছদ্দনাম)। বাবা-মা না থাকায় সৈকতে নানা সামগ্রী বিক্রি করে চলতো স্বপ্নার জীবন। কিন্তু লকডাউনের কারণে সে বেকার হয়েপড়ে।

সে কারণে রোজা রেখেও ইফতার করার টাকা না থাকায় লাবনী মোড়ে ঘুরাঘুরি করছিল। ঠিক সে মুহুর্তে তাকে ডেকে নিয়ে যায় লাবনী মোড়ের চিটাগাং রেস্টুরেন্ট এন্ড বিরানী হাউস নামে একটি খাবার হোটেলের কারিগর মোহাম্মদ মাসুদ। সেখানে এক পর্যায়ে কৌশলে স্বপ্নার সঙ্গে শারীরিক মেলামেশার চেষ্টা করে মাসুদ। কিন্তু স্বপ্নার চিৎকারে আশে-পাশের লোকজন এগিয়ে এসে তাকে বের করে আনে।

বৃহস্পতিবার সন্ধার পর লাবনী মোড়ে কান্নাজড়িত কন্ঠে এসব কথা বলছিল ছিন্নমুল শিশু স্বপ্না (ছদ্দনাম)।

স্বপ্না আরও বলেন, মাসুদ তার অসহাত্বের সুযোগে যৌন মিলনে বাধ্য করার চেষ্টা করেছে। তাকে ইফতার করানোর কথা বলে হোটেলের ভেতর নেয়া হয়। ইফতার না করিয়ে উল্টো অবৈধ মেলামেশা করতে বাধ্য করার চেষ্টা করে মাসুদ।

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়দের দাবি, শুধু স্বপ্ন নয় রাত হলেই হোটেলটিতে বসে মদ, গাঁজা, ইয়াবা সেবনের হাট। এসময় আশে-পাশের ছিন্নমুল শিশুদের এনে যৌন মিলনে বাধ্য করে হোটেলটির স্টাফরা।

এসব নিয়ে কথা বলতে গেলে হোটেলটির ব্যবস্থাপক দিলীপ কুমার দাশ দ্রুত মাসুদকে পালিয়ে যেতে সহযোগীতা করে এবং গণমাধ্যমের সাথে কথা না বলার নির্দেশ দিয়ে অন্যত্র পাঠিয়ে দেয়।

এ বিষয়ে দিলীপ কুমার দাশের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি জানাজানির পর ওই কারিগরকে হোটেল থেকে বের করে দিয়েছি। এখন সে আমাদের স্টাফ নয়। তবে নিয়মিত ছিন্নমূল শিশুদের যৌন হয়রানীর বিষয়টি অস্বীকার করেন তিনি।

বিষয়টি নজরে আনা হয় জেলা প্রশাসনের পর্যটন সেলের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মাখন চন্দ্র সুত্র ধরের। তিনি এবিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানান।

পর্যটন কর্পোরেশন থেকে হাসেম নামে এক ব্যক্তি ইজারা নেয়। কিন্তু কয়েক দফা উপ-ভাড়া দিয়ে আসছিল জায়গাটি। সবশেষ মিন্টু দাশ নামে ব্যক্তি উপ ভাড়া নিয়ে হোটেলটি চালু করে। সম্প্রতি সড়ক উন্নীত করণের ফলে এটি বহু আগে সরানোর কথা থাকলেও রহস্যজনককে কারণে সরানো হয়নি। একই সঙ্গে লকডাউনে সবকিছু বন্ধের নির্দেশ থাকলেও এই হোটেলে চলে অবৈধ কার্যকলাপ।