প্রেস বিজ্ঞপ্তিঃ
শিক্ষাঙ্গনে “জলবায়ু ক্লাব” গড়ার স্বপ্ন এখন অনেকটা বাস্তবে রূপ নিয়েছে। ৯ এপ্রিল সামাজিক দূরত্ব এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীর নিয়ে শুরু হয় “জলবায়ু ক্লাব” এর অগ্রযাত্রা। এতে অংশ নেয় কক্সবাজার সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়, কক্সবাজার সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, কক্সবাজার কে.জি এন্ড মডেল হাই স্কুল, বায়তুশ শরফ জব্বারিয়া একাডেমী, কক্সবাজার সরকারি কলেজ, কক্সবাজার সিটি কলেজ, কক্সবাজার সরকারি মহিলা কলেজ, কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এবং ঢাকার নর্থ-সাউথ ইউনিভার্সিটির প্রায় ৩৫জন ছাত্র-ছাত্রী।

ইপসা – এক্টিভ সিটিজেনস ডিজিটাল মডেল ও চ্যালেঞ্জ ফান্ড প্রকল্পের আওতায় এবং ব্রিটিশ কাউন্সিল বাংলাদেশের অর্থায়নে শিক্ষাঙ্গনে “জলবায়ু ক্লাব” বাস্তবায়নে কাজ করছে “ক্লাইমেট জাস্টিস বাংলাদেশ” এর একঝাক জলবায়ুকর্মী।

প্রকৃতির অপার লীলাভূমি এবং পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত হিসেবে কক্সবাজার প্রসিদ্ধ। কিন্ত বর্তমানে কক্সবাজার হুমকির সম্মুখীন কেননা বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের অন্যতম ঝুঁকিপূর্ণ দেশের তালিকায় রয়েছে বাংলাদেশ আর বাংলাদেশের একমাত্র উপকূলীয় শহর হলো কক্সবাজার। এজন্য বিশ্বব্যাপী জলবায়ু ন্যায্যতার জন্য ঝুঁকির সম্মুখীন জনগোষ্ঠীকে সচেতন করে তোলা খুবই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে পড়েছে। দুঃখজনক বিষয় হলো, উপকূলবর্তী জনগোষ্ঠী সর্বোপরি কক্সবাজারের সিংহভাগ জনগণই জলবায়ু পরিবর্তন এবং ন্যায্যতার ব্যাপারে অজ্ঞ। এছাড়াও পাঠ্যবইতে জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কে পাঠ না থাকায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে জ্ঞান রয়ে যাচ্ছে অপ্রাচুর্য।

“ক্লাইমেট জাস্টিস বাংলাদেশ” একটি যুব সংগঠন, যা দীর্ঘদিন ধরেই টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে “জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এ সংগঠনটি নিয়মিত জলবায়ু ন্যায্যতা ও সুবিচার নিশ্চিত করার জন্য আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কাজের পাশাপাশি যুব নেতৃত্ব বিকাশে কাজ করে যাচ্ছে। তারই ধারাবাহিকতায় কক্সবাজারের শিক্ষার্থীদের তথা ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে জলবায়ু ন্যায্যতার বিষয়ে জ্ঞাত করতে এবং এ বিষয়ে দক্ষতা উন্নয়নের জন্য কক্সবাজারের প্রতিটি শিক্ষাঙ্গনে ‘জলবায়ু ক্লাব’ প্রতিষ্ঠার জন্য একটি টেকসই উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এ ক্লাবের মধ্যে নিয়মিত কর্মসূচি পালনের মাধ্যমে কক্সবাজারের প্রতিটি শিক্ষাঙ্গনে জলবায়ু ন্যায্যতার কান্ডারী হিসেবে গড়ে তুলবে এমন কিছু উদ্যমী শিক্ষার্থীদের, যারা অদূর ভবিষ্যতে কক্সবাজারকে আগত বিপদের হাত থেকে রক্ষা করতে কাজ করবে। উক্ত লক্ষ্য বাস্তবায়নে ক্লাবের সদস্যদের সাপ্তাহে একদিন করে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে এবং প্রতিটি শিক্ষাঙ্গনের একজন বিশেষজ্ঞ শিক্ষকের মাধ্যমে পাঠদান করার পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে, যা কক্সবাজারের শিক্ষার্থীদের দক্ষতা উন্নয়নের পাশাপাশি কক্সবাজারের নিরাপদ ভবিষ্যত নিশ্চিতকরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। এখানে আরো উল্লেখ্য যে, “জলবায়ু ক্লাব” এসডিজি গোল ১৩ অর্জনে সরাসরি ভূমিকা রাখবে।

এ বিষয়ে ‘ক্লাইমেট জাস্টিস বাংলাদেশ’ এর প্রতিষ্ঠাতা জলবায়ুযোদ্ধা জাবেদ নূর শান্ত বলেন, বাংলদেশ এর একমাত্র উপকূল শহর হলো কক্সবাজার। এই শহরের প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়ালেখার পাশাপাশি মৌলিক কার্যক্রমের অংশ হিসেবে “জলবায়ু ক্লাব” এর প্রয়োজনবোধ করছিলাম। অবশেষে ইপসা – এক্টিভ সিটিজেনস ডিজিটাল মডেল ও চ্যালেঞ্জ ফান্ড প্রকল্পের আওতায় এবং ব্রিটিশ কাউন্সিল বাংলাদেশের অর্থায়নে আমাদের বহুদিনের স্বপ্ন এখন রূপ নিয়েছে বাস্তবে।

তিনি আরো বলেন, আমরা প্রায় সময় সমস্যা নিয়েই আলোচনা-সমালেচনা করে থাকি। এ কারণে সমাধান নিয়ে তেমন একটা ভাবতে পারিনা। বর্তমানে তরুণ সমাজ বেশ সচেতন। আমি বিশ্বাস করি, জলবায়ু ক্লাব প্রতিষ্ঠার পর থেকেই জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কে তরুণরা এখন বেশ ভাবতে শুরু করেছে। জলবায়ু ক্লাবের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা জলবায়ু পরিবর্তনভিত্তিক স্থানীয় বাস্তবিক যেকোন বিষয়ে জ্ঞান আহরণ করতে পারবে। সর্বোপরি, সকলে মিলে জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় অংশগ্রণ নিশ্চিত করলে এসডিজি অর্জনে পিছিয়ে পরবে না তরুণ সমাজ।

করোনা সংকট কিছুটা কেটে গেলেই স্থানীয় নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ের সকলকে সাথে নিয়ে “জলবায়ু ক্লাব” এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হতে পারে বলে জানা যায়।