আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

চলতি সপ্তাহ থেকে পবিত্র মাহে রমজান শুরু হচ্ছে। বিশ্বের শত কোটি মুসলিম ধর্মাবলম্বী আগামী এক মাস রোজা রাখবেন। করোনাকালে রোজা শুরু হওয়ায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) বিশেষজ্ঞরা নির্দেশিকা জারি করে জানিয়েছেন, রোজা রাখার মাধ্যমে কেউ করোনার বিস্তার ঘটায় না। সুস্থ মানুষের জন্য রোজা রাখা নিরাপদ।

ডব্লিউএইচও রমজান উপলক্ষে গত ৭ এপ্রিল জারি করা ওই বিশেষ নির্দেশনায় জানিয়েছে, যারা দীর্ঘ সময় ধরে করোনায় ভুগছেন (সুস্থ হওয়ার পরও যাদের দেহে ভাইরাসটির উপসর্গ রয়েছে) তারাও রোজা রাখতে পারবেন। তবে রোজা রাখা অবস্থায় তাদের উপসর্গ যদি গুরুতর আকার ধারণ করে, তাহলে রোজা ভাঙতে পারবেন তারা।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা রোজার সময় করোনার টিকা নেওয়ারও সুপারিশ করেছে। এর পেছনে যুক্তি দিয়ে সংস্থাটির বিশেষজ্ঞ প্যানেল জানিয়েছে, করোনার টিকা ‘ইন্ট্রামাসকুলার ইনজেকশন’ এবং মুসলিম ধর্মীয় পণ্ডিতরা করোনার টিকাকে পুষ্টির পরিপূরক হিসেবে বিবেচনা করেন না।
মহামারির দ্বিতীয় বছরে নিরাপদভাবে রমজান পালনের বিষয়ে ডব্লিউএইচও তাদের পরামর্শে আরও বলেছে, ‘রোজা রাখলে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়তে পারে, এমন কোনো প্রমাণ নেই। এছাড়া করোনার টিকা নেওয়ার পর দীর্ঘমেয়াদে আপানার দেহে উপসর্গ থাকলে, ধর্মমতে আপনি রোজা ভেঙে ফেলতেও পারবেন।’

রোজায় টিকা নেওয়ার বিষয়ে ডব্লিউএইচও বলছে, শরিয়াহ অনুযায়ী রোজা রেখে করোনার টিকা নেওয়া যাবে। এছাড়া বিভিন্ন দেশের ইসলামী কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, করোনার টিকা নেওয়া ‘ইন্ট্রামাসকুলার ইনজেকশন’। রোজা রেখে টিকা নেওয়াটা ধর্মের খেলাপ হবে না। অতএব টিকা নিলে সমস্যা নেই।’
যদিও প্রাথমিক প্রমাণ থেকে জানা এটা যায় যে টিকা নেওয়া ব্যক্তিদের মাধ্যমে টিকা না নেওয়াদের করোনায় সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকি খুব কম, তারপরও ডব্লিউএইচও’র পরামর্শ, তাদের কমপক্ষে এক মিটারের শারীরিক দূরত্ব, শ্বাস-প্রশ্বাসের শিষ্টাচার ও হাত ধোঁয়াসহ স্বাস্থ্যবিধি-সতর্কতা মেনে চলা ও মাস্ক পরার নির্দেশনাও মেনে চলা উচিত।

ডব্লিউএইচও জানিয়েছে, করোনায় সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকি শূন্য বলে কোনো কিছু নেই। যারা টিকা নেওয়ার যোগ্য, রমজানেও তাদের টিকা নেওয়ার ব্যাপারে উৎসাহী হওয়া উচিত। এতে তারা ও তাদের কমিউনিটির মানুষজন মহামারি এই ভাইরাসটির প্রকোপ থেকে নিরাপদ থাকবে।

জাতিসংঘের স্বাস্থ্য বিষয়ক এই অঙ্গসংস্থাটি ধর্মীয় নেতাদের করোনার সময় টিকা নেওয়ার পক্ষে প্রচারণা চালানোর এবং টিকাদান কর্মসূচিতে বিঘ্ন ঘটে এমন কিছু না করা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ, ‘২০২০ সালে রমজান-সম্পর্কিত ক্রিয়াকলাপের সাথে জড়িত কোভিড-১৯ আক্রান্তের তীব্রতা এবং অতিরিক্ত অনিশ্চয়তায় থাকা মানুষজন (আপনারা যদি অসুস্থ বোধ করেন বা যদি আপনি উচ্চ ঝুঁকিতে থাকা গ্রুপে থাকেন তবে) ধর্মীয় সমাগমে অংশ নেওয়া থেকে অবশ্যই বিরত থাকুন। ডিজিটাল যোগাযোগ মাধ্যম এবং প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে অন্যের সাথে যোগাযোগ করুন এবং যোগাযোগের জন্য নতুন উপায় সন্ধান করুন।’