বিদেশ ডেস্ক:

নিরাপত্তা বাহিনীর অব্যাহত নিপীড়নের মুখে মিয়ানমারের রাজপথে বড় বিক্ষোভ করা দুঃসাধ্য হয়ে উঠেছে। ফলে জান্তা সরকারের বিরোধিতা করতে অনলাইনে ঝুঁকছে মানুষ। ইন্টারনেট বন্ধসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়ে সেই সমালোচনা বন্ধে ব্যর্থ হয়ে জান্তা সরকার এবার সমালোচকদের বিরুদ্ধে একের পর এক গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করছে। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।

মিয়ানমারের অধিকার রক্ষা গ্রুপ অ্যাসিসট্যান্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল পিজনার্স (এএপিপি) শনিবার জানিয়েছে, গত ১ ফেব্রুয়ারি অং সান সু চির নেতৃত্বাধীন নির্বাচিত সরকারকে সেনাবাহিনী উৎখাত করার পর থেকে এখন ৫৫০ জনকে হত্যা করেছে নিরাপত্তা বাহিনী। এর মধ্যে ৪৬ হন শিশু। শুক্রবারও দুই বিক্ষোভকারীকে হত্যা করা হয়েছে।

অব্যাহত নিপীড়নের মুখেও প্রতিদিনই দেশটির বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভ করছে অভ্যুত্থানবিরোধীরা। রাজপথে বড় বিক্ষোভ দুঃসাধ্য হয়ে ওঠায় গেরিলা বিক্ষোভের দিকে ঝুঁকছেন তারা। নিরাপত্তা বাহিনী চলে আসার আগেই ছোট ছোট দলে সমবেত হয়ে বিক্ষোভ অব্যাহত রাখছেন তারা। রাতের বেলা মোম জ্বালিয়েও নিয়মিত বিক্ষোভ হচ্ছে।

রাজপথে বড় বিক্ষোভ করতে না পারায় অনলাইনে বেড়েছে সেনা অভ্যুত্থানের বিরোধিতা। আর তা দমর করতে প্রথমেই বন্ধ করে দেওয়া হয় মোবাইল ইন্টারনেট সেবা। তাতেও সন্তুষ্ট না হয়ে শুক্রবার থেকে তারবিহীন ব্রডব্রান্ড ইন্টারনেটও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ফলে মিয়ানমারের বেশিরভাগ মানুষই এখন ইন্টারনেট সেবা থেকে বঞ্চিত রয়েছেন। তবে তাতেও থেমে নেই জান্তা সরকার।

শুক্রবার রাতে রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের খবরে বলা হয়েছে, সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের বিদ্রোহ এবং কর্তব্য থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানানোয় ১৮ জন সেলিব্রেটি এবং দুই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।

তাদের প্রত্যেকেই সেনা শাসনের বিরোধিতার জন্য পরিচিত। তাদের এক জন অভিনেত্রী পাইং ফিয়ো থু জানিয়েছেন, এতে ভীত হবেন না তিনি। তিনি বলেন, ‘গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হোক বা না হোক, যতক্ষণ বেঁচে আছি ততক্ষণ মানুষ হত্যাকারী এবং নিপীড়নকারী সামরিক স্বৈরশাসনের বিরোধিতা করে যাবো।’

অভ্যুত্থানের পর থেকে নিয়মিতভাবে ইয়াঙ্গুনের রাজপথে বিক্ষোভে শামিল থেকেছেন অভিনেত্রী পাইং ফিয়ো থু। তার স্বামী ও চলচ্চিত্র পরিচালক না গায়ীকে গত ফেব্রুয়ারি থেকেই খুঁজছে সেনা কর্তৃপক্ষ। গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির পর অভিনেত্রী পাইং ফিয়ো থু কোথায় আছেন তা জানা যায়নি। তবে এখনও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করছেন তিনি। কিন্তু মিয়ানমারের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারীরা গত শনিবার থেকেই কোনও কিছু পোস্ট করতে পারছেন না।