সিবিএন ডেস্ক:
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে ধারণক্ষমতার অর্ধেক যাত্রী পরিবহনের শর্তে গণপরিবহনে ৬০ ভাগ ভাড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। তবে সে সিদ্ধান্ত মানছে না অধিকাংশ গণপরিবহন। আবার কিছু পরিবহন অর্ধেক যাত্রী নিলেও তাদের বিরুদ্ধে বাড়তি ভাড়া আদায়ের অভিযোগ উঠেছে।

বুধবার (৩১ মার্চ) রাজধানীর যাত্রাবাড়ি, চানখারপুল, গুলিস্তান, পল্টন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, গণপরিবহনে স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না। অর্ধেক যাত্রী পরিবহনের বদলে দাঁড়িয়ে আবার কোনো কোনো জায়গায় ঝুলে যাত্রীরা গণপরিবহনে চলাচল করছেন।

তবে নীলাচল, মনজিল, হিমাচল, ঢাকার চাকাসহ বেশি কিছু পরিবহন অর্ধেক যাত্রী নিয়ে চলাচল করছে। কিন্তু এর মধ্যে অধিকাংশ পরিবহনের বিরুদ্ধে বাড়তি ভাড়া নেয়ার অভিযোগ করেছেন যাত্রীরা। তারা বলছেন, সরকার ৬০ শতাংশ ভাড়া বাড়ালেও পরিবহনগুলো ভাড়া দ্বিগুণ করেছে।

বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত মিরাজ ফকির জাগো নিউজকে বলেন, কাজলা থেকে কলাবাগান বাস ভাড়া ২৫ টাকা। কিন্তু আজকে ভাড়া নিল ৫০ টাকা। এক সিট খালি রেখে বসা সাপেক্ষে সরকার ৬০ শতাংশ ভাড়া বাড়ালেও গাড়িতে অনেক বেশি ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। আর গাড়ির সংকটও অনেক বেশি। অন্যদিন কোনোভাবে দাঁড়িয়ে যেতে পারলেও আজ আধা ঘণ্টার বেশি সময় দাঁড়িয়েও গাড়িতে উঠতে পারিনি। তাই বাধ্য হয়ে এই গাড়িতে উঠলাম।

নীলাচল পরিবহনের হেলপার সাগর বলেন, আমরা সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ভাড়া ৬০ শতাংশ বাড়িয়েছি। তবে লোকাল কিছু যাত্রী নিলে সেক্ষেত্রে এই হিসাব রাখা যায় না, তখন একটু বেশিই ভাড়া নিচ্ছি। তবে আমার ওয়েবিলের হিসাব অনুযায়ী যারা যাচ্ছে তাদের কাছ থেকে ৬০ শতাংশ ভাড়াই বাড়তি নিচ্ছি, বেশি নিচ্ছি না। নইলে আমার জরিমানা হবে।

এদিকে গণপরিবহনে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিষয়ে সরকারের নির্দেশনার পর প্রথম কর্মদিবসে যানবাহন সংকট দেখা গেছে। অন্যান্য দিনের তুলনায় কিছু কিছু জায়গায় সড়কে কম সংখ্যক যান চলাচল করছে। আবার কিছু গাড়ি সরকারি নির্দেশনা মেনে অর্ধেক যাত্রী পরিবহন করায় যাত্রীরা যানবাহন সংকটে পড়েছেন।

বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত আরেক যাত্রী মো. কামরুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করে গাড়ি পাচ্ছিলাম না। কিছুক্ষণ আগে গাড়ি পেলেও ভাড়া দিগুণ। আসলে অর্ধেক যাত্রী পরিবহনে সরকার নির্দেশ দিলেও যানবাহন তো দ্বিগুণ হয়নি, ফলে গাড়ির সংকট বেড়েছে। আসলে এভাবে অর্ধেক যাত্রী নিয়ে যানবাহন চলাচলের চেয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সব সিটে যাত্রী পরিবহন করা যায়। কারণ সাধারণ সময়ই আমরা দাঁড়িয়ে বা ঝুলে চলাচল করি, সেখানে অর্ধেক যাত্রী নিলে গাড়ি সংকট হওয়া স্বাভাবিক।

তিনি কিছুটা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, মার্কেট, বাজারে তো স্বাস্থ্যবিধির বালাই নেই; সব স্বাস্থ্যবিধি গণপরিবহনে পালন হলেই তো করোনা চলে যাবে না।

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে শারীরিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে ধারণক্ষমতার অর্ধেক যাত্রী পরিবহন করায় গণপরিবহনে ৬০ ভাগ ভাড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। বুধবার (৩১ মার্চ) থেকে এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়েছে এবং পরবর্তী দুই সপ্তাহ তা বহাল থাকবে বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।