সিবিএন ডেস্ক:
কন্যাশিশুর নিরাপত্তা নিশ্চিত হলে বাল্যবিয়ে কমবে বলে কোস্ট ফাউন্ডেশনের গবেষণা প্রতিবেদনের সুপারিশে উল্লেখ করা হয়েছে। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জাতীয় পর্যায়ে বাল্যবিয়ে কমলেও, ভোলা জেলায় এখানো বাল্যবিয়ের হার উদ্বেগজনক। সেখানে ১৫ বছরের কম বয়সীদের বিয়ের হার প্রায় ১৯ শতাংশ। অথচ দেশে বাল্যবিয়ের গড় হার সাড়ে ১৫ শতাংশ। আর ১৮ বছরের কম বয়সীদের বিয়ের জাতীয় হার ৫১ দশমিক ৪ শতাংশ হলেও, ভোলায় এই হার ৬০ দশমিক ৩ শতাংশ।

শনিবার এক ওয়েবিনারে ওই গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়।

কোস্ট ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক রেজাউল করিম চৌধুরীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত ‘শিশু বিয়ের কারণ, প্রভাব ও প্রতিরোধের উপায়’ শীর্ষক ওয়েবিনারে আলোচনায় অংশ নেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মেহের আফরোজ চুমকি, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের শিশু সুরা প্রকল্পের পরিচালক এস এম লতিফ, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম, নারীপরে সদস্য শিরীন হক, ইউনিসেফ বাংলাদেশের শিশু সুরা প্রধান নাতালি ম্যাককাউলি, শিশু সুরা বিশেষজ্ঞ মুনিরা হাসান, ইউনিসেফ বরিশাল বিভাগের ফিল্ড প্রধান এ এইচ তৌফিক আহমেদ ও কোস্ট ফাউন্ডেশনের যুগ্ম পরিচালক ইকবাল উদ্দিন, ভোলার মনপুরা ইউপি সদস্য সুলতানা রাজিয়া, লালমোহনের ইউপি সদস্য মো. কামাল উদ্দিন মিঝি, চরফ্যাশনের ভাইস চেয়ারম্যান আকলিমা বেগম প্রমুখ।

আলোচনায় অংশ নিয়ে সংসদ সদস্য মেহের আফরোজ চুমকি বলেন, সরকারের অনেক উদ্যোগের পরেও সমাজে মেয়েদের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গিজনিত সমস্যা রয়েছে। এই সমস্যা সমাধানে মেয়েদেরকে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী ও শিতি করে তুলতে হবে। বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে ইউপি মেম্বার-চেয়ারম্যানসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সক্রিয় ভূমিকা রাখতে হবে।

রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, বাল্যবিয়ে বন্ধে জরুরি ভিত্তিতে স্থানীয় প্রশাসন ও ইউনিয়ন পরিষদকে সক্রিয় করতে হবে। এছাড়া গ্রামে গ্রামে কমিটি গঠন, নিরাপত্তা বৃদ্ধি, উপবৃত্তির আওতা ও টাকার পরিমাণ বৃদ্ধি, ভূয়া জন্ম নিবন্ধন বন্ধ এবং রেজিস্টার্ড কাজী ছাড়া বিয়ে পড়ানো বেআইনী মর্মে প্রচারণা বৃদ্ধি করতে হবে।

গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, বাল্যবিয়ের কারণগুলোর মধ্যে অভিভাবকদের মধ্যে ‘নিরাপত্তাহীনতা’ একটি বড় কারণ। গবেষণায় অংশ নেওয়া ৪১ দশমিক ৬ শতাংশ মানুষ নিরাপত্তাহীনতাকে বাল্যবিয়ের কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। এছাড়া মতামত প্রদানকারীদের মধ্যে ৪১ শতাংশ পারিবারিক সম্মান রা, ৪৭ শতাংশ ভালোপাত্র পেলে বিয়ে দেওয়া, ৪৫ শতাংশ সচেতনতার অভাব ও ৫১ শতাংশ দারিদ্র্যতাকে বাল্যবিয়ের কারণ বলে মনে করেন।