মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী :

বায়তুশ শরফের প্রধান রূপকার হাদিয়ে যামান শাহসূফী হযরত মাওলানা মোহাম্মদ আবদুল জব্বার (রাহ.) ২৩তম ওফাত বার্ষিকী আজ। ২৩ বছর পূর্বে ১৯৯৮ সালের এ দিনে চট্টগ্রামশহরের ধনিয়ালাপাড়াস্থ বায়তুশ শরফ কমপ্লেক্সের নিজ হুজরাখানায় সকাল ৭ টার দিকে তিনি ইন্তেকাল করেন।

পরদিন চট্টগ্রাম রেলওয়ে পলোগ্রাউন্ড ময়দানে লক্ষ লক্ষ মুসল্লীর অংশগ্রহণে স্মরণকালের বৃহত্তম জানাযা শেষে তাকে কেন্দ্রীয় বায়তুশ শরফ মসজিদের দক্ষিণ পাশের নিজ ফুলবাগানে সমাহিত করা হয়।

ইসলামের এ মনীষী ১৯৩৩ সালের ১লা ফেব্রুয়ারী মায়ানমারের থাংগু জেলার পিনজুলুক রেল স্টেশন সংলগ্ন বাঙ্গালী কলোনীতে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর আব্বা মৌলভী ওয়াছি উদ্দীন (রাহ.) ও আম্মা বেগম ফিরোজ খাতুন (রাহ.)।

শাহসূফী হযরত মাওলানা মোহাম্মদ আবদুল জব্বার (রাহ.) ছিলেন যুগের অন্যতম আলেমে দ্বীন, পীর-এ কামেল। অরাজনৈতিক মসজিদ ভিত্তিক সমাজসেবার পুরোধা, শীরক-বিদআত-এর বিরুদ্ধে বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর। ইসলামী ব্যাংক, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ও ইসলামী শিক্ষার প্রচার ও প্রসারে নিবেদিত প্রাণ। দুঃস্থ মানবতার সেবায় সদা সক্রিয়।

তিনি তাঁর পীর-মুর্শিদ কুতুবুল আলম শাহসূফী হযরত মাওলানা মীর মোহাম্মদ আখতর (রাহ.) এর সুযোগ্য একমাত্র ইযাযত প্রাপ্ত খলিফা হিসেবে স্বীয় পীরের পদাঙ্ক অনুকরণ ও অনুসরণ করেন। ইন্তেকালের পূর্বে তিনি বাংলাদেশের জাতীয় পর্যায়ে অন্যতম শ্রেষ্ঠ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বায়তুশ শরফ আদর্শ কামিল (এম.এ) মাদরাসাসহ ১৬টি মাদরাসা, ১৮টি এতিমখানা ও হিফজখানা, বাংলাদেশের প্রধান প্রধান শহর, নগর, বন্দর, জনপদে ৬৫টি বায়তুশ শরফ মসজিদ এবং পর্যটন নগরী কক্সবাজারে ১টি পূর্ণাঙ্গ চক্ষু ও পঙ্গু হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করেন। এছাড়া তিনি উচ্চ মাধ্যমিক স্কুল, প্রাইমারী স্কুল, মহিলা কলেজ ও মাদরাসাসহ শতাধিক সমাজসেবা মূলক প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেন।

একজন সফল লেখক ও অনুবাদক হিসেবে তিনি ছোট বড় ২১ টি গ্রন্থ প্রণয়ন করেন। জীবনে ৩৩ বার পবিত্র হজ্বব্রত পালন করেন। তিনি বায়তুশ শরফ আনজুমনে ইত্তেহাদ বাংলাদেশ-এর সাংগঠনিক কার্যক্রম সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে দেয়ার লক্ষ্যে যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, বুলগেরিয়া, সৌদি আরব, কুয়েত, কাতার, ওমান, বাহরাইন, ইরাক, সিংগাপুর, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, ভারত ও পাকিস্তান ব্যাপকভাবে সফর করেন।