ফলোআপ

সুদের জন্য মহিলা নির্যাতন: ঘটনাস্থল পরিদর্শনে পুলিশ সুপার

প্রকাশ: ১৯ মার্চ, ২০২১ ১২:০৯

পড়া যাবে: [rt_reading_time] মিনিটে


চকরিয়া বরইতলীতে নির্যাতনের শিকার নারীর সঙ্গে কথা বলছেন পুলিশ সুপার মো.হাসানুজ্জামান

 

এম.জিয়াবুল হক,চকরিয়া :

চকরিয়া উপজেলার বরইতলী ইউনিয়নে সুদের দুই হাজার টাকার জন্য নুর আয়েশা (২৭) নামে এক গৃহবধুকে গাছের সাথে বেঁধে শাররীক নির্যাতনের ঘটনায় মামলা হয়েছে। নির্যাতনের শিকার গৃহবধু নুর আয়েশা বাদী হয়ে বুধবার রাতে চকরিয়া থানায় ৬ জনের বিরুদ্ধে এ মামলাটি দায়ের করেন। ওই মামলার এজাহারনামীয় দুই নম্বর আসামী জহির আহমদকে পুলিশ গ্রেপ্তার করলেও ঘটনার মূলহোতাসহ অন্য আসামীরা ধরা-ছোঁয়ার বাইরে রয়েছে।

এদিকে নারীকে নির্যাতনের ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম পরবর্তী গণমাধ্যমে প্রচারিত হবার পর গতকাল বৃহস্পতিবার (১৮ মার্চ) সকালে ঘটনাস্থলে পরির্দশন করেছেন কক্সবাজারের পুলিশ সুপার (এসপি) মো. হাসানুজ্জামান। তিনি এসময় ভিকটিম ওই নারী এবং তার পরিবারের সদস্য ও স্থানীয় লোকজনের সাথে কথা বলেন। পরিদর্শন শেষে তিনি ঘটনার সাথে জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তারপূর্বক শাস্তির আওতায় আনতে চকরিয়া থানা পুলিশকে নির্দেশ দেন।

ঘটনাস্থল পরিদর্শনকালে পুলিশ সুপারের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (চকরিয়া সার্কেল) মো. তফিকুল আলম ও চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাকের মোহাম্মদ যুবায়ের, বরইতলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জালাল আহমদ সিকদার, প্যানেল চেয়ারম্যান নিয়াজুল ইসলাম বাদল ছাড়াও এলাকাবাসি।

চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাকের মোহাম্মদ যুবায়ের বলেন, গৃহবধূর উপর শাররীক নির্যাতনের ঘটনার মুলহোতা মামলার এজাহার নামীয় ১ নম্বর আসামী শওকত ওসমান পলাতক রয়েছেন। তাকে গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

তবে এ মামলার ২ নম্বর আসামী জহির আহমদকে পুলিশ গ্রেপ্তারের পর বৃহস্পতিবার দুপুরে চকরিয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করা হলে বিজ্ঞ আদালত তাকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, কয়েক মাস পূর্বে গৃহবধু নুর আয়েশা তার স্বামীর চিকিৎসার জন্য ঘটনার মুলহোতা শওকত ওসমানের কাছ থেকে সুদের ওপর চার হাজার টাকা নেয়। পরবর্তীতে নুর আয়েশা সুদ ও আসলসহ আট হাজার টাকা পরিশোধ করেন। সর্বশেষ মঙ্গলবার দুপুরের শওকত ওসমান আরো দুই হাজার টাকা দাবি করেন নুর আয়েশার কাছ থেকে। তিনি ওই টাকা বৃহস্পতিবার দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও তা মানতে রাজি হয়নি শওকত ওসমান।

এনিয়ে দুইজনের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে শওকত ওসমান নুর আয়েশাকে একটি গাছের সঙ্গে শাড়ি দিয়ে বেঁধে শাররীক নির্যাতন ও অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে। এ ঘটনায় নির্যাতনের শিকার ওই গৃহবধূ কোথাও অভিযোগ না দেয়ায় বিষয়টি গোপন থাকে।

তবে বুধবার গৃহবধুকে গাছের সাথে বেঁধে শাররীক নির্যাতনের ভিডিও চিত্রটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে পড়লে নজর আসে প্রশাসনের। পরে পুলিশ তৎপর হয়ে একজন আসামীকে গ্রেপ্তার করে। বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও নিন্দার ঝড় উঠে। নির্যাতনের শিকার নুর আয়েশা উপজেলার বরইতলী ইউনিয়নের ৮নম্বর ওয়ার্ডের হাফিলিয়াকাটা এলাকার দিনমজুর আলী আহমদের স্ত্রী। ঘটনার মুলহোতা শওকত ওসমান একই এলাকার জহির আহমদের ছেলে।