চট্টগ্রাম প্রতিনিধি:

নোয়াখালীর ভাসানচরে কক্সাবাজারের শরণার্থী শিবির থেকে পাঠানো রোহিঙ্গাদের হালচাল দেখতে আসছেন জাতিসংঘের ১৭ জনের প্রতিনিধি দল।

বুধবার (১৭ মার্চ) সকালে নৌবাহিনীর তত্ত্বাবধানে ইউএনএইচসিআর বাংলাদেশের সহকারী প্রতিনিধি ফুমিকো কাশিওয়ার নেতৃত্বে চট্টগ্রাম থেকে রওনা হয়ে দুপুরে তাদের ভাসানচরে পৌঁছানোর কথা রয়েছে।

ভাসানচনে দু’দিন অবস্থান করে সেখানকার পরিবেশ-পরিস্থিতি ঘুরে দেখবেন প্রতিনিধি দলটি। সেখানে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে বৈঠক করার কথাও রয়েছে তাদের।

এর আগে ভাসানচর পরিদর্শন করেছিল মুসলিম দেশগুলোর জোট ওআইসির একটি প্রতিনিধি দল।

ভাসানচরে জাতিসংঘের প্রতিনিধি দল আসার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ভাসানচর প্রকল্পের (আশ্রয়ণ প্রকল্প-৩) উপ-প্রকল্পের পরিচালক কমান্ডার এম আনোয়ারুল কবির।

তিনি বলেন, আমরা সেভাবে প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি। তবে প্রতিনিধি দলটিতে কারা থাকছেন, সেটি এখন বলা যাচ্ছে না। দলটির রোহিঙ্গাদের সঙ্গে দেখার করা কথা রয়েছে।

আরআরআরসি কার্যালয়ের তথ্যমতে, গত ডিসেম্বর থেকে পাঁচ দফায় ভাসানচরে গেছেন মোট ১৩ হাজার ৭২৩ রোহিঙ্গা।

এর আগে গত বছরের মে মাসে অবৈধভাবে মালয়েশিয়া যাওয়ার চেষ্টা করা ৩০৬ রোহিঙ্গাকে সমুদ্র থেকে উদ্ধার করে সেখানে নিয়ে রাখা হয়।

এছাড়া এরও আগে অবৈধভাবে সাগরপথে মালয়েশিয়া যেতে ব্যর্থ হয়ে ফিরে আসা ৩০৬ জন রোহিঙ্গাকে গত বছরের মে মাসে ভাসানচর নেয়া হয়।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মিয়ানমার অনুবিভাগের মহাপরিচালক (ডিজি) মোহাম্মাদ দেলোয়ার হোসেন বলেন, ভাসানচরে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের স্থানান্তর ও সেখানে তাদের মানবিক সহায়তা দেয়ার বিষয়টি নিয়ে জাতিসংঘের সঙ্গে আমাদের আলাপ-আলোচনা চলছিল। এরই অংশ হিসেবে বুধবার (১৭ মার্চ) তাদের সেখানে যাওয়ার কথা রয়েছে।

টেকনাফের লেদা ক্যাম্পের নতুন শরণার্থী শিবিরের রোহিঙ্গা নেতা মোস্তফা কামাল জানান, জাতিসংঘের প্রতিনিধি দল ভাসানচরে গেলে সেটি রোহিঙ্গাদের জন্য ভালো খবর। সেখানকার পরিস্থিতি দেখে তারাই রোহিঙ্গাদের ভবিষ্যতের ব্যাপারে সঠিক সিদ্ধান্তটি নিতে পারবে। পাশাপাশি কক্সবাজারের ক্যাম্পগুলোতে এখনো যারা ভাসানচরে যাওয়া না যাওয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছেন, জাতিসংঘের মতামত তাদের দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করবে।

উখিয়ার কুতুপালং ক্যাম্প থেকে ভাসানচরে যাওয়া নুরুল ইসলাম জানান, প্রথমবারের মতো জাতিসংঘের প্রতিনিধি দল আসছে-এমন খবর রোহিঙ্গাদের কাছেও পৌঁছেছে। তাই নানা প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেছে। তাদের কাছে আমরা এখানকার পরিস্থিতি তুলে ধরবো। কারণ তারাই শরণার্থীদের সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা পাওয়ার ভরসাস্থল।

তিনি আরো জানান, প্রতিনিধি দলকে অনুরোধ করবো তারা যেন এখানকার সব কার্যক্রমে যুক্ত থাকে। আমরা ভাসানচরে বড় ধরনের রোগের চিকিৎসাসেবা ছাড়া সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছি। সবরকম স্বাস্থ্যসেবা যেন এখানে পাওয়া যায় সেই দাবি জানাবো।

এ ব্যাপারে নোয়াখালীর ভাসানচর থানার ওসি মো. মাহে আলম জানান, জাতিসংঘের ১৭ জনের একটি প্রতিনিধি দল চট্টগ্রাম থেকে দুপুরে ভাসানচরে পৌঁছানোর কথা রয়েছে। প্রতিনিধি দলটি ভাসানচরে দুইদিন অবস্থান করে সেখানকার পরিবেশ, পরিস্থিতি ঘুরে দেখে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে বৈঠকে কথা রয়েছে।