মো: ছফওয়ানুল করিম, পেকুয়া :

রাতদিন উচ্ছেদ আতংকে ভোগছেন পেকুয়া উপজেলার মগনামা ইউনিয়নের নদীপাড়ের ৩ শতাধিক পরিবার। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করে পুনর্বাসনের দাবিতে মানববন্ধন করেছে এসব পরিবারের কয়েক হাজার সদস্য। আর নদীপাড়ের এ বাসিন্দাদের মানববন্ধনে যোগ দিয়ে তাদের সাথে সংহতি প্রকাশ করেছেন স্থানীয় চেয়ারম্যান শরাফত উল্লাহ চৌধুরী ওয়াশিম।

জানাযায়, নির্মিতব্য উক্ত সড়কের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হল মগনামা ঘাট থেকে বানৌজা শেখ হাসিনা সাব-মেরিন ঘাঁটি পর্যন্ত এক কি:মি বেড়িবাঁধ। এই বাঁধের একপাশে ‘কুতুবদিয়া চ্যানেল’ আর অপর পাশে কয়েকশত পরিবারের বসবাস। সড়ক সম্প্রসারণের নিয়ম অনুযায়ী সড়কের দুইপাশে সম্প্রসারণের কথা থাকলেও এই অংশে এসে একদিকে সম্প্রসারণের উদ্দ্যোগ নেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। তারা জানান, সড়কের একদিকে সম্প্রসারণ করা হলে ওই এলাকায় যুগযুগ ধরে বসতি স্থাপন করে আসা প্রায় ৩ শতাধিক পরিবার উচ্ছেদ হয়ে যাবে। আর তাই তারা সড়কের পশ্চিমাংশে সম্প্রসারণের দাবি জানিয়ে দীর্ঘ মানববন্ধন করেন।

মানববন্ধনে যোগ দিয়ে স্থানীয় চেয়ারম্যান শরাফত উল্লাহ ওয়াসিম বলেন, “মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উন্নয়নের স্বার্থে আমরা সবাই ঘর ছাড়তেও রাজী আছি কিন্তু নদীর সাথে প্রতিনিয়ত সংগ্রাম করে আসা লোকগুলোর মাথা গুজার ঠাঁই করে দেয়ার দাবি আমরা জানাতেই পারি। কেননা প্রধানমন্ত্রী কখনো চাননা অসহায় লোকজন উচ্ছেদ হউক। যার কারণে লক্ষ লক্ষ অসহায় পরিবারকে নিজ খরচে ইতোমধ্যে ঘর তৈরি করে দিয়েছেন তিনি। ‘কোন মানুষ ঘরবাড়ী ছাড়া থাকবে না’ প্রধানমন্ত্রীর এ ঘোষণা থাকলেও কিছু সুবিধাবাদী লোক নিজস্ব স্বার্থের জন্য অসহায় মগনামার ৩শত পরিবারকে উচ্ছেদের পাঁয়তারা চালাচ্ছে। আমরা এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী হস্তক্ষেপ কামনা করছি।”

এদিকে এ বিষয়ে সড়ক বিভাগের কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা বলছেন, সড়কের পশ্চিমপার্শে¦ ইতিমধ্যে পানি উন্নয়ন বোর্ড়ইতিমধ্যে কোটি কোটি সরকারি টাকা খরচ করে ব্লক বসিয়ে বেড়িবাঁধের নিরাপত্তা বেষ্টনি তৈরী করেছে। সড়কের পশ্চিমপার্শ্বে সম্প্রসারণ করা হলে সরকারের কোটি কোটি টাকার উন্নয়ন নষ্ট হয়ে যাবে।

জানাযায়, সড়ক ও জনপদ বিভাগের অধীনে প্রায় ৩৬১ কোটি টাকা ব্যায়ে বরইতলী (নতুন রাস্তার মাথা) হতে মগনামায় নির্মিতব্য বানৌজা শেখ হাসিনা সাব-মেরিন নৌঘাঁটি পর্যন্ত দীর্ঘ ২৩ কি:মি: সড়ক সম্প্রসারণের কাজ শুরু হয় কয়েকমাস আগেই। গত বছরের ২২ নভেম্বর ভিড়িও কনফারেন্সের মাধ্যমে এ কাজের উদ্বোধন করেন সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, ইতিপূর্বে সাবমেরিন ঘাঁটি থেকে মগনামা লঞ্চঘাট হয়ে একতাবাজার পর্যন্ত সওজের মালিকানাধীন সড়টিতে বেশ কয়েকবার সমীক্ষা চালিয়ে ২য় শ্রেণীর এ সড়কটিকে মহাসড়কে রূপান্তরিত করার কাজ শেষ করা হয়। সর্বশেষ গত বছরের ৫ নভেম্বর একনেকের ১৯ তম সভায় তা চুড়ান্ত অনুমোদন দিয়ে প্রায় ২৭৪ কোটি টাকা বরাদ্ধ দেয়া হয়। পর্যায়ক্রমে ৩৬১ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হবে বলে নিশ্চিত করেছেন সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো। সড়ক বিভাগ সূত্র জানায়, বর্তমানের সড়কটির প্রস্থ রয়েছে ২৪ ফিট। আর তা সম্প্রসারণ করে করা হবে ৩৪ ফিট। এর বাইরে স্টেশন, বাজার ও বিশেষ বিশেষ স্থানে নালা স্থাপন সহ বিভিন্ন প্রয়োজনে সড়কের দুপাশে প্রায় ৪০ ফিট পর্যন্ত নেয়া হতে পারে। তবে অধিগ্রহণ করা এসব জায়গার মধ্যে যাদের নিজস্ব মালিকনাধীন জমি পড়েছে তাদের জমি অধিগ্রহণ বা ক্ষতিপূরণের বিষয়ে স্পষ্ট করে কেউ কিছু বলতে পারছেননা। এদিকে জমির মালিকদের অভিযোগ এ পর্যন্ত কেউ কোন প্রকার ক্ষতিপূরণ পাননি।