এম.এ আজিজ রাসেল :
রক্তাক্ত হয়েছে কক্সবাজার কলাতলী ডলফিন চত্বর। সিমেন্ট বোঝাই একটি ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফুটপাতে তুলে দেয়। ট্রাক চাপায় সড়কের পার্শে পার্কিংয়ে থাকা ধুমড়ে মুচড়ে যায় ২টি ভাসমান দোকান, ২টি সিএনজি ও ১টি টমটম। এ ঘটনায় ২ জন নিহত ও ৮ জন আহত হয়েছে বলে জানা গেছে। নিহত ২ জনের মধ্যে একজন কলাতলীর দক্ষিণ আদর্শ গ্রামের মোহনা বেগম (৭০) ও অপরজন ঢাকা উত্তরার শাহাদাত হোসেন। শনিবার (০৬) মার্চ রাত সাড়ে ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনাস্থলে গিয়ে জানা যায়, চট্টগ্রাম—কক্সবাজারমূখী একটি ট্রাক কলাতলী ডলফিন চত্বরে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের পাশে তুলে দেয়। ট্রাক চাপায় ধুমড়ে মুচড়ে যায় ২টি ভাসমান দোকান, ২টি সিএনজি ও ১টি টমটম। এসময় তাৎক্ষণিক মূমুর্ষু অবস্থায় নারীসহ ২জন কে উদ্ধার করে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতালে তাদের মৃত্যু হয়। পরে ট্রাকের নিচ থেকে আরও ৩ জনকে উদ্ধার করে হাসতাপালে নিয়ে যাওয়া হয়। এছাড়া হাসপাতালে আরও ৫ জন গুরুতর আহত অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছে।
এদিকে খবর পেয়ে দুর্ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়ে উদ্ধার তৎপরতা চালায় পুলিশ ও দমকল বাহিনী। উদ্ধার তৎপরতা কাজে সহায়তা করেন মেয়র মুজিবুর রহমান, সাংসদ আশেক উল্লাহ রফিক ঝিলংজা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান টিপু সুলতান, জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মারুফ আদনানের নেতৃত্বে নেতাকর্মীসহ স্থানীয়রা।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী মোহাম্মদ সোহেল ও নুরুল ইসলাম নামের দুই ব্যক্তি জানান, হঠাৎ করে ট্রাকটি তাদের পাশ ঘেষে ফুটপাতে তুলে দেয়। কোন কিছু বুঝে উঠার আগেই মুহুর্তের মধ্যে ভেঙে তচনচ হয়ে যায় ২টি সিএনজি, ২টি ভাসমান দোকান ও ১টি টমটম। এসময় ট্রাকের নিচ থেকে নারী—শিশুসহ ৫ জনকে উদ্ধার করা হয়। তারমধ্যে দুইজনের মৃত্যু হয়। নিহতরা হলেন কলাতলীর দক্ষিণ আদর্শ গ্রামের মোহনা বেগম (৭০) ও ঢাকা উত্তরার শাহাদাত হোসেন। এছাড়া বাকী আরো ৮ জনকে মূমূর্ষ অবস্থায় কক্সবাজার সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মারুফ আদনান বলেন, এখানে যত্রতত্র গড়ে উঠেছে অবৈধ স্টেশন ও দোকান। যার কারণে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা বেড়েই চলেছে। রিপোর্টার্স ইউনিটি কক্সবাজার‘র সভাপতি এইচ,এম নজরুল ইসলাম বলেন, সড়কে নানা অনিয়মে চলছে যানবাহন। আইন করেও নিশ্চিত করা যাচ্ছে না শৃঙ্খলা। অবৈধ যানবাহন চলছেই। ঝুঁকি নিয়ে মানুষের রাস্তা পারাপার থামছে না। যানবাহনও চলছে বেপরোয়াভাবে। সড়কে অবৈধ দোকান, ভটভটি, নছিমন, অটোরিকশা চলছে আগের মতোই। যার কারণে দুর্ঘটনায় মানুষের প্রাণহানি আবারও বাড়ছে।
ঝিলংজা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান টিপু সুলতান বলেন, দিনে—রাতে শহরে ট্রাকসহ বড় গাড়িগুলো অনায়সে ঢুকছে। যার কারণে দুর্ঘটনা বাড়ছে। এ নিয়ে সংশ্লিষ্ঠ মহলের পদক্ষেপ জরুরী হয়ে পড়েছে। সাংসদ আশেক উল্লাহ রফিক বলেন, মর্মান্তিক দুর্ঘটনার খবর পেয়ে আমরা ছুটে আসি। কলাতলী পর্যটন এলাকা। এখানে প্রচুর পর্যটক আসছে। এই ব্যস্ততম সড়কে বেপরোয়াভাবে যান চলাচল করে। সড়ক আইন থাকলেও অনেকেই মানছেন না। তাই সম্মিলিতভাবে সড়ক আইন বাস্তবায়ন করতে হবে। এ জন্য প্রয়োজন ব্যাপক জনসচেতনতা। কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পৌর মেয়র মুজিবুর রহমান বলেন, দুর্ঘটনার কারণ খতিয়ে দেখা হবে। যারা এর জন্য দায়ী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এই রিপোর্ট লিখাকালে দমকল বাহিনী উদ্ধার তৎপরতা চালাচ্ছে।