বিডিনিউজ: রাস্তায় অসুস্থ স্বজনহীন মানুষদের সেবায় নিয়োজিত থাকা চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের কনস্টেবল শওকত হোসেনকে ‘মানবিক পুলিশ ইউনিট’ থেকে বদলি করা হয়েছে।

একটি ওয়াজ মাহফিলে দেওয়া বক্তব্যের জেরে তাকে বদলি করা হয়েছে বলে গুঞ্জন উঠলেও নগর পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন ‘নিয়মিত বদলির’ অংশ হিসেবে তাকে অন্য দায়িত্বে পাঠানো হয়েছে।

নগর পুলিশের উপ-কমিশনার (সদর) আমির জাফর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “শওকত দীর্ঘদিন এক জায়গায় ছিলেন। তাই নিয়মিত বদলির’ অংশ হিসেবে তাকে এ ইউনিট থেকে বন্দর জোনে বদলি করা হয়েছে।”

ওয়াজ মাহফিলে গিয়ে বক্তব্য দেওয়ার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, “ইউনিফর্ম সার্ভিসের লোক হয়ে এ ধরনের বক্তব্য দেওয়া তার ঠিক হয়নি।”

রাস্তায় স্বজনহীন অসহায় কিংবা মানসিক রোগী যাদের স্থান হয় না হাসপাতালে সে ধরনের রোগীদের নিজেদের টাকায় সেবা দিয়ে আসছিলেন চট্টগ্রাম নগর পুলিশের কিছু সদস্য। আর তাদের নেতৃত্বে ছিলেন কনস্টেবল শওকত।

দীর্ঘদিন নীরবে কাজ করার পর ২০১৯ সালে ২৯ নভেম্বর নগর পুলিশের মাসিক কল্যাণ সভায় কনস্টেবল শওকত সেবার বিষয়টি প্রকাশ্যে আনেন। তার বক্তব্য শুনে তখনকার সিএমপি কমিশনার মাহবুবর রহমান ‘মানবিক পুলিশ ইউনিট’ চালু করেন।

রাস্তাঘাটে স্বজনহীন কোনো রোগী পড়ে থাকার খবর পেলেই ছুটে যেতেন এই ইউনিটের সদস্যরা। তাদের খাওয়া দাওয়াসহ চিকিৎসার ব্যবস্থা করতেন।

মানবিক পুলিশ ইউনিটের এ কাজগুলো সামজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়লে কনস্টেবল শওকতও আলোচনায় আসেন। বিভিন্ন রেডিও, টেলিভিশনে বিভিন্ন ধরনের আলোচনা সভায় তার ডাক আসতে থাকে।

গত ১৯ ফেব্রুয়ারি নগরীর দেওয়ান হাট এলাকায় একটি ওয়াজ মাহফিলে অতিথি করা হয় শওকতকে। সেখানে গিয়ে শওকত অসহায় মানুষদের সহায়তা করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, সারাদিন ওয়াজ শুনেও কোনো লাভ নেই, সবাইকে মানবিক হতে হবে। সেখানে আরও কিছু বক্তব্য তিনি দেন, যা নিয়ে চট্টগ্রামে বিতর্ক শুরু হয়।

কনস্টেবল শওকতের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ ব্যাপারে কথা বলতে অস্বীকৃতি জানিয়ে বলেন, “গত মঙ্গলবার আমার বদলির আদেশ হয়েছে। গতকাল সেটি কার্যকর হয়েছে। আমি মানবিক ইউনিটের সবকিছু জমা দিয়ে নতুন স্থানে যোগ দিয়েছি।”