সিবিএন ডেস্ক:

গরু নিয়ে ভারতের নানা আলোচনা আছে। এরই মধ্যে দেশটিতে ‘গো-বিজ্ঞান’ বিষয়ে একটি বিশেষ পরীক্ষার আয়োজন করা হচ্ছে। এই পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার জন্য ৫ লাখ ২০ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী নিবন্ধন করেছেন। তাঁরা সবাই স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। ইংরেজিসহ ১২টি ভাষায় ‘গো-বিজ্ঞান’ বিষয়ে এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এই পরীক্ষায় অংশ নেওয়া প্রার্থীরা বিশেষ সনদপত্র পাবেন। আর এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে ২৫ ফেব্রুয়ারি।

গরুর সব অঙ্গ মূল্যবান। গরুর চামড়া, দুধ, মূত্রের নানাবিধ ব্যবহারের পদ্ধতি কীভাবে আরও জনপ্রিয় ও কার্যকর করা যায়, সে জনই এ পরীক্ষার আয়োজন।

ভারতের গণমাধ্যম এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে, ভারতের বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) পক্ষ থেকে দেশটির ৯০০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের চিঠি পাঠিয়ে জানানো হয়েছে, তাঁরা যেন দেশীয় গরুর প্রতিটি অংশ কতটা উপকারী ও বিজ্ঞানসম্মত, তা নিয়ে চর্চা করেন এবং এই পরীক্ষায় বসতে শিক্ষার্থীদের উৎসাহিত করেন।

বিজ্ঞাপন

বাংলাদেশ-পাকিস্তানসহ বিশ্বের ৫২টি দেশ থেকে অনলাইনে এ পরীক্ষায় অংশ নিতে রেজিস্ট্রেশন করা হয়েছে
বাংলাদেশ-পাকিস্তানসহ বিশ্বের ৫২টি দেশ থেকে অনলাইনে এ পরীক্ষায় অংশ নিতে রেজিস্ট্রেশন করা হয়েছেফাইল ছবি
এদিকে টাইমস অব ইন্ডিয়ার খবরে বলা হয়েছে, এমিসিকিউ ধরনের এ পরীক্ষা হবে এক ঘণ্টায়। এ পরীক্ষার আয়োজক দেশটির রাষ্ট্রীয় কামধেনু আয়োগ নামের সংস্থাটি জানিয়েছে, বাংলাদেশ-পাকিস্তানসহ বিশ্বের ৫২টি দেশ থেকে অনলাইনে এ পরীক্ষায় অংশ নিতে রেজিস্ট্রেশন করা হয়েছে। নেপাল, ভুটান, শ্রীলঙ্কা, মালয়েশিয়া, আফগানিস্তান, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র থেকে পরীক্ষায় অংশ নিতে আবেদন করা হয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মধ্য জো বাইডেনের দেশ থেকেই আবেদন হয়েছে বেশি।

এর আগে ২০১৯ সালে ভারতের কেন্দ্রীয় পশু মন্ত্রণালয় রাষ্ট্রীয় কামধেনু আয়োগ চালু করে। তাদেরই তত্ত্বাবধানে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে এই পরীক্ষা। কামধেনু আয়োগের ওয়েবসাইটে পরীক্ষার সিলেবাসও ইতিমধ্যে প্রকাশ করা হয়েছে। সিলেবাসে পারমাণবিক তেজস্ক্রিয়তা কমাতে গোবর সাহায্য করে—এমনটা উল্লেখ রয়েছে। এ নিয়ে ভারতের পাশাপাশি রাশিয়াতেও গবেষণা হচ্ছে। গত ১৫ জানুয়ারি থেকে গো-বিজ্ঞান পরীক্ষার নিবন্ধন শুরু হয়েছে।

রাষ্ট্রীয় কামধেনু আয়োগের চেয়ারম্যান বল্লভাই কাঠিরিয়া বলেন, ‘গরুতে কোনো অবৈজ্ঞানিক ব্যাপার নেই। আমরা ভারতীয় গরুর মাহাত্ম্য প্রচার এই পরীক্ষা নিচ্ছি।’

বিরোধিতাও চলছে
এ পরীক্ষার আয়োজন নিয়ে নানা সমালোচনাও হচ্ছে দেশটিতে। কেরালা-কলকাতার কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় এমন আয়োজনের বিরোধিতাও করেছে। গরুর কোনো কিছুই অবৈজ্ঞানিক নয়—এ ধারণার ওপর ভিত্তি করেই এ পরীক্ষার জন্য আয়োজিত প্রস্তুতিমূলক পরীক্ষা বিরোধিতার জন্য বাতিল করা হয়েছে।

ভারতের যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা এ পরীক্ষা নেওয়ার উদ্যোগে বিস্মিত। ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থের অধ্যাপক পার্থ রায় বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার গবেষণার জন্য প্রাপ্য ৬০ কোটি রুপি দেয় না। আর এমন উদ্যোগ শিক্ষার্থীদের জন্য নতুন কিছু বয়ে আনবে কি?

ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজির অধ্যাপক সমান্তক দাশ বলেন, ‘আমি এ উদ্যোগের পেছনের কাহিনির জন্য চিন্তিত। একটি অসত্যকে বৈধ করার চেষ্টা করা হচ্ছে।’