বিদেশ ডেস্ক:

জাতিসংঘের মিয়ানমারবিষয়ক বিশেষ দূত দেশটির সামরিক সরকারের উপ-প্রধানকে সতর্ক করে বলেছেন, কঠোর হাতে বিক্ষোভ দমনের পরিণতি ভয়াবহ হতে পারে। সোমবার জাতিসংঘের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, মিয়ানমার সেনাবাহিনী দাবি করেছে রাজপথে সেনাদের টহলকে স্বাগত জানাচ্ছে দেশটির নাগরিকেরা। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এখবর জানিয়েছে।

জাতিসংঘ দূত ক্রিস্টিন স্ক্র্যানার বার্গেনার সোমবার মিয়ানমারের সামরিক সরকারের উপ-প্রধানের সঙ্গে কথা বলেন। অভ্যুত্থানের পর বহির্বিশ্বের সঙ্গে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর এটি ছিল বিরল যোগাযোগ।

জাতিসংঘের মুখপাত্র ফারহান হক বলেন, বার্গেনার শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ ও বিক্ষোভের অধিকারের গুরুত্বারোপ করেছেন। বলেছেন, বিক্ষোভকারীরা দমন-পীড়নের লক্ষ্যবস্তু হতে পারে না।

মুখপাত্র আরও বলেন, তিনি আরও বলেছেন যে, বিশ্ব নিবিড়ভাবে পরিস্থিতিতে নজর রাখছে। যে কোনও ধরনের কঠোর দমন-পীড়নের পরিণতি ভয়াবহ বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে।

সামরিক সরকারের উপ-প্রধান সোয়ে উইন জাতিসংঘ দূতকে প্রশাসনিক পরিকল্পনা ও দেশটির প্রকৃত অবস্থা সম্পর্কে অবহিত করেছেন।

১ ফেব্রুয়ারির সেনা অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে মিয়ানমারে প্রতিদিনই জোরালো হচ্ছে বিক্ষোভ। অং সান সু চিসহ নির্বাচিত নেতাদের মুক্তি দেওয়ার পাশাপাশি গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার দাবি তুলেছেন তারা। বিক্ষোভের বাইরে জান্তা সরকারের বিষফোঁড়ার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে অভ্যুত্থানকারীদের প্রতি জনগণের প্রকাশ্য অবাধ্যতা। সামরিক শাসনের অবসান এবং বেসামরিক রাজনীতিকদের মুক্তির দাবিতে কর্মবিরতি পালন করছে হাজার হাজার সরকারি চাকরিজীবি।

সামরিক শাসক দ্বিতীয় রাতের মতো দেশটিতে ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ করে রেখেছে। যুক্তরাজ্যভিত্তিক পর্যবেক্ষক নেটব্লক জানিয়েছে মঙ্গলবার স্থানীয় সময় একটা থেকে দেশটিতে ইন্টারনেট সংযোগ প্রায় পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে। সেনা শাসকেরা ক্ষমতা দখলের পর এনিয়ে চতুর্থবারের মতো বন্ধ রাখা হলো ইন্টারনেট। অনলাইনে ভিন্নমত দমনের চেষ্টা হিসেবে এই পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। ইন্টারনেট বন্ধ ছাড়াও অভ্যুত্থানের নেতাদের বিরোধিতা বন্ধে বেশ কিছু আইনি সংস্কার করা হয়েছে।

মানবাধিকার সংস্থা অ্যাসিস্ট্যান্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনার্স জানিয়েছে, মিয়ানমারে এখন পর্যন্ত ৪২৪ জনকে গ্রেফতার করেছে সামরিক সরকার।

এর আগে অভ্যুত্থান বিরোধী বিক্ষোভকারীদের সতর্ক করে দিয়েছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। সশস্ত্র বাহিনীর কাজে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করা হলে ২০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড দেওয়া হতে পারে বলে জানিয়েছে সেনাবাহিনী। এছাড়া অভ্যুত্থানের নেতাদের বিরুদ্ধে ঘৃণা এবং বিরুদ্ধাচরণ ছড়ানো হলে দীর্ঘ মেয়াদী কারাদণ্ড ও জরিমানার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। রাস্তায় সেনা টহল বাড়ানোর পাশাপাশি মিয়ানমারে এসব কঠোর আইন চালু করা হয়েছে।