সোয়েব সাঈদ, রামু :
রামুর রশিদনগরে ছাত্রলীগ-স্বেচ্ছাসেবকলীগের ৩ নেতাকে কুপিয়ে জখম করার ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত চেয়ারম্যান শাহ আলম সহ ৬ জনকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত। শাহ আলম ছাড়া আটক অপর আসামীরা হলেন-লাল মিয়ার ছেলে ফয়সাল, মৃত কালু মিয়ার ছেলে রমজান আলী, আবু শামা প্রকাশ তোফাইল আহমদের ছেলে আবুল কাশেম, মৃত ছালেহ আহমদের ছেলে জাফর আলম এবং মোজাফ্ফর আহমদের ছেলে মোঃ শাহজাহান।
রবিবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে কক্সবাজার চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আত্মসমর্পণ করলে বিজ্ঞ বিচারিক হাকিম রাজিব কুমার বিশ্বাস তাদের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন।
উল্লেখ্য গত ২৩ জানুয়ারি রামুর রশিদনগর ইউনিয়নের পানিরছড়া মামুন মিয়ার বাজারে সন্ত্রাসী হামলায় গুরতর আহত হন রশিদনগর ইউনিয়ন ছাত্রলীগ সভাপতি নজিবুল আলম, সহ সভাপতি সাইফুল ইসলাম এবং ইউনিয়ন সেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি মিজানুল করিম। এ ঘটনায় আহত নজিবুল আলমের ভাই শাহ আলম বাদি হয়ে ২৪ জানুয়ারি রামু থানায় মামলা (নং ২৭) দায়ের করেন। মামলায় রশিদনগর ইউপি চেয়ারম্যান শাহ আলম সহ ১৮ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
বাদীপক্ষের আইনজীবী এডভোকেট মো. সাজ্জাদুল করিম জানিয়েছেন- চেয়ারম্যান শাহ আলম সহ ১১ জন ঘটনার পর উচ্চ আদালতে জামিন আবেদন করলে বিজ্ঞ আদালত তাদের জামিন না দিয়ে ১৪ ফেব্রুয়ারির মধ্যে চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন। এরই প্রেক্ষিতে ওই ১১জন রবিবার চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন জানান। এসময় চেয়ারম্যান শাহ আলম সহ ৬ জনের জামিন আবেদন নামঞ্জুর এবং অপর ৫ জনের জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন বিজ্ঞ বিচারিক হাকিম।
চেয়ারম্যান শাহ আলমের নেতৃত্বে সংগঠিত হামলায় আহতদের স্বজনরা বিজ্ঞ আদালতের এ সিদ্ধান্তে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তারা জানিয়েছেন- রশিদনগরবাসী এখন সন্ত্রাসী শাহ আলম বাহিনীর কাছে জিম্মি। বিগত ৫ বছর ধরে শাহ আলম ক্ষমতাকে পূঁজি করে জমি দখল, পাহাড় নিধন, ত্রাণ চুরি, নিরীহ লোকজনকে মামলায় জড়িয়ে হয়রানি সহ নানা অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে। সরকারি দলের নেতাকর্মীদের উপর হামলা এবং মামলায় জড়িয়ে হয়রানি চেয়ারম্যান শাহ আলমের নেশায় পরিনত হয়েছে। যার ধারাবাহিকতায় রশিদনগর ছাত্রলীগ সভাপতি নজিবুল আলম, সহ সভাপতি সাইফুল ইসলাম এবং স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা মিজানুল করিমকে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা চালানো হয়েছে। রশিদনগরের ইতিহাসে এমন বর্বরোচিত সন্ত্রাসী হামলা অতীতে কখনো ঘটেনি। অতীতেও চেয়ারম্যান শাহ আলম ও তার লালিত বাহিনীর অপকর্মের প্রতিবাদ করতে গিয়ে আওয়ামীলীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী সহ অসংখ্য মানুষ মিথ্যা মামলা এবং হামলার শিকার হয়েছে। এ হামলায় নেতৃত্বদানকারী চেয়ারম্যান শাহ আলম সহ জড়িতদের রশিদনগরের মানুষ কখনো ছাড় দেবে না। তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হওয়া পর্যন্ত রশিদনগরবাসীর আন্দোলন-সংগ্রাম অব্যাহত থাকবে।
রক্তাক্ত এ হামলার পর থেকে এলাকায় আওয়ামীলীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ অন্যান্য অঙ্গ সংগঠনের উদ্যোগে হামলাকারি চেয়ারম্যান শাহ আলম ও তার সহযোগিদের গ্রেফতারের দাবিতে কয়েক দফা বিক্ষোভ সমাবেশ ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত রয়েছে।